সহিংসতা এড়াতে সকাল থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়নের কথা জানান বাগাতিপাড়া থানার ওসি।
Published : 01 Apr 2024, 05:59 PM
যেকোনো মূল্যে ভোটের খরচ তোলা নিয়ে নাটোর-১ আসনের সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের বক্তব্যের প্রতিবাদ ও পাল্টা কর্মসূচি নিয়ে বাগাতিপাড়ায় উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
সহিংসতা এড়াতে সকাল থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়নের কথা বলেছেন বাগাতিপাড়া থানার ওসি মো. নান্নু খান।
সোমবার বাগাতিপাড়ার মালঞ্চি স্টেশন এলাকায় সকাল ১০টা থেকে পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী কর্মসূচি পালনে বর্তমান এবং সাবেক সংসদ সদস্য সমর্থকদের অবস্থান নিতে দেখা যায়।
গত মঙ্গলবার লালপুর উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য আবুল কালাম বলেন, সংসদ নির্বাচনে জয়লাভ করতে তার এক কোটি ২৬ লাখ টাকা খরচ করতে হয়েছে। এই টাকা তিনি অন্যায় করে হলেও তুলবেন। তার এমন বক্তব্যের একটি ভিডিও দেশজুড়ে ভাইরাল হলে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
আবুল কালাম আজাদ নাটোর-১ আসন থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঈগল প্রতীক নিয়ে নৌকার প্রার্থী শহিদুল ইসলাম বকুলকে হারিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এ ছাড়া তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতিও।
প্রকাশ্যে আবুল কালাম আজাদের এমন বক্তব্যের প্রতিবাদ এবং তার সংসদ সদস্য ও দলীয় পদ বাতিলের দাবিতে উপজেলা আওয়ামী লীগের ব্যানারে মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়।
বাগাতিপাড়া মালঞ্চি রেল গেইটের পূর্বপাশে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তারা সংসদ সদস্য আবুল কালামকে দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যা দেন। দুর্নীতি করে নির্বাচনি ব্যয়ের ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা তোলার যে বক্তব্য তিনি মহান স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে দিয়েছেন সে বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান।
এসময় আবুল কালাম আজাদের সংসদ সদস্যপদ বাতিলসহ দলীয় পদ বাতিলের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগানে মিছিল করা হয়।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন- উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম ঠাণ্ডু, দুই সহ সভাপতি শরিফুল ইসলাম শরিফ ও দীপক কুমার কুন্ডু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রকিবুল ইসলাম রকিব।
অন্যদিকে, একই সময়ে রেল গেইটের পশ্চিম পাশে বর্তমান সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের সমর্থক ও অনুসারীরা কর্মী সভায় অবস্থান নেন।
কর্মীসভার ব্যানারে মিছিলে দফায় দফায় সাবেক সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুল বিরোধী স্লোগান শোনা যায়।
একই সময়ে প্রায় কাছাকাছি স্থানে আওয়ামী লীগের দুপক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে মালঞ্চি স্টেশন এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
এ ব্যাপারে ওসি নান্নু খান বলেন, পুলিশের কঠোর অবস্থান ছিল। অতিরিক্ত পুলিশও মোতায়েন ছিল। পুলিশের সক্রিয়তায় কোনো সংঘাত, সহিংসতা বা অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই শান্তিপূর্ণভাবে দুপক্ষের কর্মসূচি শেষ হয়েছে।
মানববন্ধনে বক্তাদের সংসদ সদস্যবিরোধী বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের পরাজিত প্রার্থী শহিদুল ইসলাম বকুল বলেন, “যিনি মহান স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে প্রকাশ্যে দুর্নীতি করে নির্বাচনের ব্যয়ের টাকা তোলার কথা বলতে পারেন তাকে দুর্নীতিবাজ ও সন্ত্রাসী বলা খারাপ কিছু না।”
তার দাবি, “আবুল কালাম আজাদ কারচুপি করে নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই শত শত ঘরবাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে; মারপিট করা হচ্ছে, নির্যাতন চালানো হচ্ছে। সাধারণ মানুষ এসব কতদিন সহ্য করবে? এমন নেতার সংসদ সদস্য পদ বাতিলসহ দলীয় পদ বাতিলের দাবি জনগণের অধিকার।”
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের মোবাইল নম্বরে ফোন করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
তবে সংসদ সদস্য মো. আবুল কালাম আজাদের সমর্থক হিসেবে পরিচিত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মজিবর রহমান বলেন, সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। এসব অপ্রচারের বিরুদ্ধে কর্মীসভা থেকে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে।
আরও পড়ুন
অন্যায় করে হলেও ভোটের খরচ তুলতে চান নাটোরের এমপি, ভিডিও ভাইরাল