তাদের মারধর ও আপত্তিকর ভিডিও মোবাইল ফোনে ধারণ করে রাখা হয় বলেও অভিযোগ করেন দুই নারী।
Published : 14 Jan 2025, 01:37 PM
কুমিল্লার নাঙ্গলকোটের একটি স’মিলে দুই নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নের নূরপুর এলাকায় বৃহস্পতিবার দুপুরের এ ঘটনায় সোমবার মধ্যরাতে সাত জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নাঙ্গলকোট থানার ওসি এ.কে ফজলুল হক।
ভুক্তভোগী দুই নারীর মধ্যে একজনের বয়স ২০ বছর এবং আরেকজনের বয়স ৩৫ বছর। তাদের একজনের বাড়ি চাঁদপুর এবং অপরজনের বাড়ি লক্ষ্মীপুরে। তবে কাজের সূত্রে তারা দু’জন কুমিল্লা শহরের টমসনব্রিজ এলাকায় একসাথে থাকেন।
ভুক্তভোগীদের বরাত দিয়ে ওসি বলেন, ২০ বছর বয়সী ওই তরুণীর সঙ্গে নাঙ্গলকোটের শহীদ নামের এক যুবকের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বৃহস্পতিবার শহীদের সঙ্গে দেখা করতে নাঙ্গলকোট আসেন দুই নারী।
এরপর সেখান থেকে তাদেরকে বাঙ্গড্ডা ইউনিয়নের নূরপুর এলাকার খোকন স’মিলের একটি কক্ষে নিয়ে দুপুর ১২টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত আটকে রেখে ধর্ষণ করা হয় বলে তারা অভিযোগ করছেন।
ভুক্তভোগী দুই নারী সাংবাদিকদের জানান, বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে ১১টার দিকে নাঙ্গলকোট যাওয়ার পর শহীদ তাদের নিয়ে একটি অটোরিকশায় করে বিভিন্ন রাস্তায় ঘোরাঘুরি করে। এসময় শহীদের কয়েকজন সহযোগীও তাদের সঙ্গে ছিল।
একপর্যায়ে তাদের উদ্দেশ্য ভালো না বুঝতে পারলে ধস্তাধস্তি হয়। পরে ১২টার দিকে জোরপূর্বক দুই নারীকে সমিলটিতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে একটি কক্ষে দুই নারীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করে ১০-১২ জন। নারীরা চিৎকার-চেঁচামেচি করলে তাদের মেরে ফেলার হুমকি দেওয়া হয়।
সে সময় তাদের মারধর ও আপত্তিকর ভিডিও মোবাইল ফোনে ধারণ করে রাখা হয় বলেও অভিযোগ করেন দুই নারী।
পরে স’মিলের মালিকের সহযোগিতায় তাদেরকে একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় তুলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।
ওই দুই নারী আরও জানান, বিষয়টি নিয়ে লোকলজ্জা ও পরিবার জেনে যাওয়ার ভয়ে প্রথমে পুলিশের কাছে যাননি তারা। তবে দুর্র্বত্তদের মোবাইলে তাদের আপত্তিকর ভিডিও থাকায় তারা শনিবার নূরপুর এলাকায় গিয়ে স্থানীয়দের কাছে সহযোগিতা ও বিচার চাওয়ার চেষ্টা করেন।
কিন্তু ভিডিও উদ্ধারে তারা ব্যর্থ হন। পরে সোমবার তারা থানায় আসেন।
এছাড়া শনিবার যখন তারা যখন সেখানে যান, তখনও ঘটনায় জড়িত ছয়জনকে দেখতে পেয়েছেন। এ ঘটনায় মিল মালিকও জড়িত আছে বলে বলে অভিযোগ করেন দুই নারী।
সোমবার রাতে এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নিশাত তাবাস্সুম বলেন, “দুই নারী আমাদের কাছে অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে- বৃহস্পতিবার দুপুরের ঘটনায় তারা সোমবার থানায় আসলেন, তাই সব কিছু অনুসন্ধান করেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ওসি এ.কে ফজলুল হক বলেন, সোমবার দুপুরে দুই নারী থানায় এসে সাত জনের নাম উল্লেখ করে মৌখিক অভিযোগ করেন। পরে প্রাথমিকভাবে তথ্য সংগ্রহ করে রাতে এক নারী বাদী হয়ে মামলা করেন।
তাদেরকে আপাতত নাঙ্গলকোট থানায় পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে। তাদেরকে মেডিকেল টেস্টের জন্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হবে।
ওসি আরও বলেন, “আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখছি। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালাচ্ছি।”