ফেইসবুকে প্রেম, পাবনায় এসে ঘর বাঁধলেন আমেরিকান তরুণী

আমেরিকান তরুণীকে দেখতে বাড়িতে ভিড় করছে এলাকাবাসী।

পাবনার ঈশ্বরদী পৌর এলাকার পিয়ারখালী মহল্লার আসাদুজ্জামান রিজু ও তার স্ত্রী আমেরিকান নাগরিক ডেভিডসন।

ফেইসবুকে পরিচয়ের থেকে প্রেম, তারপর ঘর বাঁধার স্বপ্ন। তবে বাধা ছিল অনেক। দুই দেশ, ভিন্ন সংস্কৃতি। শেষ পর্যন্ত বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়ে সংসার শুরু করেছেন তারা।

এই দম্পতি হলেন পাবনার ঈশ্বরদী পৌর এলাকার পিয়ারখালী মহল্লার আসাদুজ্জামান রিজু (২৭) ও আমেরিকার হারলি এবেগেল আইরিন ডেভিডসন (২০)।

রিজু কম্পিউটার মেরামত ও ফ্রিল্যান্সিং কাজ করেন। ডেভিডসন আমেরিকার কেন্টাকি প্রদেশের জর্জটাউন শহরের বাসিন্দা।

সম্প্রতি ঢাকায় আসেন ডেভিডসন। বিমানবন্দরে তাকে স্বাগত জানান রিজুর পরিবারের সদস্যরা। পরে রিজুর বাড়িতে মুসলিম রীতি মেনে বিয়ে হয় তাদের।

রিজুর বাড়িতে গিয়ে কথা হয় তার সঙ্গে। ডেভিডসনের সঙ্গে পরিচয় কী ভাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “২০২২ সালে ফেইসবুকের মাধ্যমে ডেভিডসনের সঙ্গে পরিচয়। তখনো জানতাম না তার বাড়ি কোথায়? প্রায় বছর খানেক ধরে পরিচয়, পরে বন্ধুত্ব।

“তারপর ধীরে ধীরে ভালো লাগা থেকে প্রেম। পরিবারের সঙ্গে বিয়ের বিষয়ে আলোচনা করা হলে তারা সম্মতি দেয়। কিন্তু বাধা ছিল দূরত্ব। একপর্যায়ে ডেভিডসন বাংলাদেশে আসার সিদ্ধান্ত নেন।”

বিয়ের পর পৌর এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে বসবাস করছেন বলে জানিয়েছেন রিজু। তিনি বলেন, “ভিন্ন পরিবেশে আস্তে আস্তে মানিয়ে নিচ্ছে ডেভিডসন। সে ভালোবেসে বাংলাদেশে এসেছেন। এ জন্য আমি গর্বিত। এ দেশে তার খাবার নিয়ে সমস্যা হচ্ছে। বাংলাও শিখেছে। পরিবারের অন্যদের সঙ্গে কথা বলছে।”

বাংলাদেশে আসার আগে কিছুটা শঙ্কায় ছিলেন ডেভিডসন। তিনি বলেন, “এ দেশ সম্পর্কে অনেকে আমাকে খারাপ ধারণা দিয়েছিল। এখন দেখি সেসব সত্য নয়। এই দেশ ভালো লাগছে। রিজু ও তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে আমি খুবই খুশি।”

বিদেশি হলেও পুত্রবধূকে পেয়ে খুশি রিজুর বাবা আব্দুল লতিফ। তিনি বলেন, “অসংখ্য মানুষ তাদের দেখতে আসছেন। এটা দেখে ভালো লাগছে। ছেলের শ্বশুরবাড়ি দেখার ইচ্ছা হচ্ছে। কিন্তু আদৌ তা সম্ভব হবে কী-না জানি না?”

ঈশ্বরদী পৌরসভার মেয়র ইছাহাক আলী মালিথা বলেন, “ঘটনাটি শোনার সঙ্গে সঙ্গেই ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মনিরুল ইসলাম সাবুকে খোঁজখবর নিতে বলেছি। একইসঙ্গে নিরাপত্তার জন্য থানায় কথা বলি।”

কাউন্সিলর মনিরুল বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের এক মেয়ের সঙ্গে এলাকার ছেলের বিয়ের খবর পেয়ে দেখতে গিয়েছিলাম। তাদের ভালোবাসার গল্প শুনে ভালো লাগল। ওই তরুণীর যেন কোনো সমস্যা না হয়, সে জন্য নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”