Published : 24 Feb 2025, 09:43 PM
বান্দরবানের লামা উপজেলায় ‘সরই ভূমি রক্ষা সংগ্রাম কমিটির’ নেতা রিংরং ম্রোর মুক্তির দাবিতে সমাবেশ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
সোমবার দুপুরে বান্দরবান শহরে প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ম্রো স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএসএ) শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচি পালন করেন।
সমাবেশে সংগঠনের উপজেলা কমিটির সভাপতি মাংয়ং ম্রো বলেন, “পাহাড়ে ম্রো জনগোষ্ঠী সবচেয়ে ভূমি আগ্রাসনের শিকার হয়ে আসছে। এতদিন প্রতিবাদ-প্রতিরোধ না থাকায় ভূমি দখল নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে আলোচনা হয় না। কিন্তু এখন প্রতিবাদ হচ্ছে, আন্দোলন হচ্ছে। সে কারণে আন্দোলনে থাকা কর্মীদের গ্রেপ্তার করে হয়রানি করা হচ্ছে।”
শিক্ষার্থী এডিসন চাকমা বলেন, “পাহাড়ে বছরে পর বছর ভূমি আগ্রাসনের শিকার হচ্ছে পাহাড়িরা। তার মধ্যে ম্রোরা সবচেয়ে ভিকটিম। বিভিন্ন কোম্পানি লিজের নাম করে শত শত একর জমি দখল করে নিয়েছে। কিন্তু এসব খবর সংবাদ মাধ্যমে সেভাবে আসছে না। আর যারা ভূমি রক্ষা আন্দোলন করে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে নানাভাবে হয়রানি করা হয়।”
একই কথা বলেন শিক্ষার্থী উবাসিং মারমা।
সংহতি জানিয়ে সাবেক ছাত্রনেতা জন ত্রিপুরা বলেন, “জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পর আশা করেছিলাম, সারাদেশের মত পাহাড়েও পরিবর্তন আসবে। পাহাড়ে আগের মত হামলা, মামলা ও লুটপাট বন্ধ হবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জনগণের সেবক হবে।
“এরমধ্যে ছয়টা সংস্কার কমিশন করা হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ যে পর্যায়ে যাচ্ছে, মনে হচ্ছে দেশে এখন আরেকটা যুদ্ধ চলছে।”
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ম্রো স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েনের কেন্দ্রীয় সভাপতি তনয়া ম্রো। সমাবেশ শেষে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
এদিকে সোমবার ৪টার দিকে সরই এলাকার লাংকম ম্রোর পাড়ার সামনে রিংরং ম্রোর মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন করেছে লাংকম ম্রো ও জয়চন্দ্র পাড়াবাসী। সেখানে বক্তব্য দেন রিংরং ম্রোর স্ত্রী সংলে ম্রো, ছেলে প্রেংনই ম্রো ও কারবারি (পাড়াপ্রধান) লাংকম ম্রো।
রিংরং ম্রো লামা উপজেলা সরই এলাকার জয়চন্দ্র ত্রিপুরা পাড়ার বাসিন্দা। ২০২২ সাল থেকে সেখানে ৪০০ একর জুমভূমি রক্ষা আন্দোলন করে আসছেন তিনি। সে সময় লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের বিরুদ্ধে ৪০০ একর জুমভূমি নিজেদের ইজারা পাওয়া দাবি করে আগুন দেওয়ার অভিযোগ উঠে। পরে সেখানে আরও কয়েকটি ঘর নির্মাণ করেন ম্রো সম্প্রদায়েরা লোকজন।
এসব ঘটনায় ম্রো ও ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের লোকজনের বিরুদ্ধে মোট ছয়টি মামলা করে লামা রাবার ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কর্তৃপক্ষ। সব মামলাতেই আসামি ছিলেন রিংরং ম্রো। এর মধ্যে একটি মামলায় তিনি খালাস পান। বাকি পাঁচ মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ছিল। শনিবার তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এর পর তাদের ব্যবহার করা একটা ঝিরির পানিতে কীটনাশক ঢেলে দেওয়ার অভিযোগে পাড়াবাসীর মামলা করে লামা রাবার ইন্ড্রাস্ট্রিজ লিমিটেডের বিরুদ্ধেও।
রিংরং ম্রোর ছেলে কলেজ শিক্ষার্থী যোহন ম্রো বলেন, “২২ ফেব্রুয়ারি সরইয়ে কোয়ান্টাম এলাকা থেকে বাবাকে গ্রেপ্তার করে একদল সাদা পোশাকের পুলিশ।”