জেলা বিএনপির সদস্য সচিব বলেন, বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কোনো নেতা-কর্মী সহিংসতায় জড়িত ছিল না। তবুও মামলার আসামি হয়েছে তারা।
Published : 25 Jul 2024, 09:19 PM
ফেনীতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে নাশকতার ঘটনায় দুইটি মামলা করা হয়েছে। এসব মামলায় সাত দিনে ৭৪ জনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বৃহস্পতিবার বিকালে ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) থোয়াই অংপ্রু মারমা জানান, দুইটি মামলায় ৪০ জনের নাম উল্লেখ করে ৪০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার বিকাল পর্যন্ত ৭৪ জনকে গ্রেপ্তার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানায়, গত ১৮ জুলাই শহরের শহীদ শহীদুল্লাহ পার্কের কাছে সড়কে নাশকতার ঘটনায় ফেনী মডেল থানার এসআই আল আমিন বাদী হয়ে ২১ জনের নাম উল্লেখ করে ১০০ থেকে ১৫০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে মামলা করেন।
অন্যদিকে, ২০ জুলাই শহরের তাকিয়া রোড সংলগ্ন বড় মসজিদ এলাকায় নাশকতার ঘটনায় ২৯ জনের নাম উল্লেখ করে ১৫০ থেকে ২০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে আরেকটি মামলা করে পুলিশ।
দুটো মামলায় আজহার নামীয় আসামিদের মধ্যে রয়েছেন- ফেনী সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী মারুফ হায়দার তাজিম, ফেনী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক শেখ ফরিদ বাহার, সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল, যুগ্ম আহ্বায়ক গাজী হাবিবুল্লাহ মানিক, আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী, জেলা যুবদলের সভাপতি জাকির হোসেন জসিম, সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন খন্দকার, সাংগঠনিক সম্পাদক নঈম উল্লা চৌধুরী বরাত, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সালাম উদ্দিন মামুন, সাধারণ সম্পাদক মোশেদ আলম মিলন, ছাত্র শিবিরের শহর শাখার সভাপতি শরিফুল ইসলাম, জেলা সভাপতি ইসমাইল হোসেন।
এছাড়া ১৮ জুলাই থেকে গত সাত দিনে গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে আছেন- ফেনী পৌর জামায়াতের সেক্রেটারি মো. ইলিয়াছ হোসেন, জেলা যুবদলের সহ-প্রচার সম্পাদক মোজাম্মেল হোসেন আরিফ, সোনাগাজী উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আমিন উদ্দিন দোলন।
এসব বিষয়ে ফেনী জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল বলেন, কোটা নিয়ে আন্দোলনের ঘটনায় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের কোনো নেতা-কর্মী সহিংসতায় জড়িত ছিল না। তবুও মামলার আসামি হয়েছে দলের নেতাকর্মীরা।
এ কারণে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের সিনিয়র নেতারা জামিন নেয়ার আগ পর্যন্ত আত্মগোপনে রয়েছেন বলে জানান তিনি।
ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানচলাচল স্বাভাবিক
এদিকে কারফিউ শিথিল থাকায় বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানচলাচল অনেকটা স্বাভাবিক রয়েছে। গত দুই দিনের তুলনায় ফেনী থেকে সারাদেশে চলাচল করা গণপরিবহনেও যাত্রীর চাপ বেড়েছে।
তবে সারাদেশের মতো ফেনীতেও ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।
জেলার অন্যতম বড় পরিবহন স্টার লাইনের ভাইস চেয়ারম্যান জাফর উদ্দিন জানান, কারফিউ শিথিল থাকা অবস্থায় সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত কাউন্টারগুলোতে টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। বাস চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
এছাড়া মহাসড়কে চলাচল করা অন্য যানবাহন ও জেলার অভ্যান্তরে ছোট-বড় যান চলাচলও স্বাভাবিক রয়েছে।
ফেনীর পুলিশ সুপার মো. মনিরুল ইসলাম জানান, জেলার সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টগুলোতে র্যাব, বিজিবি ও সেনাবাহিনীর সঙ্গে পুলিশের টিম কাজ করছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতায় গত দুই-তিনদিন কোথাও কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
ফেনী জেলা প্রশাসক মুছাম্মৎ শাহিনা আক্তার জানান, জেলায় অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রশাসন সর্বত্র সতর্ক রয়েছে।