সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার জানান, সংশ্লিষ্ট এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।
Published : 09 May 2024, 10:11 PM
পাবনার সুজানগর উপজেলায় নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতায় প্রায় অর্ধশত বাড়ি ও দোকানে হামলা-ভাঙচুর ও মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। এতে মুক্তিযোদ্ধাসহ আহত হয়েছেন অন্তত দশ জন।
বুধবার রাতে কয়েক দফায় উপজেলার মানিকহাট, সাগরকান্দি ও সাতবাড়িয়া সহ কয়েকটি ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে এসব ঘটনা ঘটেছে।
সুজানগর সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম জানিয়েছেন, সুজানগরে নির্বাচন পরবর্তী বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটেছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সহিংসতা প্রতিরোধে তৎপর রয়েছে।
মারপিটে গুরুতর আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পাবনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন- আহমদপুর দক্ষিণচর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মতিন খান, আলম, রানী বেগমসহ বেশ কয়েকজন।
বুধবার প্রথম ধাপে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে সুজানগর উপজেলা চেয়ারম্যান পদে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি আব্দুল ওহাবের প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিনুজ্জামান শাহিন। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ভোটে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন আব্দুল ওহাব।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ফলাফল ঘোষণার পর থেকেই চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাবের সমর্থকরা পরিকল্পিতভাবে লাঠিসোঁটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে পরাজিত প্রার্থীর সমর্থকদের প্রায় অর্ধশত বাড়ি ও দোকানে হামলা-ভাঙচুর চালিয়েছেন।
সাতবাড়ীয়া ভাটপাড়া এলাকার সাব্বির বলেন, “আনারস মার্কার চেয়ারম্যান প্রার্থী শাহীনুজ্জামান শাহীনের নির্বাচন শেষে রাতে বাড়ি এসে ভাত খাচ্ছিলাম। এর মধ্যে মোটরসাইকেলের সমর্থক ওহাবের লোকজন অস্ত্রশস্ত্রসহ দলবল নিয়ে আমাদের ঘর-বাড়িতে হামলা চালায়।
“তারা ঘর-বাড়ি ভাঙচুর করে ঘরে থাকা নগদ টাকা-পয়সা, স্বর্ণালংকার লুটপাট করে নিয়ে যায়।”
এখন ‘জীবন নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায়’ ভুগছেন বলেও জানান তিনি।
মানিকহাট ইউনিয়নের ক্ষেতুপাড়া এলাকার আরিফা খাতুন বলেন, “শাহীন হেরে যাওয়ায় রাতের আধারে ওহাবের লোকজন আমাদের বাড়ি-ঘর ভাঙচুর করে এবং ঘরে থাকা পিঁয়াজ বিক্রির নগদ টাকা লুটপাট করে নিয়ে যায়।”
এ বিষয়ে পরাজিত প্রার্থী শাহীনুজ্জামান বলেন, “নির্বাচনে প্রভাব বিস্তারের নানা ঘটনা থাকলেও সার্বিকভাবে জনগণের রায়কে আমি মেনে নিয়েছি। নির্বাচন নিয়ে আমি কোনো অভিযোগ করিনি।
“আমার প্রত্যাশা ছিল নতুন উপজেলা চেয়ারম্যানের সঙ্গে আমরা এলাকার উন্নয়নে একসাথে কাজ করবো। কিন্তু রাত থেকেই তারা যা শুরু করেছে তা পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নৃশংসতাকেও হার মানায়।”
শাহীনুজ্জামান আরও বলেন, “আমি এই হামলার তীব্র নিন্দা জানাই ও দোষীদের শাস্তির দাবি করছি। একই সাথে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানাচ্ছি।”
এদিকে এই হামলার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি বিজয়ী চেয়ারম্যান আব্দুল ওহাব। তবে নেতা-কর্মীদের শান্ত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রবিউল ইসলাম বলেন, “সংশ্লিষ্ট এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। হামলা মারপিটের ঘটনায় অভিযোগ পেলে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। ”