Published : 28 Apr 2025, 04:33 PM
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় বীমা গ্রাহকদের পলিসির ১০ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে রুপালী লাইফ ইন্সুরেন্স মধুমতি সার্ভিস সেলের সিনিয়র শাখা ব্যবস্থাপক (জিএম) সাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে।
রোববার এ বিষয়ে কয়েকজন ভুক্তভোগী টুঙ্গিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এবং রুপালী লাইফ ইন্সুরেন্স কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, টুঙ্গিপাড়া উপজেলার প্রায় ২০ জন গ্রাহকের বীমার টাকা কোম্পানিতে জমা না দিয়ে অন্তত ১০ লাখ টাকা আত্মসাত করেছেন রুপালী লাইফ ইন্সুরেন্স মধুমতি সার্ভিস সেলের শাখা ব্যবস্থাপক সাইদুর রহমান। টাকা ফেরত চাইলে নানা টাল-বাহানা করা হচ্ছে। হুমকি দেওয়া হচ্ছে গ্রাহকদের।
টুঙ্গিপাড়ার গিমাডাঙ্গা গ্রামের বাসিন্দা মিরাজ শেখ বলেন, “২০২১ সালে সাইদুর রহমানের মাধ্যমে বাৎসরিক ৫১ হাজার ৬৫০ টাকা প্রিমিয়ামে একটি ইন্স্যুরেন্স চালু করি। চার বছর ধরে সাইদুর রহমানের কাছে পলিসির টাকা জমা দিচ্ছি। তিনি আমাকে একটির জমা রশিদ দিয়েছেন। বাকি তিনটি বাৎসরিক প্রিমিয়ামের ১ লাখ ৫৪ হাজার ৯৫০ টাকার কোনো রশিদ দেননি।
“পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, রুপালী লাইফ ইন্সুরেন্সে আমার তিন কিস্তির টাকা জমা হয়নি। তখন টাকা ফেরত চাই। তারপর থেকে সাইদুর সন্ত্রাসী দিয়ে আমাকে হুমকি দিয়ে আসছে।”
গওহরডাঙ্গা গ্রামের আসলাম খান বলেন, “আমার বাৎসরিক পলিসির পরিমাণ ৫০ হাজার ১৫০ টাকা। আমি প্রথম পলিসির প্রথম কিস্তির টাকা সাইদুর রহমানের কাছে দেই। তিনি আমাকে কোনো রশিদ দেননি। পরে অফিসে গিয়ে জানতে পারি, কোম্পানিতে আমার কোনো টাকা জমা হয়নি। এ টাকা ওই কর্মকর্তা আত্মসাৎ করেছেন।”
পেনাখালী গ্রামের মানিক হাওলাদার ও মুর্শিদা বেগম বলেন, তাদের দুজনের বাৎসরিক প্রিমিয়ামের মোট ৪৮ হাজার ৫৩৯ টাকা জমা দিয়েছেন। কিন্তু তাদের কোনো রশিদ দেওয়া হয়নি। ইন্সুরেন্স কোম্পানির ওই শাখায় বারবার ধরনা দিলেও সুরাহা হয়নি।
ওই কোম্পানির গ্রাহক আইরিন আক্তার, শাহিনুর বেগম, জাহানারা বেগম, মমিনুজ্জামান, সুমি খানম বলছেন, তাদের পলিসির অর্থ জমা দেওয়ার পরও রশিদ পাননি। তাদের টাকা প্রধান কার্যালয়ে জমা হয়নি। বীমার টাকা আত্মসাৎ করেছেন জিএম সাইদুর রহমান। বর্তমানে টাকা ফেরত চাইলে নানা রকম হুমকি দিচ্ছে তারা।
কোম্পানির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষসহ সরকার ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রূপালী লাইফ ইন্সুরেন্স মধুমতি সার্ভিস সেলের সিনিয়র শাখা ব্যবস্থাপক সাইদুর রহমান তিনি বলেন, “গ্রাহকেরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে অভিযোগ করেছিলেন। তখন ইউএনও স্যার আমাকে তার কার্যালয়ে ডাকার পর কথা দিয়েছি, দ্রুত সময়ের মধ্যে টাকা পরিশোধ করে দিবো।”
তবে অন্যান্য গ্রাহকের টাকা আত্মসাত ও হুমকির বিষয়ে তিনি কোনো কথা বলতে চাননি।
রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি ঢাকার প্রধান কার্যালয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম কিবরিয়া বলেন, টুঙ্গিপাড়া উপজেলার কয়েকজন গ্রাহক লিখিত অভিযোগ করেছেন শাখা ব্যবস্থাপক সাইদুর রহমানের বিরুদ্ধে। একাধিক গ্রাহকের পলিসির টাকা তিনি কোম্পানির হিসাবে জমা দেননি। তার একটা তালিকা আমাদের হাতে এসেছে। এ বিষয়ে তদন্ত করে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”