রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বসছে ‘চিহ্নমেলা’র আসর

দেশি-বিদেশি প্রায় ২০০ লিটল ম্যাগাজিনের চার শতাধিক লেখক-সম্পাদক ও পাঠক অংশ নেবেন এবারের মেলায়।

ফাইল ছবি

লিটল ম্যাগাজিনের লেখকদের আসর 'চিহ্নমেলা’ শুরু হতে যাচ্ছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে। 

আগামী ১৭ ও ১৮ অক্টোবর সাহিত্যপত্রিকা 'চিহ্ন'র আয়োজনে পঞ্চমবারের মত বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ কলাভবন প্রাঙ্গণে এ আসর বসছে। 

এবারের 'চিহ্নমেলা’র আসরটির নাম পেয়েছে ‘মুক্তবাংলা'। দেশি-বিদেশি প্রায় ২০০ লিটল ম্যাগাজিনের চার শতাধিক লেখক-সম্পাদক ও পাঠক অংশ নেবেন এবারের আসরে। প্রতিবেশী দেশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কয়েকজন লেখক ও সম্পাদকও উপস্থিত থাকবেন। 

অতিথিদের মধ্যে আছেন পশ্চিম বাংলার লিটলম্যাগ ব্যক্তিত্ব সন্দ্বীপ দত্ত, কবি নির্মলেন্দু গুণ, প্রাবন্ধিক ও অর্থনীতিবিদ সনৎকুমার সাহা ও কবি জুলফিকার মতিন। 

মেলা আয়োজক পর্ষদের অন্যতম সদস্য সুবিদ সাপেক্ষ জানান, পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার প্রায় একশর মত লিটল ম্যাগাজিন মেলায় অংশগ্রহণের জন্য চূড়ান্ত সম্মতি জানিয়েছে। আর দেশের ভেতর থেকে প্রায় তিনশ লেখক-কবি-সাহিত্যিক ও তাত্ত্বিক অংশ নেবেন। 

“মেলার প্রায় এক বছর আগে থেকে আমরা সম্ভাব্য অংশগ্রহণকারীদের একটি তালিকা প্রস্তুত করি। তারপর তাদের সঙ্গে প্রাথমিক যোগাযোগ ছয় মাস আগে শুরু করি। মেলার এক মাস আগে তাদের কাছে চূড়ান্ত সম্মতি নেওয়া হয়। এবারের আয়োজনের প্রায় ৯০ শতাংশ প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আশা করি, সকলের অংশগ্রহণে আমরা সফলভাবে মেলা উদযাপন করতে পারব।“ 

চিহ্ন পত্রিকার সম্পাদক শহীদ ইকবাল বলেন, মেলা সবার জন্য উন্মুক্ত। যে কেউ আসতে পারবেন। 

“আমরা সমকালীন লেখালেখি আর বুদ্ধিবৃত্তিক বোঝাপড়ার বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করি। প্রতিটি ক্ষেত্রে ওই ধরনের কাজের সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞ, নতুন চিন্তকদের নিয়ে আলোচনা পর্ব চলে। সমাজটাকে, দেশটাকে বোঝার বিষয়টি উঠে আসে। এ ধরনের অনুষ্ঠানগুলোতে সকলের অংশগ্রহণের সুযোগ রয়েছে।“ 

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক, লেখক শহীদ ইকবালের সম্পাদনায় 'চিহ্ন' প্রায় দুই দশক ধরে নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে। আর মেলার আয়োজন প্রথম হয় ২০১১ সালে। এর ধারাবাহিকতায় ২০১৩, ২০১৬, ২০১৯ সালেও মেলা করে চিহ্ন। 

২০২২ সালে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি প্রথমবারের মত লিটল ম্যাগাজিন পুরস্কার দেয়।

অতিথি ও অনুষ্ঠানসূচি 

মেলার মূল অনুষ্ঠানের প্রথমেই স্মরণ করা হবে প্রয়াত প্রতিথযশা লেখকদের। কবি লেখক, বাংলা একাডেমির পরিচালক আমিনুর রহমান সুলতানের সঞ্চালনায় 'প্রয়াত-প্রিয়জন' শীর্ষক ওই পর্বে শঙ্খ ঘোষ, সৈয়দ শামসুল হক, দেবেশ রায়, আনিসুজ্জামান, হাসান আজিজুল হকের স্মৃতিচারণ করবেন নির্মলেন্দু গুণ, সনৎকুমার সাহা, জুলফিকার মতিন, রুহুল আমিন প্রামাণিক, ইমানুল হক ও অমল সরকার। 

এরপর অধ্যাপক, প্রাবন্ধিক মোহাম্মদ আজম 'সৃষ্টিশীলতার সমাজতত্ত্ব ও লিটলম্যাগ' নিয়ে একক বক্তৃতা করবেন। 

অনুবাদ প্রসঙ্গ নিয়ে কথাসাহিত্যিক মোজাফ্ফর হোসেনের সঞ্চালনায় কথা বলবেন আলম খোরশেদ, শরীফ আতিক-উজ-জামান, সফিকুল ইসলাম, প্রত্যয় হামিদ ও মুহম্মদ মুহসীন। 

মামুন মুস্তাফার সঞ্চালনায় দুই বাংলার কবিতা ও গল্পপাঠে অংশ নেবেন সৈকত হাবিব, আসাদ মান্নান, জফির সেতু, বদরে মুনীর, শামীম হোসেন, নৃপেন চক্রবর্তী, সিরাজদৌলা বাহার, অলোক বিশ্বাস, কামরুল বাহার আরিফ, শিবলী মুক্তাদির, সরোজ দেব, গাজী লতিফ, দ্বিজেন্দ্র ভৌমিক, মাহবুব বারী, কামরুজ্জামান গোপন, শামস সুমন, কুমার দীপ, অভিজিৎ বিশ্বাস, নাজমুল হাছান সুমন, মাসউদ আখতার, আনিফ রুবেদ, সরকার মাসুদ, মঈন শেখ, সুবন্ত যায়েদ। 

প্রথম দিনের সাংস্কৃতিক সন্ধ্যায় বাঁশি বাজাবেন প্রখ্যাত বংশিবাদক হাসন রাজা, সংগীত পরিবেশন করবেন কাঙ্গালিনী সুফিয়া। 

দ্বিতীয় দিনের বিভিন্ন পর্বে অংশ নেবেন লেখক ইমতিয়ার শামীম, হোসেনউদ্দীন হোসেন, গৌতম গুহরায়, আহমেদ শিপলু, কানাই সেন, অনিরুদ্ধ কাহালি, তারেক রেজা, রাহেল রাজীব, মোস্তাক আহমেদ, নারায়ণ রায়, রাজা সহিদুল আসলাম, মনিরুল মনির ও মনজু রহমান। 

দ্বিতীয় দিনে চিহ্নপুরস্কার দেওয়া হবে। এরপরে সন্ধ্যায় বাউল ঘরানার গানের দল মাতাল এর পরিবেশনার মধ্য দিয়ে চিহ্নের দুই দিনের আয়োজনের সমাপ্তি হবে।