“আন্দোলনে আহত অনেকে এখনও হাসপাতালে মারা যাচ্ছে। এই মুহুর্তে তোড়ন বানিয়ে উৎসব করার সময় নেই। বিষয়টি এলাকার মানুষ ভালো মনে নেয়নি, যার কারণে সংঘর্ষ হয়েছে।”
Published : 21 Aug 2024, 07:11 PM
ফরিদপুরে বিএনপির দুই পক্ষের সংঘর্ষে একজনের প্রাণ গেছে। এতে আহত হয়েছেন আরও অন্তত ২০ জন।
কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুলের নিজ এলাকায় আগমনকে কেন্দ্র করে বুধবার দুপুরে নগরকান্দায় উপজেলা সদর এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ফরিদপুরের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা সার্কেল) আসাদুজ্জামান শাকিল ঘটনাটি নিশ্চিত করেছেন।
নিহত কবির ভুইয়া (৫৫) উপজেলার ছাগলদি গ্রামের আবুল বসার ভূঁইয়ার ছেলে। তিনি বিএনপির সমর্থক ছিলেন বলেও জানা গেছে।
আহতদের মধ্যে দুইজনকে গুরুতর আহত অবস্থায় ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শহীদুল ইসলাম বাবুলের সমর্থকদের অভিযোগ, উপজেলা সদরে বাবুলের পথসভার আয়োজন করা হয়। এতে বাঁধা সৃষ্টি করার জন্য বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ রিংকুর সমর্থকেরা অস্ত্র নিয়ে সকাল থেকে সেখানে অবস্থান নেন। এক পর্যায়ে বাবুলের সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। সেই সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে আশপাশের এলাকায়ও।
এছাড়া ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ভবুকদিয়া থেকে তালমা পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে বাবুলের সমর্থকদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় কবির ভুইয়া গুরুতর আহত হয়। তাকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আহত হয় আরও অন্তত ২০ জন।
পরে বাবলু নগরকান্দায় নির্ধারিত পথসভাটি করতে না পেরে তালমা মোড়ে পথসভা করেন। এতে নগরকান্দা উপজেলা বিএনপির সভাপতি লিয়াকত আলী বুলুর সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা বক্তব্য দেন।
পরে বিকাল ৫টায় ফরিদপুর প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রাণহানির নির্দেশদাতা হিসেবে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ শামা ওবায়েদ রিংকুকে দায়ী করেন বাবুল।
তিনি বলেন, “আমার আগমন উপলক্ষে শামা ওবায়েদ বাড়িতে বসে পরিকল্পনা করেন, আমাকে এলাকায় ঢুকতে দেওয়া হবে না। যার প্রমাণ আজকের ঘটনা। এলাকায় ঢোকার পরেই পথে পথে বাঁধা সৃষ্টি করা হয়; অসংখ্য গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এছাড়া নেতাকর্মীদের মারধর করা হয় এবং নগরকান্দায় একজন মারা যায়।”
এদিকে শামা ওবায়েদ অভিযোগ অসত্য দাবি করে বলেন, “নব্য বিএনপি এ হামলা করেছে, তবে এটা খুবই দুঃখজনক। নগরকান্দায় আমার দল বলতে কিছুই নেই, সকলেই বিএনপি। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা পতন আন্দোলনে আহত অনেকে এখনও হাসপাতালে মারা যাচ্ছে। এই মুহুর্তে তোড়ন বানিয়ে উৎসব করার সময় নেই। বিষয়টি এলাকার মানুষ ভালো মনে নেয়নি, যার কারণে সংঘর্ষ হয়েছে।
“তবে এঘটনায় একজনের প্রাণহানিতে আমি মর্মাহত। এজন্য যা করার দরকার তাই করা হবে।”
ফরিদপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব একে কিবরিয়া স্বপন বলেন, “এসব ঘটনার জন্য যেই দায়ী থাকুক, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে বলে মনে করি।”
সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান শাকিল বলেন, “বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে মাঠে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক রয়েছে।”