সংঘর্ষের সময় প্রায় আধা ঘণ্টা মাওয়া প্রান্ত থেকে পদ্মা সেতুতে যান চলাচল বন্ধ থাকে।
Published : 17 Jul 2024, 11:56 PM
মুন্সীগঞ্জে কোটা সংস্কার নিয়ে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া অন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পদ্মা সেতুর মাওয়া পয়েন্ট। এতে প্রায় আধা ঘণ্টা মাওয়া প্রান্ত থেকে সেতুতে যান চলাচল বন্ধ থাকে।
বুধবার বেলা ১১টা দিকে পদ্মা সেতুর মাওয়া পয়েন্ট সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের এ সংঘর্ষ শুরু হয়।
মাওয়া ট্রাফিক পুলিশের পরিদর্শক (টিআই) জিয়াউল হায়দার বলেন, সকালে পদ্মা সেতু উত্তর থানার সামনে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে জড়ো হন। এ সময় তারা পদ্মা সেতুর উত্তর থানার সামনের সড়কে যান চলাচল বন্ধ করে বসে পড়ে।
তাদের সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা-ধস্তাধস্তি হয়। পুলিশ এ সময় আন্দোলনরত এক শিক্ষার্থীকে আটক করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শিক্ষার্থীরা পুলিশকে ধাওয়া দেয়।
পরে পুলিশ থানার ভেতরে অবস্থান নিলে থানা লক্ষ্য করে শিক্ষার্থীরা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে।
আন্দোলনকারীরা পদ্মা সেতু উত্তর টোল প্লাজার মুখে খানবাড়ি এলাকায় যান চলাচল বন্ধ করে দেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় বেশ কিছুক্ষণ সেতুতে যানবাহন চলাচল ব্যাহত হয়। পরে পুলিশ যান চলাচল স্বাভাবিক করে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদুনে গ্যাস ও শর্টগানের গুলি ছোড়ে পুলিশ। সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় পদ্মা সেতুর মাওয়া পয়েন্ট।
আন্দোলনকারীদের দাবি এ সময় অন্তত সাত শিক্ষার্থী আহত হন এবং তিনজনকে পুলিশ আটক করে।
তবে পুলিশ বলছে পদ্মা উত্তর থানার ওসিসহ তিন পুলিশ আহত হয় এবং তারা একজনকে আটক করেছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার তোফায়েল হোসেন সর্দার বলেন, “আমরা অনেকক্ষণ ধৈর্য্য ধরে আন্দোলনকারীদের বুঝিয়েছি। কিন্তু তারা শুনেনি। অবশেষে বাধ্য হয়ে লাঠিচার্জ, টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করি। পরে যান চলাচল স্বাভাবিক করি। এ সময় এক শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে।”
তিনি জানান, সংঘর্ষে পদ্মা উত্তর থানার ওসি আসাদুজ্জামানসহ তিন পুলিশ আহত হয়েছেন। মহাসড়কের কোথাও যাতে পুনরায় বিশৃঙ্খলা না ঘটে সে বিষয়ে পুলিশ সতর্ক রয়েছে।
এদিকে বুধবার দুপুর ১২টার দিকে জেলা শহরের মুক্তিযুদ্ধের ভাস্কর্য চত্বরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ হামলা চালিয়েছে বলে আন্দোলনকারীরা অভিযোগ করেছেন।
এর আগে কোটা পদ্ধতির বিরোধিতা করে আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা। পরে কয়েকটি সড়ক ঘুরে প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান নেয় তারা। এরপর স্লোগান দিতে দিতে ভাস্কর্য চত্বরে গিয়ে অবস্থান নেয় আন্দোলনকারীরা।
এদিকে একই স্থানে রাস্তার অপরপ্রান্তে অবস্থান নেয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। সেখান থেকে তারাও স্লোগান দিতে থাকেন। একপর্যায়ে কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালায় ছাত্রলীগ।
এতে দিগ্বিদিক ছুটতে থাকে কোটা আন্দোলনকারীরা। পুলিশের উপস্থিতিতেই এই হামলা হয় বলে দাবি আন্দোলনকারীদের।
পরে প্রায় এক ঘণ্টা পরে শহরে যান চলাচল স্বাভাবিক হয়।
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি মো. আমিনুল ইসলাম জানান, “শিক্ষার্থীরা রাস্তা অবরোধ করে সেখানে বসে পড়ে। এ সময় কিছু লোক তাদের ওপর আক্রমণ করে। তাদের প্রতিরোধ করার চেষ্টা করে পুলিশ। কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর পুলিশ কোনো হামলা চালায়নি। তবে হামলাকারীদের ধাওয়া দেয় পুলিশ।”