দুর্নীতি করে কেউ পার পাবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সচিব মো. মাহবুব হোসেন।
সোমবার গাজীপুর শহরের বঙ্গতাজ অডিটোরিয়ামে দুদক আয়োজিত গণশুনানিতে অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন।
সচিব বলেন, গুরুতর অভিযাগগুলো আমলে নিয়ে দুদকের আইন ও নিয়মানুয়ায়ী পর্যবেক্ষণ ও অনুসন্ধান করা হবে এবং কমিশনের সিদ্ধান্তক্রমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
“দুর্নীতির কোথাও কোনো সুযোগ নেই। যে ধর্মেরই হোন না কেন, কেউ কিন্তু দুর্নীতিকে সমর্থন করে না। কোনো অভিযোগের সমাধান না হওয়া দুদক আপনাদের সঙ্গেই আছে, থাকবে। দুদক ভালোর সঙ্গে থাকবে, খারাপের সঙ্গে থাকবে না।”
গত কয়েকদিন ধরে গাজীপুর সদরে মাইকিং ও প্রচারপত্র বিতরণ করে এলাকাবাসী কাছ থেকে লিখিত অভিযোগ নেওয়া হয়। সোমবার সেগুলো সচিবের সামনে উপস্থাপন করা হয় এবং যেগুলো সম্ভব সঙ্গে সঙ্গে সমাধান করা হয়।
শুনানিতে বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ সামসুদ্দিন শহীদ তাউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সেবা নিয়ে অভিযোগ করে বলেন, “সেখানে মুক্তিযোদ্ধারা কাঙ্ক্ষিত সেবা পান না। চিকিৎসকরা ব্যবস্থাপত্রে যে ওষুধ লিখে দেন তা হাসপাতালে পাওয়া যায় না, বাইরে থেকে কিনতে হয়। হাসপাতালটি দালালচক্রে ভরপুর।”
সদর ভূমি কার্যালয়ের দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগ করে রফিকুল ইসলাম বলেন, “নামজারি করতে হলে নিয়ম বহির্ভূতভাবে সেখানে ১২ হাজার টাকা দাবি করা হয়।”
পাসপোর্ট নিয়ে হয়রানি ও বিড়ম্বনার অভিযোগ করেন গাজীপুর মহানগরীর ভোগড়া এলাকার আলেক মিয়া।
সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত বিআরটিএ, পল্লীবিদ্যুৎ, জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরের দুর্নীতি নিয়ে অভিযোগের ওপর গণশুনানি হয়। এ সময় সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও দপ্তরের কর্মকর্তা, প্রতিনিধি অভিযোগের বিষয়ে জবাব ও সমাধানের আশ্বাস দেন।
এসব অভিযোগের বিষয়ে দুদক সচিব বলেন, “কমিশন মূলত দুই ধরনের কাজ করে থাকে। প্রতিকারমূলক এবং প্রতিরোধমূলক। গাজীপুরে প্রতিরোধমূলক কাজের গণশুনানি হয়েছে।”
গাজীপুরে একশ অভিযোগ এসেছে। এসব অভিযোগের ব্যাপারে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার কথা জানান সচিব।
জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমানের সভাপতিত্বে গণশুনানি অনুষ্ঠানে দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন, জেলা পুলিশ সুপার কাজী শফিকুল ইসলাম, মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার আবু তোরাব মো. শামসুর রহমান, দুদকের ঢাকা বিভাগীয় পরিচালক মোরশেদ আলম, গাজীপুর জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অধ্যাপক এম এ বারী, সাধারণ সম্পাদক মুকুল কুমার মল্লিক উপস্থিত ছিলেন।