থানার ওসি বলেন, বিষয়টি তার জানা নেই।
Published : 24 Jun 2023, 06:23 PM
গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় এক শিক্ষক দম্পতি ১০ দিন ধরে ‘নিখোঁজ’ রয়েছেন।
শিক্ষক খোকন চন্দ্র রায় (৫৫) ও তার স্ত্রী শিখা রানী রায় (৪৫) নিখোঁজ থাকার বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
খোকন উপজেলার ১২৭ নম্বর গজালিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তার স্ত্রী শিখা একই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক।
ভূদেব চন্দ্র বালা নামে তাদের এক সহকর্মী বলেন, “গত ১১ জুন তারা কর্মস্থল থেকে তিনদিনের ছুটি নেন; ১৪ জুন ছুটি শেষ হলেও তারা কাজে যোগ না দিলে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।”
ভূদেব চন্দ্র বলেন, “বিষয়টি আমরা উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার ইউছুব আলী খান স্যারকে জানিয়েছি। ”
তিনি আরও জানান, তাদের চার কন্যা ঢাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া করার কারণে প্রতি মাসেই ধার-দেনা করে চলতে হতো।
গত শুক্রবার উপজেলার গজালিয়া গ্রামে এই শিক্ষক দম্পতির বাড়িতে গিয়েও তাদের পাওয়া যায়নি।
বিদ্যালয়টির আরেক সহকারী শিক্ষক অমূল্য রতন হালদার বলেন, “আমাদের প্রধান শিক্ষক অনেক ব্যক্তির কাছ থেকে চড়া সুদে টাকা এনেছিলেন। যাদের কাছ থেকে টাকা এনেছিলেন তারা প্রায়ই টাকার জন্য খোকন চন্দ্র রায়কে চাপ দিতেন। এ কারণে তিনি পালিয়ে থাকতে পারেন।”
টাকা পাওয়ার কথা স্বীকার করে ঘাঘর বাজারের কাপড় ও মুদি ব্যবসায়ী পূর্ণ চন্দ্র সাহা বলেন, “শিক্ষক খোকন চন্দ্র রায়ের কাছে আমি টাকা পাই। তবে তাকে টাকার জন্য কখনো চাপ দেয়নি।”
তবে কত টাকা পাওনা আছে তা তিনি বলতে রাজি হননি।
খোকন চন্দ্র রায়ের চাচাতো ভাই পূর্বাপাড়া গ্রামের স্কুলশিক্ষক সোমনাথ রায় বলেন, “খোকন চন্দ্র আমাদের বংশীয় কাকা প্রয়াত যোগেন্দ্রনাথ রায়ের একমাত্র পুত্র। তিনি প্রায় ৩০ বছর আগে বাড়ির জায়গা-জমি বিক্রি করে কান্দি ইউনিয়নের গজালিয়া গ্রামে বাড়ি করেছেন। তার সাথে আমাদের তেমন যোগাযোগ নেই। তার নিখোঁজ থাকার কথাও আমাদের জানা নেই।”
উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ইউছুব আলী খান বলেন, “শিক্ষক খোকন চন্দ্র রায় ও তার স্ত্রী শিখা রানী রায় বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকার কথাটি ওই বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ভূদেব চন্দ্র বালা মৌখিক ভাবে আমাকে জানিয়েছেন। বিষয়টি জানার পর আমার ঊধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।”
উপজেলা শিক্ষা অফিসার আমজাদ হোসেন বলেন, “শিক্ষক খোকন চন্দ্র রায় ও তার স্ত্রী শিখা রানী রায় কর্মস্থলে অনুপস্থিত থাকার কারণে তাদের বেতন সাময়িকভাবে স্থগিত করা হয়েছে। এভাবে ৬০ দিন অনুপস্থিত থাকলে তাদের বিরুদ্ধে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
কোটালীপাড়া থানার ওসি মো. জিল্লুর রহমান বলেন, “বিষয়টি আমার জানা নেই।”