গাজীপুরে বাসে ‘ধর্ষণের আলামত মিলেছে’: চিকিৎসক

প্রাথমিক পরীক্ষায় ভিক্টিমের ‘ধর্ষণের আলামত’ পাওয়া গেছে; তারপরও ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হতে ভিকটিমের ডিএনএ পরীক্ষা জন্য ঢাকায় আলামত পাঠানো হয়েছে।

গাজীপুর প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 7 August 2022, 01:22 PM
Updated : 7 August 2022, 01:22 PM

গাজীপুরে চলন্ত বাসে নারী যাত্রীকে ধর্ষণের প্রাথমিক আলামত মিলেছে বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন।

রোববার দুপুরে ওই নারীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে বলে শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের চিকিৎসক এ এন এম আল মামুন জানিয়েছেন।

শুক্রবার গভীর রাতে গাজীপুর মহানগরীর ভোগড়া বাইপাস থেকে মাওনা যাওয়ার সময় তাকওয়া পরিবহনের একটি বাসে ওই নারী ধর্ষণের শিকার হন বলে অভিযোগ উঠেছে।

এ ঘটনায় শনিবার সকালে ওই নারীর স্বামী বাদী হয়ে গাজীপুরের শ্রীপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

ডা. এ এন এম আল মামুন জানান, হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার সানজিদা হক ভিক্টিমের ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন করেছেন। প্রাথমিকভাবে পরীক্ষায় ভিক্টিমের ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। তারপরও ধর্ষণের বিষয়টি নিশ্চিত হতে ভিকটিমের ডিএনএ পরীক্ষা জন্য ঢাকায় আলামত পাঠানো হয়েছে।

ভিকটিমের কপালে একটি আঘাতের চিহ্ন থাকায় তার মাথার এক্স-রে করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।

এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার বরাতে গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছানোয়ার হোসেন জানান, নওগাঁয় আত্মীয়র বাড়ি বেড়ানোর শেষে ওই নারী স্বামীর সঙ্গে বাসে শুক্রবার রাত সাড়ে ৩টার দিকে গাজীপুর মহানগরীর ভোগড়া বাইপাস মোড়ে গিয়ে নামেন। পরে মাওনা যাওয়ার জন্য স্বামীসহ তাকওয়া পরিবহনের একটি বাসে ওঠেন। বাসটি গাজীপুর মহানগরী অতিক্রম করে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক দিয়ে শ্রীপুরের মাওনা ফ্লাইওয়ে পৌঁছার আগে বাসের চালক, হেলপারসহ অন্য আসামিরা ওই নারীর স্বামীকে মারধর করে চলন্ত বাস থেকে ফেলে দেন এবং বাস নিয়ে মাওনা হয়ে রাজেন্দ্রপুরের দিকে রওনা হন। পথে ওই নারীকে তারা দলবেঁধে ধর্ষণ করেন এবং তার ব্যাগ এবং নগদ টাকা পয়সা ছিনিয়ে নেন।

পরে ওই নারীকে মাওনা থেকে গাজীপুরের দিকে যাওয়ার পথে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে রাজেন্দ্রপুরের কাছে একটি নির্জন স্থানে ১০০ টাকা দিয়ে বাস থেকে নামিয়ে বাসটি নিয়ে ধর্ষকরা পালিয়ে যান বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।

পরে ওই নারী হোতাপাড়া এলাকায় জয়দেবপুর থানায় গিয়ে ঘটনা জানান। জয়দেবপুর থানা পুলিশ বিষয়টি ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা ও শ্রীপুর থানায় অবহিত করে।

এ দম্পতি ময়মনসিংহের ভালুকার স্কয়ার মাস্টার বাড়ি এলাকায় ভাড়া বাসায় বসবাস করেন। ওই নারীর স্বামী পোশাক শ্রমিক এবং তিনি গৃহিনী।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছানোয়ার হোসেন আরও জানান, এ ঘটনার আট ঘণ্টার মধ্যে জেলা পুলিশের একাধিক টিম বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে ধর্ষণে জড়িত ৫ জনকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে এবং লুণ্ঠিত সকল মালামাল ও তাকওয়া বাসটি জব্দ করেছে।

গ্রেপ্তররা হলেন নারায়নগঞ্জের আড়াইহাজার উপজেলার দরিপাড়া গ্রামের আলী আকবরের ছেলে রাকিব মোল্লা (২৩), নেত্রকোনা সদরের গুপিরঝুপা গ্রামের প্রয়াত সানোয়ার হোসেনের ছেলে সুমন খান (২০), ময়মনসিংহের ত্রিশাল উপজেলার কাঁঠালকাচারি গ্রামের প্রয়াত কফিল উদ্দিনের ছেলে মো. সজিব (২৩), হালুয়াঘাট উপজেলার বিলডোলা গ্রামের তুলা মিয়ার ছেলে মো. শাহীন মিয়া (১৯) এবং খুলনার রূপসা উপজেলার খান মোহাম্মদপুরের প্রয়াত নূর আলমের ছেলে মো. সুমন হাসান (২২)।

আরও পড়ুন:

Also Read: স্বামীকে নামিয়ে বাসে নারীকে ‘ধর্ষণ’: গ্রেপ্তার ৫