Published : 06 May 2025, 05:55 PM
বাগেরহাটের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দীন ও তার ছেলে শেখ সারহান নাসের তন্ময়সহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে দুইশ কোটি টাকার চাঁদাবাজির মামলা হয়েছে। ঘটনার সাত বছর পর করা এ মামলায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার স্থানীয় নিউ বসুন্ধরা রিয়েল স্টেট লিমিটেডের প্রতিষ্ঠাতা ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মান্নান তালুকদার বাগেরহাট সদর মডেল থানায় মামলাটি করেছেন বলে জানিয়েছেন থানার ওসি মো. মাহামুদ-উল-হাসান।
বাগেরহাট-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দীন ও তার ছেলে বাগেরহাট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ সারহান নাসের তন্ময় ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন, শেখ হেলালের ব্যক্তিগত সহকারী মো. ফিরোজুল ইসলাম, তন্ময়ের ব্যক্তিগত সহকারী শাহীন ও শেখ শহীদুল ইসলাম।
মামলার বাদী আব্দুল মান্নান তালুকদার দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা টাকা পাচারের মামলার আসামি। ছয় বছরের বেশি সময় কারাভোগের পর সম্প্রতি উচ্চ আদালতের জামিনে বের হন তিনি।
মামলার এজাহারের বরাত দিয়ে ওসি মাহামুদ-উল-হাসান মঙ্গলবার বিকালে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, ২০১৮ সালের ১৫ নভেম্বর রাতে শেখ হেলাল উদ্দীন, শেখ সারহান নাসের তন্ময়সহ পাঁচজন আব্দুল মান্নান তালুকদারের শহরের সরুই কার্যালয়ে গিয়ে দুইশত কোটি টাকা চাঁদা দাবি করেন। চাঁদা না দিলে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া, মিথ্যা মামলায় জড়ানোসহ মেরে ফেলার হুমকি দেয় আসামিরা।
তখন আব্দুল মান্নান তালুকদার নিজের ব্যবসা রক্ষার স্বার্থে তাৎক্ষণিকভাবে গ্রাহকের রক্ষিত টাকা থেকে সাত কোটি ত্রিশ লাখ আসামিদের হাতে তুলে দেন। তারা বাকি টাকা দ্রুত দিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে তখনকার মত চলে যান।
এরপর ২০১৯ সালের ৩ জানুয়ারি আসামিরা আবার তার অফিসে এসে বাকি টাকা পরিশোধের জন্য হুমকি দিলে তিনি তাদের আরও ১২ কোটি ৭০ লাখ টাকা চাঁদা দেন।
অর্থাৎ দুদফায় আসামিরা ভয়ভীতি প্রদর্শন করে আব্দুল মান্নান তালুকদারের কাছ থেকে মোট বিশ কোটি টাকা চাঁদা নিয়েছে বলে মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে।
বাদী মামলার এজাহারে আরও উল্লেখ করেন, আসামিরা ফ্যাসিবাদী সরকারের প্রভাবশালী নেতা হওয়ায় আগে তিনি থানা বা আদালতে মামলা করতে সাহস পাননি। এখন পরিবেশ তৈরি হওয়ায় মামলাটি করেছেন।
এই মামলার স্বাক্ষী করা হয়েছে নিউ বসুন্ধরা রিয়েল স্টেট লিমিটেডের মাঠ কর্মকর্তা, ক্যাশিয়ার ও ক্যাশ সহকারীকে।
এদিকে আব্দুল মান্নান তালুকদার ও তার প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান আনিসুর রহমানের বিরুদ্ধে ১১০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে ২০১৯ সালের ৩০ মে বাগেরহাট সদর মডেল থানায় মামলা করেছিলেন দুদকের খুলনা জেলা সমন্বিত কার্যালয়ের তৎকালীন সহকারী পরিচালক মো. শাওন মিয়া। ওই মামলায় আব্দুল মান্নান তালুকদার কারাভোগ করছিলেন।
ওসি মাহামুদ-উল-হাসান বলেন, আব্দুল মান্নান তালুকদারের লিখিত অভিযোগ হাতে পেয়ে ৩৮৬ ও ৩৮৭ পেনালকোড অনুযায়ী চাঁদাবাজির মামলাটি গ্রহণ করা হয়েছে।
এর মধ্যে এজাহারনামীয় ৩ নাম্বার আসামি মো. শহীদুল ইসলামকে (৩৭) গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
অন্য আসামিদের ধরতে পুলিশ তৎপর রয়েছে বলেও জানান ওসি।