সূর্যমুখীর বাগানে ঘুরতে গিয়ে শেরপুর-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে যানজটে আটকে ছিল বনভোজনের বাসটি।
Published : 09 Feb 2025, 12:47 AM
শেরপুরে বনভোজনের বাসে ‘ইভটিজিং’ করায় যুবককে মারধরের জেরে দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে সংঘর্ষ, রাস্তা অবরোধ, আগুন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাটের ঘটনা ঘটেছে।
শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শুরু হওয়া ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া, সংঘর্ষ শনিবার দুপুরেও চলেছে বলে জানান শেরপুর সদর থানার ওসি মো. জুবায়দুল আলম।
শেরপুর সদর উপজেলার লছমনপুর ইউনিয়নের কান্দাশেরীরচর ও কৃষ্ণপুর দড়িপাড়া গ্রামের দুই পক্ষের মধ্যে দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্র নিয়ে চলা এ সংঘর্ষে কমপক্ষে ১০ জন আহতের খবর পাওয়া গেছে। কয়েকজনকে আটক করেছে পুলিশ।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলামসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শেরপুর-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে সূর্যমুখীর বাগানে দর্শনার্থীদের ভিড়ে কান্দাশেরীরচর এলাকায় যানজট সৃষ্টি হয়।
শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে যানজটে আটকে থাকা বনভোজনের বাসের এক নারীকে ‘ইভটিজিং’ করে পার্শ্ববর্তী কৃষ্ণপুর দড়িপাড়া গ্রামের এক যুবক। এ ঘটনায় কান্দাশেরীরচর গ্রামের কয়েকজন ওই যুবককে মারধর করেন।
এ খবর পেয়ে এরপর কৃষ্ণপুর দড়িপাড়া গ্রামের লোকজন দলবেঁধে কান্দাশেরীরচর গ্রামে হামলা চালালে শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া।
এতে কান্দাশেরীরচরের হোসেন আলীর ছেলে ফারুক মিয়া (৩০), লাল মিয়ার ছেলে মজনু মিয়া (২৫), ইয়াসিন আলীর ছেলে আব্দুল আলিম (২৬)সহ কমপক্ষে পাঁচ জন গুরুতর আহত হয়।
এসময় কুসুমহাটি বাজারের রাস্তায় আগুন দিয়ে অবরোধ, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ভাঙচুর ও একটি মোবাইলের দোকানে লুটপাটের ঘটনা ঘটে।
খবর পেয়ে শুক্রবার রাত ১১টার দিকে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করে।
এদিকে শুক্রবারের ঘটনার জেরে শনিবার সকাল থেকে দু’পক্ষ কুসুমহাটি বাজারে শেরপুর-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের দুইপাশে অবস্থান নেওয়া শুরু করলে আবারও পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে।
পরে দুপুরের দিকে দু’পক্ষের মধ্যে ফের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। কয়েক দফায় তা চললে দুপক্ষের অন্তত পাঁচ জন আহত হয়েছেন।
এসময় আবারও শেরপুর-জামালপুর আঞ্চলিক মহাসড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে লোকজন সরিয়ে নিলে চলাচল স্বাভাবিক হয়।
শেরপুর ক্যাম্পের ক্যাপ্টেন নাহিয়ান ইসলাম জানান, “খবর পেয়ে সেনাবাহিনীর টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। একইসঙ্গে যান চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে।”
ওসি মো. জুবায়দুল আলম বলেন, “ঘটনাস্থলে পুলিশ ও সেনাবাহিনী রয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। এ ঘটনায় কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। অভিযোগ পাওয়া সাপেক্ষে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”
এ ব্যাপারে শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, “আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে যতটুকু কঠোর হওয়া প্রয়োজন, ততটুকু কঠোর আমরা হব। কোনোক্রমেই আমরা আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে দেব না।”