Published : 06 May 2025, 12:54 PM
রেলওয়ে সেতু নির্মিত হওয়ায় যমুনা সেতুর ওপর থেকে রেলওয়ে ট্র্যাকটি অপসারণ চেয়ে সেতু বিভাগে আলাদা চিঠি দিয়েছে সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক ও যমুনা সেতু কর্তৃপক্ষ।
সেইসঙ্গে চিঠিতে যানবাহন চলাচলের সুবিধার্থে সেতুর ওপর চলমান দুটি পথ প্রশস্তেরও প্রস্তাব করা হয়েছে বলে জানান যমুনা সেতু সাইড অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল।
চিঠিতে বলা হয়েছে, সেতুর ওপরের লেনগুলো সর্বনিম্ন ৭ দশমিক ৩ মিটার থাকার নিয়ম থাকলেও রয়েছে মাত্র ৬ দশমিক ৩ মিটার। রেলওয়ে ট্র্যাকটি অপসারণ করে সড়ক প্রশস্ত করা হলে সেতুতে যানজটের পাশাপাশি দুর্ঘটনাও রোধ করা সম্ভব হবে।
যমুনা নদীর ওপর ১৯৯৮ সালের ২৩ জুন যমুনা বহুমুখী সেতুর উদ্বোধন করা হয়। এরপর সেতুর উত্তর সাইডে রেলওয়ে ট্র্যাক চালু করে ঢাকার সঙ্গে উত্তর-দক্ষিণবঙ্গের রেল যোগাযোগ স্থাপন করে সেতু কর্তৃপক্ষ। ২০০৮ সালে এ সেতুতে ফাটল দেখা দেয়।
এরপর সেতুর ওপর দিয়ে ট্রেন চলাচলে গতি কমিয়ে দেয় সেতু কর্তৃপক্ষ। ২০১১ সালে সেতু বিভাগ যমুনা সেতুর উত্তর পাশে আরেকটি নতুন রেলওয়ে সেতু নির্মাণের প্রস্তাব দেয়। ২০১৮ সালে সেতুটি নির্মাণের সিদ্ধান্ত নেয় সরকার।
এরপর ২০২৫ সালের ১৮ মার্চ যমুনা নদীর ওপর নির্মিত রেলওয়ে সেতুর উদ্বোধন করার পর থেকে ট্রেন চলাচল করছে। এ অবস্থায় পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে রয়েছে যমুনা সেতুর রেলওয়ে ট্র্যাকটি। এর মধ্যে ট্র্যাকের স্লিপারে দেখা দিয়েছে মরিচিকার আস্তর। বর্তমানে সেতু দিয়ে শুধু বাস, ট্রাকসহ অন্যান্য যানবাহন চলাচল করে।
যমুনা সেতু সাইট অফিসের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসানুল কবীর পাভেল বলেন, সেতু বিভাগের নিয়ম অনুযায়ী একটি লেন সড়কের মাপ সর্বনিম্ন ৭ দশমিক ৩ মিটার হতে হবে। অথচ এই সেতুর দুটি লেন রয়েছে ৬ দশমিক ৩ মিটার করে। যে কারণে মাঝে মধ্যে সেতুতে দীর্ঘ যানজট দেখা দেয়।
এতে ভোগান্তিতে পড়েন যাত্রী ও চালকরা। পরিত্যক্ত রেলওয়ে ট্র্যাকটির দৈর্ঘ্য সাড়ে তিন মিটার। এই রেলওয়ে ট্র্যাকটি অপসারণ করা হলে সেতুর লেন দুটি আরও প্রশস্ত করা সম্ভব হবে।
সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবনা সেতু বিভাগে পাঠানো হয়েছে বলে জানান প্রকৌশলী পাভেল।
তিনি বলেন, যমুনা সেতু দিয়ে সাধারণত প্রতিদিন ২০ থেকে ২২ হাজার যানবাহন পারাপার হয়। কোনো উৎসব আসলে তা তিন গুণ বেড়ে যায়।
এ অবস্থায় রেলওয়ে ট্র্যাকটি অপসারণ করে সেতুতে থাকা লেনগুলো প্রশস্ত করা হলে যানজট ও দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব হবে বলে জানান এই প্রকৌশলী।
১৬ মার্চ যমুনা সেতুর ওপর থেকে রেলওয়ে ট্র্যাকটি অপসারণ করে সেতুর দুটি লেন প্রশস্ত করার জন্য সেতু বিভাগে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে বলে জানান সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম।
সেতু বিভাগের সচিব বিষয়টি দ্রুত দেখার আশ্বাস দিয়েছেন বলে জানান তিনি।