‘১২ লাখ টাকায়’ চাকরির ‘প্রক্সি’ পরীক্ষা: লিখিত পাশ, মৌখিকে ধরা

গত শুক্রবার পঞ্চগড়ে পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক, পরিবার কল্যাণ সহকারী ও আয়া পদে লিখিত পরীক্ষা হয়।

পঞ্চগড় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 29 Nov 2022, 06:20 PM
Updated : 29 Nov 2022, 06:20 PM

পঞ্চগড়ে ‘বদলি পরীক্ষার্থী দিয়ে’ চাকরিতে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলেও মৌখিক দিতে গিয়ে ধরা পড়েছেন দুই তরুণী।

পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের নিয়োগ পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে দুই সহযোগীসহ ওই দুই তরুণীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে পঞ্চগড় সদর থানার ওসি আব্দুল লতিফ মিঞা জানিয়েছেন।

নিয়োগ প্রত্যাশী দুজন হলেন ইয়াসমিন আক্তার (২১) ও মৌসুমি আক্তার (২৮)। তাদের দুই সহযোগী হলেন সাইদুর রহমান (২৪) ও মাসুদ রয়েল (২৮)।

গ্রেপ্তার সবার বাড়ি আটোয়ারী উপজেলার তেলীপাড়া ও নলপুখরি গ্রামে।

পঞ্চগড় সদর থানার ওসি আব্দুল লতিফ মিঞা জানান, এ ঘটনায় সোমবার রাতেই জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপপরিচালক বিপ্লব বড়ুয়া বাদী হয়ে পাঁচ জনের নামে এবং অজ্ঞাত পরিচয় আরও কয়েকজনকে আসামি করে সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।

পরে ওই মামলায় চার জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে মঙ্গলবার আদালতে নেওয়া হলে আদালত তাদের জেল হাজতে পাঠানো নির্দেশ দেয়।

মামলার এজাহারের বরাতে তিনি জানান, গত শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) পঞ্চগড়ে পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক, পরিবার কল্যাণ সহকারী ও আয়া পদে ২,৬৮১ জন চাকরি প্রত্যাশী লিখিত পরীক্ষায় অংশ নেন; উত্তীর্ণ হন ২৯০ জন।

ওসি বলেন, লিখিত পরীক্ষায় ইয়াসমিন ও মৌসুমি উত্তীর্ণ হয়ে সোমবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মৌখিক পরীক্ষায় অংশ নেন; কিন্তু মৌখিক পরীক্ষায় তাদের খাতার লেখার সাথে হাতের লেখার মিল না পেয়ে কয়েকটি প্রশ্নও জিজ্ঞেস করা হয়। তারা সেসব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি।

তিনি আরও জানান, এতে ভাইভা বোর্ডের সদস্যদের সন্দেহ হলে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এক পর্যায়ে তারা প্রক্সির মাধ্যমে লিখিত পরীক্ষায় পাসের কথা স্বীকার করেন।

ওসি জানান, তারা পঞ্চগড় শহরের ধাক্কামারা এলাকার দুলাল হোসেন নামে এক জনের সঙ্গে ১২ লাখ টাকা চুক্তিতে লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এবং চাকরি প্রদানের আশ্বাসের কথাও স্বীকার করেন। পরে দুই পরীক্ষার্থী, তাদের দুই সহযোগী ও দুলাল হোসেনসহ পাঁচ জনের নামে এই মামলা দেওয়া হয়। ওই মামলায় অজ্ঞাত পরিচয় কয়েকজনকেও আসামি করা হয়েছে।

জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের উপপরিচালক বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, ভাইভা বোর্ডের প্রধান ও জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলাম সন্দেহবশত ইয়াসমিন ও মৌসুমি আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। এক পর্যায়ে তারা নিকটজনদের মাধ্যমে ১২ লাখ টাকায় চুক্তিতে প্রক্সির মাধ্যমে লিখিত পরীক্ষায় পাশের কথা স্বীকার করেন।

ওসি আব্দুল লতিফ মিঞা বলেন, সোমবার রাতে মামলার পর এজাহারনামীয় পাঁচ আসামির মধ্যে আটক চারজনকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। মঙ্গলবার বিকালে আদালতের নির্দেশে তাদের জেল হাজাতে পাঠানো হয়।

মামলার পলাতক আসামি দুলাল হোসেনকে গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।