এবারের হলফনামায় বার্ষিক আয়ের ঘরে নিজের এবং নির্ভরশীলদের নামে কোনো আয় উল্লেখ করেননি; সেখানে আয়ের উৎসসমূহের সবগুলো ঘর ফাঁকা রেখেছেন।
Published : 15 Dec 2023, 10:57 PM
আসন্ন দ্বাদশ নির্বাচনে অংশ নিতে নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামা বিশ্লেষণ করে যেখানে বর্তমান অনেক সংসদ সদস্যদের আয় ও সম্পদ বেড়েছে দেখা গেছে; সেখানে সিলেট-২ আসনের এমপি মোকাব্বির খানের হলফনামা এর ব্যতিক্রম দেখাচ্ছে।
২০১৮ সালে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ঐক্যজোট থেকে গণফোরামের প্রার্থী হিসেবে উদীয়মান সূর্য প্রতীকে নির্বাচিত হয়েছিলেন মোকাব্বির। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও এ আসনে প্রার্থী হয়েছেন তিনি।
তার বার্ষিক আয়, স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ কেমন, দ্বাদশ সংসদের জন্য দাখিল করা হলফনামা থেকে জানা গেছে সেসব তথ্য।
ওসমানীনগর-বিশ্বনাথ আসন নিয়ে গঠিত সিলেট-২ আসনে প্রথমবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য মোকাব্বির খান ২০১৮ সালের হলফনামায় পেশার ঘরে প্রবাসী ব্যবসায়ী লিখেছিলেন। এবারে তার পেশা রাজনীতিবিদ উল্লেখ করেছেন।
মোকাব্বির বার্ষিক আয়ের ঘরে নিজের এবং নির্ভরশীলদের নামে কোনো আয় উল্লেখ করেননি; সেখানে আয়ের উৎসসমূহের সবগুলো ঘর ফাঁকা রেখেছেন। এমনকি সংসদ সদস্য হিসেবে পাওয়া বেতন থেকে তার কত আয়, সেটিও উল্লেখ নেই।
একাদশ জাতীয় নির্বাচনের আগে মোকাব্বিরের অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ছিলো ৩ লাখ টাকা। আর এবারের অস্থাবর সম্পদ ৩ লাখ ৬৯ হাজার ২২৪ টাকা। তার মানে, পাঁচ বছরে মোকাব্বিরের সম্পদ বেড়েছে ৬৯ হাজার ২২৪ টাকা।
বর্তমান অস্থাবর সম্পদের মধ্যে হাতে রয়েছে, নগদ ১ লাখ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ৬৯ হাজার ২২৮ টাকা। আর আসবাবপত্রে ২ লাখ টাকা দেখিয়েছেন মোকাব্বির। পাঁচ বছর আগের হলফনামায় আসবাবপত্রের বিবরণী মূল্যে একই টাকা দেখিয়েছিলেন তিনি।
তখন নগদ ৫০ হাজার টাকা দেখিয়েছিলেন। তার ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ছিলো ৫০ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে স্ত্রী ও নির্ভরশীলদের ঘর ফাঁকা দেখানো হয়েছে।
আর স্থাবর সম্পদের মধ্যে যৌথ মালিকানার ঘরে একটি বাড়ি এবং যৌথ মালিকানার ক্ষেত্রে প্রার্থীর অংশে ৪ বিঘা জমির মালিকানা দেখিয়েছেন এই সংসদ সদস্য। একাদশ সংসদ নির্বাচনের জন্য দেওয়া হলফনামায়ও এই সম্পদ উল্লেখ করেছিলেন তিনি।
এবারের হলফনামায় কোনও ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে একক বা যৌথভাবে কিংবা তার ওপর নির্ভরশীল সদস্যের নেওয়া ঋণের ঘর ফাঁকা দেখিয়েছেন মোকাব্বির। পাঁচ বছর আগের হলফনামায়ও ঋণের ঘর ফাঁকা রাখা ছিলো।
প্রায় সব সংসদ সদস্যদের আয় ও সম্পদ বাড়লেও তার কেন বাড়েনি জানতে চাইলে মোকাব্বির খান বলেন, “আমার আয়-ব্যয় সমান তাই আয় বাড়েনি।”
হলফনামায় সংসদ সদস্য হিসেবে সম্মানী ভাতার তথ্য উল্লেখ নেই কেন- এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, “হলফনামায় সবকিছুই উল্লেখ করা আছে।”
৩ ডিসেম্বর মনোনয়ন বাছাইয়ে দলীয় প্রধানের স্বাক্ষর জটিলতায় মোকাব্বিরের মনোনয়ন বাতিল করেন রিটানিং কর্মকর্তা সিলেটের জেলা প্রশাসক শেখ রাসেল হাসান।
ভোটের মাঠে ফিরতে নির্বাচন কমিশনে আপিল করেন তিনি। অবশেষে সোমবার আপিল শুনানির দ্বিতীয় দিনে প্রার্থিতা ফিরে পান তিনি।