তবে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ ধরনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
Published : 11 Jan 2023, 06:35 PM
ফরিদপুরে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে গণঅবস্থান কর্মসূচি চলাকালে ‘আওয়ামী লীগের লোকজন হেলমেট পরিহিত অবস্থায়’ হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বিএনপি।
বুধবার দুপুরে এ ঘটনার সময় হাতবোমা বিস্ফোরণ, ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনাও ঘটে। এরপর কর্মসূচি পণ্ড হয়ে যায়।
বিএনপির দাবি, এতে তাদের ২০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। অপরদিকে আওয়ামী লীগ বলছে, বিএনপির অন্তর্কোন্দলের কারণে এই ঘটনা ঘটেছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে পুলিশের চার সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে ১০ জনকে আটক করা হয়েছে বলে ফরিদপুর কোতোয়ালী থানার ওসি এম এ জলিল জানান।
সরকারের পদত্যাগ, অবৈধ সংসদ বাতিল, নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা এবং বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ নেতাদের মুক্তি দাবিতে দেশব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে ফরিদপুরে এ গণঅবস্থানের আয়োজন করা হয়।
সকাল ১১টায় শহরের অম্বিকা ময়দানে এ কর্মসূচির শুরুতেই জাসাসের শিল্পীরা গণসংগীত পরিবেশন করেন। পরে নেতাদের বক্তব্য চলছিল। বেলা সাড়ে ১২টার দিকে হামলার ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করে বিএনপি।
ফরিদপুর জেলা বিএনপির সদস্যসচিব এ কে কিবরিয়া স্বপন বলেন, “আমাদের শান্তিপূর্ণ কমসূচি চলাকালে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা মঞ্চের উত্তর দিকে শহীদ সূফি সড়কে এসে হেলমেট পড়ে হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটায় এবং ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে।“
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হাতবোমার বিস্ফোরণের শব্দে বিএনপির নেতাকর্মীরা প্রথমে ছোটাছুটি করা শুরু করলেও পরে তারা ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। এতে ওই এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পথচারীরা আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে দৌড়াদৌড়ি শুরু করেন।
পরে পুলিশ এসে উভয় পক্ষকে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) সুমন রঞ্জন করের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল চৌরঙ্গী মোড়ের পূর্বদিকের মুখে অবস্থান নেয়। ইট-পাটকেলে পুলিশের বেশ কয়েকজন সদস্যও আহত হয়।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সুমন রঞ্জন কর বলেন, “এখানে বিএনপির একাধিক পক্ষ রয়েছে। তাদের মধ্যে বিরোধের কারণে হামলার ঘটনা ঘটে।“
তিনি আরও বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে বেশ কিছু কাঁদুনে গ্যাস ও রাবার বুলেট ছুড়া হয়। এ ঘটনায় পুলিশ সদস্যসহ বেশ কিছু লোক আহত হয়েছেন।
তবে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি শামীম হক সন্ধ্যায় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ওই সময় আমরা শহরের রাসেল স্কয়ারে মিটিং করছিলাম। আমরা কেউ তাদের কর্মসূচিতে বাধা দেইনি।”
“নিজেদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে বিরোধ সৃষ্টি করে অপরের ঘাড়ে দোষ দেওয়া বিএনপির চিরাচরিত স্বভাব। এখানেও তারা এটা করেছে।”
কর্মসূচিতে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জহিরুল হক শাহজাদা, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ, সহসাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মাশুকুর রহমান মাশুক, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহ্ মো. আবু জাফর, কাজী হুমায়ুন কবির, ফরিদপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সৈয়দ মোদাররেস আলী ঈসা, মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এ এফ এম কাইয়ুম জঙ্গি, শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সরদার নাসিরুদ্দিন কালু, সাংগঠনিক সম্পাদক সাইদ আহমেদ আসলাম, রাজবাড়ী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট লিয়াকত হোসেন, গোপালগঞ্জ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক রফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।