“বৃষ্টি এখন কমেছে। কিন্তু যদি বৃষ্টি বাড়ে তাহলে আরও গ্রাম প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।”
Published : 28 May 2024, 01:59 PM
ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সৃষ্ট অতিবৃষ্টিতে রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার অন্তত তিনটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। একইসঙ্গে একটি সড়কের ওপর গাছ ও মাটি ধসে পড়ে বিচ্ছিন্ন রয়েছে যোগাযোগ।
মঙ্গলবার দুপুরে বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও শিরীন আক্তার জানান, টানা ও অতিবর্ষণে পাহাড়ি ঢলে কাচালং নদীর পানি বেড়ে উপজেলার মধ্যমপাড়া, মাস্টারঘোনা, লাইল্যাঘোণার প্রায় ৫-৭ হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
এছাড়াও মারিশ্যা-বাঘাইছড়ি সড়কের চার কিলোমিটার, আটকিলোমিটার ও বারোকিলো এলাকায় গাছ পড়ে ও পাহাড় ধসে বাঘাইছড়ি-দীঘিনালা সড়কে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
তবে এখন মাটি অপসারণের কাজ শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি।
এছাড়া পাহাড়ি ঢলে বন্যায় দীঘিনালা-সাজেক সড়কের কবাখালি এলাকা তলিয়ে গেছে এবং যানচলাচল বন্ধ থাকার খবর পাওয়া গেছে।
ঝড়ো হাওয়ার কারণে রাঙামাটিতে ইন্টারনেট ও মোবাইল সংযোগ দুর্বল হয়ে পড়েছে। এতে বৃষ্টিতে ক্ষয়ক্ষতির খবর পেতে বেগ পেতে হচ্ছে।
জেলা শহরে মধ্যরাত থেকে বিদ্যুৎবিছিন্ন থাকার পর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে সংযোগ চালু হয়। যা আধা ঘণ্টার মধ্যে আবার এলাকা ভেদে বিছিন্ন হয়ে পড়ে।
তবে বেলা ১২ টার পর থেকে শহরের বিভিন্ন এলাকায় ধীরে ধীরে বিদ্যুৎ সংযোগ ফের চালু হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে।
এদিকে সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার ভোর ৬টা পর্যন্ত জেলায় ১৮০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রাঙামাটি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র।
ইউএনও শিরীন আক্তার বলেন, “মোবাইল নেটওয়ার্ক ঠিক মতো পাচ্ছি না, যার কারণে সার্বিক পরিস্থিতির খবর পেতে বেগ পেতে হচ্ছে। বৃষ্টি এখন কমেছে। কিন্তু যদি বৃষ্টি বাড়ে তাহলে আরও গ্রাম প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।"
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড-পিডিবি রাঙামাটির নির্বাহী প্রকৌশলী মো. জালাল উদ্দিন বলেছেন, অতিবৃষ্টি এবং ঝড়ের কারণে বিভিন্ন স্থানে সংযোগ তারের ওপর গাছ ভেঙে পড়া এবং ট্রান্সফরমার বিকল হওয়ার কারণে দীর্ঘসময় পুরো জেলার বিভিন্নস্থান বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল।
তিনি বলেন, “মঙ্গলবার সকাল থেকেই আমরা সংস্কার শেষে সংযোগ দিতে শুরু করেছি। ইতোমধ্যে বেলা ১টা পর্যন্ত অন্তত ৬০ ভাগ সংযোগ দেওয়া সম্ভব হয়েছে। আশা করছি, আবহাওয়া যদি আবার বৈরী আচরণ না করে, তবে আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে শতভাগ পুনঃসংযোগ দেওয়া সম্ভব হবে।”
রাঙামাটির জেলা প্রশাসক মো. মোশারফ হোসেন বলছেন, “আমি সকাল থেকে সবখানে কথা বলেছি। বড়দাগে তেমন কোন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। বাঘাইছড়িতে পাহাড়ি ঢলের কারণে কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। নতুন করে বৃষ্টি না হলে তা নেমে যাবে আশা করছি।”
“বিভিন্নস্থানে বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর ধীরে ধীরে তা স্বাভাবিক হয়ে আসছে। কোথাও প্রাণহানির কোন খবর নেই। তবুও আমরা সব জায়গা থেকে তথ্য নিচ্ছি। সব পাওয়ার পর সামগ্রিক ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে জানতে পারব।”