Published : 14 Jan 2024, 03:53 PM
পৌষের শেষ দিনে কুয়াশা ও হাড় কাঁপানো শীতে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। কয়েকদিন ধরে সূর্যের দেখা তেমন একটা মিলছে না। সন্ধ্যার পরেই নেমে যাচ্ছে তাপমাত্রার পারদ।
শীতের দাপটে কাবু হয়ে পড়েছে দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষজন। একেবারে জবুথবু অবস্থা। কুয়াশায় ব্যাহত হয়ে পড়েছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। এ অবস্থায় জরুরি প্রয়োজন ছাড়া লোকজন ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না।
অব্যাহত এই শীতে ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্তরা ভিড় করছেন হাসপাতালে। সর্দি-কাশি, নিউমোনিয়া ও শ্বাসকষ্টের পাশাপাশি কোল্ড ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে।
এ সময়টায় যতটা সম্ভব ঘরের ভেতর থাকা এবং শরীরকে সব সময় গরম রাখার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরা। পাশাপাশি সব সময় গরম খাবার খাওয়া, গরম পানি পান করার কথা বলছেন তারা।
রাজশাহী, দিনাজপুর, পঞ্চগড়, চুয়াডাঙ্গা জেলার ওপর বয়ে যাচ্ছে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, রোববার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় দিনাজপুরে দেশের সর্বনিম্ন ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে।
আবহাওয়ার ৪৮ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, এই সময়ে আকাশ অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা থাকবে, সারাদেশের আবহাওয়া প্রধানত শুষ্ক থাকতে পারে।
মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত সারাদেশে মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা থাকতে পারে, কোথাও কোথাও দুপুর পর্যন্ত চলতে পারে কুয়াশার দাপট।
কুয়াশার কারণে বিমান চলাচল, অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন এবং সড়ক যোগাযোগ সাময়িকভাবে বিঘ্নিত হতে পারে।
দিনাজপুর: জেলায় পর পর দুইদিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করছে। রোববার জেলায় সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। শনিবারও দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল দিনাজপুরে ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
হাড় কাঁপানো কনকনে হিম শীতের প্রভাব পড়েছে জনজীবনে। বিশেষ করে শীত বাড়ায় কষ্ট বেড়েছে শ্রমজীবী মানুষের।
প্রচণ্ড শীতে রাতে যেমন মানুষজন দ্রুতই বাড়ি ফিরছে, তেমনি সকাল ১০টার আগে কর্মজীবী মানুষ ছাড়া অন্যরা ঘর থেকে বের হচ্ছেন না।
কুয়াশার দাপটে সকাল ১০টা পর্যন্ত যানবাহনগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে।
গত পাঁচদিন কুয়াশার দাপট আর মেঘলা আকাশে সূর্যের দেখা মিলেনি। তবে শনিবার দুপুর ২টার পর সূর্যের দেখা মিললেও তাতে কোনো উষ্ণতা ছিল না।
এই শীতে সব বয়সের মানুষ কমবেশি সর্দি-কাশি-জ্বরে ও ডায়রিয়া আক্রান্ত হচ্ছে। তবে এ ক্ষেত্রে শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে বেশি।
দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতালের শিশু চিকিৎসক আব্দুল কাইয়ুম বলেন, শিশুদের জ্বর ও সর্দি-কাশির পাশাপাশি ডায়রিয়া হচ্ছে বেশি। হাসপাতালে আক্রান্ত রোগীর চাপও বেশ বেড়েছে এবং যার মধ্যে বেশি শিশুরাই।
এমন বৈরী আবহওয়ায় শিশুকে ঘরের বাইরে বের না করার পরামর্শ দিয়ে আব্দুল কাইয়ুম বলেন, “শিশুর পায়ে জুতা-মোজা এবং পুরো শরীর শীত বস্ত্রে আবৃত রাখতে হবে।”
কুয়াশা এবং তীব্র শীতে আলুসহ সবজি এবং বোরো বীজতলা ক্ষতি প্রসঙ্গে জেলা কৃষি কর্মকর্তা নুরুজ্জামান বলেন, “আমরা মাঠ পর্যায়ে কৃষককে পরামর্শ দিচ্ছি প্রয়োজনীয় ওষুধ ঘন ঘন স্প্রে করার জন্য। স্প্রে অব্যাহত রাখলে এবং এই আবহাওয়া বেশিদিন না থাকলে কোনো ফসলের ক্ষতি হবে না।”
চুয়াডাঙ্গা: জেলা আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক তহমিনা নাছরিন জানান, শুক্রবার থেকে রোববার পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গায় মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বিরাজ করছে। তাপমাত্রা রয়েছে ১০ ডিগ্রির নীচে। রাতে ও সকালে কুয়াশাও থাকছে। বেশ কয়েকদিন ধরে সকালে সূর্যের দেখা মিলছে দেরিতে।
তীব্র শীতে জেলায় নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়া রোগের প্রকোপ বেড়েছে। প্রতিদিনই নতুন নতুন রোগী আসছে হাসপাতালে।
সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে প্রতিদিন ভর্তি থাকছে ৪২ থেকে ৪৬ জন শিশু রোগী। একই অবস্থা ডায়রিয়া ওয়ার্ডেও। এই ওয়ার্ডে রোগীর চাপ আরও বেশি। গত তিনদিন ধরে এই ওয়ার্ডে ভর্তি থাকছে ৭০ জনের বেশি রোগী।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডের ইনচার্জ সাহানা খাতুন বলেন, রোববার বেলা ২টা পর্যন্ত ডায়রিয়া ওয়ার্ডে নতুন রোগী ভর্তি হয়েছেন ১৭ জন। এই ওয়ার্ডে আগের দিন শনিবার রোগী ছিল ৮১ জন ও শুক্রবার ছিল ৭১ জন।
তিনি বলেন, ডায়রিয়া আক্রান্ত হয়ে যেসব রোগী আসছে তাদের মধ্যে শিশু রোগী বেশি। শীত বাড়লে রোগী বাড়ছে। শীত কমে গেলে রোগীর চাপও কম থাকে।
সদর হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডের ইনচার্জ রেহেনা পারভীন বলেন, এক সপ্তাহ আগে রোগীর যে চাপ ছিল তা কিছুটা কমেছে। বর্তমানে শিশু ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি রয়েছে ৪৬ জন। এর মধ্যে আজ আরও নতুন ১০ জন শিশু রোগী ভর্তি হয়েছে এবং ১৫ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি চলে গেছে।
একই চিত্র জেলার আলমডাঙ্গা, দামুড়হুদা ও জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেও।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ আসাদুর রহমান মালিক খোকন বলেন, তীব্র শীতের সময় শিশুদের প্রতি আলাদা নজর রাখতে হবে। অভিভাবকদের সতর্ক থাকতে হবে। যাতে কোনোক্রমেই শিশুর ঠান্ডা যেন না লাগে।
তিনি আরও বলেন, কোনো কারণে শিশু অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত চিকিৎসকের কাছে নিতে হবে। পচাবাসি খাবার খাওয়ানো যাবে না। বাইরের খাবারও খাওয়ানো যাবে না। সবসময়ই টাটকা বাড়ির তৈরি খাবার খাওয়াতে হবে।
কুড়িগ্রাম: জেলায় গত পাঁচদিন থেকে সূর্যের দেখা মিলছে না। তাপমাত্রার পারদ ৯ থেকে ১৩ ডিগ্রির মধ্যে উঠানামা করলেও কুড়িগ্রামে কমেনি শীতের তীব্রতা।
উত্তরের হিমেল হাওয়ায় শীতের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় নাকাল হয়েছে পড়েছে নদ-নদী তীরবর্তী চর ও দ্বীপ চরের হাজার হাজার মানুষ।
শীত ও ঠান্ডার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে হাসপাতালে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। আক্রান্ত হচ্ছে শিশু ও বয়স্করা।
এদিকে ঠান্ডায় হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিন বাড়ছে শীতজনিত রোগীর সংখ্যা। গত ২৪ ঘণ্টায় কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে ৩১ জন শিশু।
সবমিলিয়ে হাসপাতালটিতে ৭২ জন শিশু ভর্তি রয়েছে। এর মধ্যে ডায়রিয়া ওয়ার্ডের ১২ শয্যার বিপরীতে ভর্তি আছে ৫৭ জন শিশু।
সদরের পাঁচগাছী ইউনিয়নের জালালের মোড় এলাকার নির্মাণ শ্রমিক রশিদ মিয়া বলেন, “৩-৪ দিন থেকে ঠান্ডায় অবস্থা খুব খারাপ। মাঠে কাজ করা যাচ্ছে না। হাত-পা বরফ হয়ে যায়। রাতে ও সকালে বৃষ্টির মত কুয়াশা পড়ছে। আমরা যারা দিন করে দিন খাই, তারা সবাই কষ্টে আছি।”
একই এলাকার দিনমজুর হোসেন আলী বলেন, “খুব ঠান্ডায় কাজ করতে পারছি না। খুব একটা সমস্যাত পড়ি গেছি ঠান্ডার জন্যে। একদিন কাজ হয় তা আর একদিন নাই। রাত ও সকালে বৃষ্টির মত কুয়াশা পড়ছে।”
কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, রোববার ভোরে কুড়িগ্রামে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
সকাল ৭টায় তা দাঁড়ায় ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। তাপমাত্রা এভাবে ওঠানামা করছে।
তাপমাত্রা আরও কয়েক দিন এমন থাকবে। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত তাপমাত্রা বৃদ্ধি হওয়ার সম্ভাবনা কম। তবে এ মাসে একটি শৈত্যপ্রবাহ এ জেলার উপর দিয়ে বয়ে যেতে পারে।
কুড়িগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা নাজমুল ইসলাম বলেন, “জেলাটি হিমালয়ের কাছে অবস্থান হওয়ায় এখানে ঠান্ডার প্রকোপটা একটু বেশি। হাসপাতালে যারা চিকিৎসা নিতে আসছেন অধিকাংশই চরাঞ্চলের মানুষ।
“ডায়েরিয়া নিউমোনিয়া শ্বাসকষ্টসহ বিভিন্ন শীতজনিত রোগীর সংখ্যা হাসপাতালে ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। শিশু, নারী ও বৃদ্ধরা বেশি আক্রান্ত হচ্ছে।”
লালমনিরহাট: হাড় কাঁপানো কনকনে ঠান্ডা, ঘন কুয়াশা আর উত্তরের হিমেল হাওয়ায় এ জেলার মানুষের জীবনে নেমে এসেছে চরম দুর্ভোগ। সব চাইতে বিপদে পড়েছেন নদী চরাঞ্চল এবং তীরবর্তী লোকালয়ের মানুষ। ঠান্ডার প্রকোপে এক প্রকার স্থবির হয়ে পড়েছে এসব এলাকার মানুষের জীবনযাত্রা।
রংপুর আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের কর্মকর্তা মোস্তাফিজার রহমান বলেন, রোববার সকাল ৬টায় জেলার তাপমাত্রা ছিল ১১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
পাঁচদিন ধরে সূর্যের দেখা না মেলায় তীব্র শীতে ভোগান্তি বেড়েছে জনজীবনে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর থেকে ঘন কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে রাস্তা-ঘাট ও লোকালয়।
সেই সঙ্গে হিমেল বাতাসে জবুথবু অবস্থা বিরাজ করছে মানুষের। কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে নিম্ন আয়ের লোকজনের। রাতে বৃষ্টির মত ঝড়ছে কুয়াশা। হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় দুর্ভোগে পড়েছে বয়স্ক ও শিশুরা।
ঠান্ডায় হাসপাতালগুলোতে ভিড় বাড়ছে রোগীর। শীতজনিত নানা রোগ নিয়ে শিশুসহ বয়স্কদের হাসপাতালে ছুটতে দেখা গেছে।
জেলার আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা তিস্তা পাড়ের বাবুল মিয়ার বলেন, “জারোতে হাত-ঠ্যাং টট্টরী নাগছে বাহে। এ্যাদোন ঠান্ডা হইলে মানুষ কেমন করি বাঁচে।”
লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ উল্যাহ বলেন, “এখন পর্যন্ত জেলায় পাঁচটি উপজেলায় ২৪ হাজার কম্বল বিতরণের জন্য পাঠানো হয়েছে। সেসব শীতবস্ত্র বিতরণ কার্যক্রম চলমান আছে। আরো শীতবস্ত্রের চাহিদা পাঠানো হয়েছে।”
রাজশাহী: জেলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষক লতিফা হেলেন জানান, রোববার সকাল ৬টায় রাজশাহীতে তাপমাত্রা ৯ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
এর আগের শনিবার তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা রাজশাহীতে এ মৌসুমের সর্বনিম্ন ছিল।
দিন ও রাতের তাপমাত্রার ফারাক কমেছে। এতেই নামছে কনকনে শীত। হাড় কাঁপানো ঠান্ডায় জবুথবু জনজীবন। এ ছাড়া শীতজনিত নানা জটিলতায় রোগীদের ভিড় বাড়ছে হাসপাতালে।
রাজশাহী সিভিল সার্জন আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক জানান, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ জেলার সরকারি বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিকগুলোতে ঠান্ডাজনিত রোগীর সংখ্যা বেড়েছে।
তিনি আরও বলেন, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে শুক্রবার ২৪ ঘণ্টায় ৬২ জন রোগী ভর্তি হয়। আর শনিবার সকাল ৮টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত নতুন রোগী ভর্তি হয়েছে ৭২ জন। শিশু ওয়ার্ডে রোগীর চাপ বেড়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও বাড়তি ব্যবস্থা নিচ্ছে।
আবু সাইদ মোহাম্মদ ফারুক বলেন, “উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতেও রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। তবে ভর্তি রোগীর চেয়ে আউটডোর রোগীর সংখ্যা বেশি। তবে পরিস্থিতি খুব খারাপ, এমনটা না। এ সময়টায় রোগী কিছুটা বাড়ে। সে রকমভাবে ব্যবস্থাপনাও করা রয়েছে।
শেরপুর: সীমান্তবর্তী এ জেলায় জেঁকে বসেছে শীত। ঘন কুয়াশা আর কনকনে হিমেল হাওয়ায় জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা। উত্তরের হিম বায়ুর প্রভাবে হাড় কাঁপানো শীতে কাজ করতে পড়ছেন না স্বল্প আয়ের খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ।
গত এক সপ্তাহ ধরে জেলায় সূর্যের দেখা তেমন মিলছে না। দুপুরের পরে একটুা হালকা রোদ উঠলেও তাতে উত্তাপ নেই। দিনভর কুয়াশার সঙ্গে বয়ে চলছে হিমেল হাওয়া।
পর্যাপ্ত শীতবস্ত্রের অভাবে কষ্টে রয়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষ। এর মধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কম্বল বিতরণ করা হলেও তা পর্যাপ্ত নয় বলে শীতার্তরা জানান।
এদিকে শেরপুর শহরের ফুটপাতে গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে।
তীব্র শীতে বৃদ্ধ ও শিশুরা ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। শীতের কবল থেকে রেহাই পাচ্ছে না গবাদি পশুরাও। কনকনে শীতে চলমান বোরো আবাদে ধান লাগাতে পাড়ছেন না কৃষকরা। একই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষকের বীজতলা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক ড. সুকল্প দাস বলেন, শীতের কারণে বীজতলার ক্ষতির সম্ভাবনা থাকলেও ক্ষতি রোধে কৃষকদের এসব বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ঠান্ডার কারণে জমি তৈরি করে বোরো চারা রোপণ কিছুটা ধীর গতি হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, রোববার পর্যন্ত জেলায় বোরো চারা রোপণ করা হয়েছে ৪ হাজার ৮৭৬ হেক্টর জমিতে। এবার আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯১ হাজার ৯৪০ হেক্টর জমিতে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক আব্দুল্লাহ আল খায়রুম বলেন, “এ বছর শীতের তীব্রতা ক্রমেই বাড়ছে। সর্বশেষ শেরপুরে তাপমাত্রা ১২ ডিগ্রিতে নেমেছে। এতে অসচ্ছল মানুষের শীত জনিত কষ্ট বেড়েছে।
“এই শীতার্তদের শীত নিবারণের জন্য আমরা সরকার থেকে এ পর্যন্ত ৩১ হাজার ৬৫০ টি কম্বল বরাদ্দ পেয়েছি। এরমধ্য জেলার পাঁচটি উপজেলা প্রশাসনের মাধ্যমে বিতরণ কাজ চলমান রয়েছে।”