আগুনে কার্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র পুড়ে গেছে।
Published : 19 Nov 2024, 04:46 PM
টাঙ্গাইলে রিকশাচালকদের কাছ থেকে অতিরিক্ত চাঁদা আদায় ও ভর্তি ফি নেওয়ার প্রতিবাদে শ্রমিক কার্যালয়ে আগুন দেওয়া হয়েছে। এতে কয়েকজন শ্রমিক নেতা আহত হয়েছেন।
শহরের পার্কবাজার রোড এলাকায় মঙ্গলবার বেলা ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে বলে টাঙ্গাইল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) ভিক্টর ব্যানার্জি জানান।
টাঙ্গাইল ফায়ার সার্ভিসের উপ-পরিচালক এস এম হুমায়ুন কাণায়েল বলেন, “আধা ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু ততক্ষণে কার্যালয়ে থাকা তিনটি মোটরসাইকেল, কিছু আসবাবপত্র ও কাগজপত্র পুড়ে যায়।”
এ সময় অগ্নিদগ্ধ একজনকে উদ্ধার করে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানান তিনি।
আহতরা হলেন- জেলা রিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের সাবেক সহ-সভাপতি আব্দুস সামাদ, সাবেক মেম্বার সালাম ও রুপচান।
রিকশা শ্রমিক ইউনিয়নের বর্তমান সদস্য সিহাব বলেন, “সমিতিতে ভর্তি ফি দেবে না বলে মাইক বাজাচ্ছিল সাধারণ শ্রমিকরা। এ সময় তাদের মাইকটি জব্দ করা হয়। এই ক্ষোভে শ্রমিকরা অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটিয়েছে।”
শ্রমিক ও স্থানীয়রা জানান, রিকশা সমিতিতে ভর্তি ফি ১০০০ হাজার টাকা ছিল, সেটি বাড়িয়ে ১ হাজার ৫৬০ করা হয়। এছাড়া ১০ টাকা মাসিক চাঁদা করাসহ ২০০ টাকা জরিমানা নিয়ে ভর্তি না হওয়া শ্রমিককে ৫ থেকে সাত দিনের সময় দিতেন সমিতির নেতারা। যা নিয়ে সাধারণ শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সকালে সাধারণ শ্রমিকরা মাইক মেরে চাঁদা ও ভর্তি ফি না দেয়ার জন্য মাইকিং করতে থাকে।
নেতৃবৃন্দ মাইকম্যানকে আটক ও মারধর করে ছেড়ে দেন। খবর পেয়ে শ্রমিকরা অফিস কার্যালয়ে হামলা ও অগ্নিসংযোগ এবং নেতৃবৃন্দকে মারধর করেন।
শ্রমিকদের অভিযোগ, সম্প্রতি নামমাত্র আহ্বায়ক কমিটি করে চাঁদার টাকা লুটপাট করছে। শ্রমিকদের শুধু মৃত্যু বোনাস, বিয়ে ভাতা আর নামমাত্র চিকিৎসা ভাতা দেওয়া হয়। সমিতিতে মোট কত টাকা চাঁদা আর ভর্তি ফি জমা আছে সেটিও জানেন না। তারা জানতে চাইলে নেতারা দুর্ব্যবহার করে। এসব কারণে ক্ষুব্ধ শ্রমিক এ ঘটনাটি ঘটিয়েছে।
জেলা রিকশা-শ্রমিক সমিতির সাবেক সহ সভাপতি আব্দুস সামাদ বলেন, “আমাকে কার্যালয়ে বেঁধে রেখে অগ্নিসংযোগ করা হয়। আগুন বাড়তে থাকায় কোনো রকমে বাঁধন খুলে বের হই। তবে আগুনে আমার শরীরের বিভিন্ন অংশ পুড়ে গেছে।”
টাঙ্গাইল থানার পরিদর্শক (অপারেশন) ভিক্টর ব্যানার্জি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে অগ্নিদগ্ধ একজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
রিকশা শ্রমিক ফরহাদ বলেন, “আমাদের এই শ্রমিক সমিতির কোনো প্রয়োজন নেই। আমাদের শুধু পৌরসভার লাইসেন্স দিলেই রিকশা চালাইতে পারি।”