২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলে ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মীর নির্মম নির্যাতনে নিহত হন আবরার।
Published : 07 Oct 2024, 04:22 PM
ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের নির্মম নির্যাতনে হত্যার শিকার বুয়েটের শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে একাধিক কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
সোমবার সকাল সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গোল চত্বরে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদ। অন্যদিকে দুপুর সাড়ে ১২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ফটকের সামনে মৌন মিছিল ও সমাবেশ করেছে ছাত্রদল।
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শেরেবাংলা হলে ছাত্রলীগের একদল নেতা-কর্মীর নির্মম নির্যাতনে নিহত হন আবরার। বুয়েটের তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস প্রকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র ছিলেন তিনি।
আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদের ব্যানারে অনুষ্ঠিত সমাবেশে পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী হাবিবুর রহমান মাসরুর বলেন, “বৈষম্যের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আমরা নতুন দেশ পেয়েছি। এই নতুন দেশে আমরা আর কোনো গুণ্ডা-মাস্তান চাই না। যাদের হিংস্র হামলার শিকার হবে আবরারের মতো মেধাবী শিক্ষার্থী। আমরা আর কোনো আবরার ফাহাদের মৃত্যু দেখতে চাই না।”
এ সময় তিনি ভারতীয় আগ্রাসনের নিন্দা জানিয়ে বলেন, “জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে আমাদের মনে যে চেতনা জেগে উঠেছে সেটাকে ধরে রাখতে হবে যেন কোনো সরকার এসে আবার ভারতীয় আগ্রাসনকে প্রশ্রয় না দেয়।”
ছেলের কথা এখনও কানে বাজে: আবরারের মা
সমাজকর্ম বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আজাদ শিকদার বলেন, “৭ অক্টোবর বাংলাদেশের ইতিহাসে একটি কালো অধ্যায়। ভারতের আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে কথা বলার কারণে আমার ভাই আবরার ফাহাদকে শেখ হাসিনার গুণ্ডা বাহিনী নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করেছে। আবরার ফাহাদ আমাদের অনুপ্রেরণা। আগামী দিনগুলোতে ভারতের যেকোনো আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে আমাদেরকে সোচ্চার থাকতে হবে।”
এ সময় আরো বক্তব্য দেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ফয়সাল হোসেন, একই বর্ষের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী হাফিজুল ইসলাম।
অন্যদিকে ফটকের সামনে সমাবেশে ছাত্রদলের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার দপ্তর সম্পাদক মনির হোসেন বলেন, “রাষ্ট্র ব্যবস্থায় দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো এক প্রকার জিম্মি হয়ে পড়েছিল স্বৈরাচারী সরকারের মদদপুষ্ট ছাত্রলীগের কাছে। যেখানে ছাত্ররাজনীতির নামে প্রতিপক্ষকে হত্যা, নির্যাতন, নিপীড়ন ছিল নিত্য-নৈমত্তিক ব্যাপার।”
তিনি বলেন, “দেশের শীর্ষস্থানীয় বিদ্যাপীঠ বুয়েট তার ব্যতিক্রম ছিল না। ছাত্রলীগের অপরাজনীতির বলি হতে হয় বুয়েটের তড়িৎ প্রকৌশল বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে। এটা ছিল ছাত্রলীগের ১৫ বছরে ক্যাম্পাসগুলোতে শিক্ষার্থী নিপীড়নের একটি উদাহরণ মাত্র। শহীদ আবরার ফাহাদ ছিলেন আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে একটি জাগ্রত কণ্ঠস্বর।”
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী নাঈম সরকার, সফটওয়্যার বিভাগের রাহাত জামান, নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাজমুস সাকিব।