গৃহবধূ ধর্ষণ ও হত্যা মামলার অগ্রগতি না হওয়ার প্রতিবাদে পূজা কমিটি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
Published : 02 Oct 2022, 09:22 PM
গৃহবধূ ধর্ষণ ও হত্যা মামলার কোনো ‘অগ্রগতি না থাকার’ প্রতিবাদে দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার ভেড়ভেড়ী ইউনিয়নের টংগুয়া কুমারপাড়া সার্বজনীন পূজা মণ্ডপে এবার প্রতিমা দিয়ে দুর্গাপূজা বর্জন করা হয়েছে।
এলাকার ১৩০টি পরিবার ৩০ বছরের বেশি সময় ধরে এই মণ্ডপে দুর্গাপূজা করে আসছে। এবার তারা উৎসব বর্জন করে নিয়মরক্ষার ‘ঘটপূজা’ করছে এবং মণ্ডপের সামনে কালো পতাকা প্রদর্শন করেছে।
পূজার সময়ে এলাকাবাসী প্রতিদিন মন্দিরে জড়ো হয়ে হত্যাকাণ্ডের বিচার দাবি করছে।
সপ্তমি পূজার দিন রোববার মন্দিরে আসা এক ভক্ত বলেন, “মণ্ডপের সামনে এক মায়ের (নিহত গৃহবধূর মা) কান্না চলছে। সেখানে আমরা কিভাবে আনন্দ-উৎসব করবো। হত্যার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও বিচার দাবি করছি।”
কুমারপাড়া মণ্ডপের পূজা কমিটি জানায়, ২৯ জুলাই কুমারপাড়ার এক গৃহবধূ তার মেয়েকে নিয়ে বাবার বাড়ি থেকে স্বামীর বাড়ি যাচ্ছিলেন। পরে একটি ধান ক্ষেতের কাঁদা-পানি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে পুলিশ লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। মায়ের পাশে অচেতন অবস্থায় থাকা মেয়েকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় গৃহবধূর স্বামী বাদী হয়ে ৫ অগাস্ট খানসামা থানায় অজ্ঞাতনামা পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন। ঘটনার বিচারে দাবিতে অগাস্ট মাসের বিভিন্ন সময়ে এলাকাবাসী বিক্ষোভ মিছিলও করেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এই মামলায় কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।
গৃহবধূর বাবা বলেন, “ঘটনার দুই মাসেও মামলার কোনো অগ্রগতি দেখছি না। আসামি অজ্ঞাতনামা থাকলেও পরবর্তীতে আমরা সন্দেহজনক আসামির নামও পুলিশকে দিয়েছি। কিন্তু পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করেনি।“
গৃহবধূর মা মামলায় কেউ গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে বিচার দাবি করেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে খানসামার থানার ওসি চিত্ত রঞ্জন বলেন, “আমরা ঘটনার পর দ্রুততম সময়ে মামলা নিয়ে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করে তদন্ত শুরু করি। তদন্তের একপর্যায়ে পুলিশ সদর দপ্তরের নিদের্শে মামলাটি পিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পিবিআই এখন মামলার তদন্ত করছে।”
খানসামা উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি ধীমান চন্দ্র দাস বলেন, “গৃহবধূ ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনার পর ওই এলাকার মানুষ বিচার না পাওয়ায় হতাশ এবং বিক্ষুব্ধ। তাদের যৌক্তিক দাবির প্রতি আমাদের সমর্থন রয়েছে। এই ঘটনায় খানসামার হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষের মধ্যে অনেক শঙ্কা রয়েছে।”