ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় উপকূলজুড়ে প্রস্তুতি

এলাকাবাসীকে সচেতন করতে মাইকিং করার সিদ্ধান্ত হয়; কয়েকটি জেলায় সরকারি ও বেসরকারি কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

নিউজ ডেস্কবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 11 May 2023, 05:56 PM
Updated : 11 May 2023, 05:56 PM

ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ মোকাবেলায় উপকূলীয় জেলাগুলোতে প্রস্তুতির কথা জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসন।

জেলায় জেলায় প্রস্তুতি সভা করে দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এলাকাবাসীকে সচেতন করার জন্য মাইকিং করার সিদ্ধান্ত হয়। কয়েকটি জেলায় সরকারি ও বেসরকারি কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।

আবহাওয়া অফিস বলছে, সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় রোববার দুপুর নাগাদ বাংলাদেশের কক্সবাজার এবং মিয়ানমারের কিয়াউকপিউয়ের মধ্যবর্তী এলাকা দিয়ে উপকূল অতিক্রম করতে পারে।  

১২৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১২২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১২৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১২২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।

ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৫৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের সর্বোচ্চ একটানা গতিবেগ ছিল ৬২ কিলোমিটার; যা দমকা বা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৮৮ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছিল।

ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় ইতোমধ্যে জেলায় জেলায় প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে জেলা প্রতিনিধিদের পাঠানো সংবাদ।

সেন্টমার্টিনের সব ট্রলার সরানো হয়েছে

টেকনাফ উপজেলায় ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলার জন্য ৬৩টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হচ্ছে। উপজেলা পর্যায়ের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া উপকূলের মানুষকে ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে সচেতন করা হচ্ছে।

টেকনাফের ইউএনও মো. কামরুজ্জামন জানান, টেকনাফে মোখার তেমন প্রভাব পড়েনি এখনও। সেন্টমার্টিনসহ টেকনাফ উপজেলায় ৬৩টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ইতোমধ্যে সেন্টমার্টিনের জন্য শুকনো খাবার, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ও ওষুধ পর্যাপ্ত পরিমাণের পাঠানো হয়েছে।

“অবস্থার অবনতি হলে প্রয়োজনে উপকূলের মানুদের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, স্বেচ্ছাসেবী ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহযোগিতায় আশ্রয় কেন্দ্র নিয়ে যাওয়া হবে। এছাড়া বিপদ সংকেত জারি হলে তারা এলাকায় এলাকায় মাইকিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে।”

সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান বলেন, সেন্টমার্টিনে ১৩টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এখানকার আবহাওয়া এখনও ভালো রয়েছে। লোকজনকে সরিয়ে নেওয়ার পরিস্থিতি এখনও হয়নি।

“ইউনিয়ন পরিষদের একটি টিম, রেড ক্রিসেন্টের লোকজন ও দ্বীপে দায়িত্ব থাকা বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছেন। অবস্থা খারাপ হলে প্রয়োজনে দ্বীপের সকলকে আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হবে।”

সেন্টমাটিন বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম জানান বলেন, টেকনাফ-সেন্টমার্টিন রুটে জরুরি কাজে ব্যবহৃত কয়েকটি ট্রলার ছাড়া সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া সব ধরনের ট্রলার কূলে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। কয়েকটি ছাড়া মালিকপক্ষ সব ধরনের ট্রলার নিরাপদে রাখার জন্য টেকনাফে নিয়ে গেছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও সংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি বৃহস্পতিবার ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। উপকূলে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

নোয়াখালীতে সরকারি কর্মচারীদের ছুটি বাতিল

নোয়াখালীতেও সরকারি কর্মকচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৪৬৩টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র ও সিপিপির ৮ হাজার ৩৮০ জন স্বেচ্ছাসেবক। এছাড়া নগদ ৯ লক্ষ ৯৫ হাজার টাকা, ৩৮২ মেট্রিক টন চাল ও ২৪৩ বান্ডিল টেউ টিন প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার বিকালে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান জানান, দুর্যোগ মোকাবেলায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। দুর্যোগ আঘাত হানার আগেই লোকজনকে নিরাপদে সরিয়ে আনার লক্ষ্যে পর্যাপ্ত যানবাহন প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে পর্যান্ত আলো, বাতাস, বিশুদ্ধ পানি এবং নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

সার্বিক বিষয়ে তদারকির জন্য জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ স্থাপন করা হয়েছে।

দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির প্রস্তুতি সভা

বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কায়সার খশরু জানান, ঘূর্ণিঝড় মোখা মোকাবেলায় সরকারি কর্মকর্তাদের নিজ কর্মস্থলে উপস্থিত থাকার পাশাপাশি ২৪২টি আশ্রয়কেন্দ্র পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা, স্বেচ্ছাসেবক ও মেডিকেল টিম গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বাগেরহাটের ৪৪৬ ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত

বৃহস্পতিবার বাগেরহাটে দুর্যোগ মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি জরুরি সভা করেছে।

বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, সরকারের দেওয়া নিদের্শনা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে জরুরি সভা করা হয়েছে। জেলা ও উপজেলাগুলোতে নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে।

“দুর্যোগের সময় যাতে স্থানীয় লোকজন আশ্রয় নিতে পারে সেজন্য জেলার ৪৪৬টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ত্রাণ হিসেবে ৫২২ মেট্রিক টন চাল মজুদ রয়েছে এবং দশ লাখ টাকা বরাদ্দ আছে।”

তিনি জানান, সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের শুকনা খাবার প্রস্তুত রাখাসহ দুর্যোগকালীন ও দুর্যোগ পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

জেলায় মাঠে থাকা পাকা ধান কেটে ঘরে তোলার কাজ শেষ হয়েছে জানিয়ে জেলা প্রশাসক জানান, ঝড় মোকাবেলায় কোস্টগার্ড, নৌবাহিনী, রেডক্রিসেন্টসহ বিভিন্ন সেচ্ছাসেবী সংগঠন কাজ করবে।

এদিকে, ঝড়ের পূর্বাভাস পেয়ে জেলেরা নিরাপদ আশ্রয়ে ফিরতে শুরু করেছে।

বাগেরহাট শহরের প্রধান কেবি মাছ বাজার ঘাটে ট্রলার রেখে অবস্থান করছেন জেলেরা। মাঠে থাকা পাকা ধান ইতিমধ্যে কেটে ঘরে তুলেছে কৃষক। মোংলা সমুদ্র বন্দরে ২ নম্বর দূরবর্তী হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। মোংলা বন্দরে অবস্থান নেওয়া জাহাজগুলোতে পণ্য ওঠানামার কাজ স্বাভাবিকভাবে চলছে।

বাগেরহাট জেলা মৎস্যজীবী সমিতির সভাপতি শেখ ইদ্রিস আলী বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বভাস পেয়ে জেলেরা কূলে ফিরতে শুরু করেছে। আর যারা এখনও ফিরতে পারেনি তারা পাশের নদী-খালে নিরাপদে আশ্রয় নিয়েছে।

বরিশালে প্রস্তুত ৫৪১ আশ্রয়কেন্দ্র

বরিশাল জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার বিকালে ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় প্রস্তুতি সভা হয়েছে।

জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির আয়োজনে অনুষ্ঠিত ওই সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন।

সভায় তিনি জানান, মোখা মোকাবিলায় জেলায় ৫৪১টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে। জেলা প্রশাসনের ত্রাণ তহবিলে ৮৯৯ মেট্রিকটন চাল ও ৯ লাখ টাকা মজুদ রয়েছে।

জেলা প্রশাসন জানায়, সকল আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রাখার পাশাপাশি পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা রাখা হবে। পর্যাপ্ত শুকনো খাবার, পানি বিশুদ্ধকরণ ওষুধ, মোমবাতি, ম্যাচ, খাবার স্যালাইন, প্রাথমিক চিকিৎসার প্রয়োজনীয় ওষুধের ব্যবস্থা রাখা হবে।

আশ্রয়কেন্দ্র ছাড়াও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, ব্যক্তিগত বহুতল ভবন, অফিস ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হবে।

জেলায় মাইকিং ও আবহাওয়ার সর্বশেষ তথ্য প্রচার শুরু হয়েছে।

ভোলায় ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় তিন স্তরের প্রস্তুতি

ভোলায় ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় তিন স্তরের প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে জেলা প্রশসন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় জেলা প্রশাসক তৌফিক-ই-লাহী চৌধুরী এ কথা জানান।

তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় দুর্যোগের আগে, দুর্যোগকালীন ও দুর্যোগের পরবর্তীতেসহ তিন স্তরের প্রস্তুতি নিয়েছেন। জেলার সাত উপজেলায় ৭৪৬টি আশ্রয়কেন্দ্র ও ৬টি মুজিব কেল্লা প্রস্তুত করা করা হয়েছে।

এ ছাড়া, ৯৩টি মেডিকেল টিম, আটটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ খোলা হয়েছে এবং ১৩ হাজার ৬শ’ সিপিপি সদস্য ও প্রায় ৫ হাজার রেড ক্রিসেন্ট স্বেচ্ছসেবকে প্রস্তুত রয়েছে বলে তিনি জানান।

তিনি আরও জানান, ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় বর্তমানে জেলা প্রশাসনের কাছে নগদ ৮ লাখ টাকা, ৩৫০ মেট্রিক টন চাল, ১৬৪ বান্ডিল টিন ও গৃহ নির্মাণের জন্য ৪ লাখ ৯২ হাজার টাকা রয়েছে।

এ ছাড়াও গৃহ নির্মাণের জন্য ১৫ লাখ টাকা, ৫শ বান্ডিল টিন ও ৫ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবারের চাহিদা পাঠিয়েছেন বলে জেলা প্রশাসক জানান। 

বরগুনায় সরকারি কর্মচারীদের ছুটি বাতিল

বরগুনা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় প্রস্তুতি সভা হয়েছে।  

ঘূর্ণিঝড় মোকাবেলায় ৬৪২টি আশ্রয়কেন্দ্র, ৩টি মুজিব কেল্লা প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে সভায় জানানো হয়।

জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান জানান, ৪২টি ইউনিয়নে ৪৯টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। এ মেডিকেল টিমের প্রস্তুতি সম্পন্ন করার জন্য বরগুনার সিভিল সার্জনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

“এছাড়া সকল সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের ছুটি বাতিল ঘোষণা করা হয়েছে এবং স্ব স্ব কর্মস্থানে থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”

জেলা প্রশাসক জানান, বরগুনায় ৯ হাজার ৬১৫ জন স্বেচ্ছাসেবী প্রস্তুত রয়েছেন। মোখা মোকাবেলায় ৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা, ২৯৪ মেট্রিক টন চাল, ২০০০ প্যাকেট শুকনা খাবার, ২০০ বান্ডিল ঢেউটিন, গৃহ নির্মাণ বাবদ ৬ লাখ টাকা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

এদিকে মোখার প্রভাবে জেলার উপকূলে আড়াই কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে।

জেলার ৬ উপজেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২২টি পোল্ডারে ৮০৫ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ রয়েছে। এর মধ্যে দুর্বল বা ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধ রয়েছে ২ কিলোমিটার ৫৭০ মিটার।

বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে এসব বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশের আশঙ্কা রয়েছে। তবে মোকাবিলার জন্য জিও ব্যাগ ও সিনথেটিক ব্যাগ প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

পিরোজপুরে ২৬১ আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত  

জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রস্ততি সভা করেছে পিরোজপুর জেলা প্রশাসন।

সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহেদুর রহমান জানান, জেলার ৭টি উপজেলায় ২৬১টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এছড়াও ১৯৪টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রস্তত রাখার কাজ চলছে।

এসব সাইক্লোন শেল্টারে প্রায় ২ লাখ লোক আশ্রয় নিতে পারবে বলে তিনি জানান।

তিনি জানান, ৭টি উপজেলায় একটি করে ৭টি এবং জেলা সদরে একটি মোট ৮টি কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। ৭টি উপজেলায় ৬৩টি মেডিকেল টিম প্রস্তত রাখা হয়েছে। এছাড়াও দুর্যোগ পরবর্তী সময়ে জরুরি ভিত্তিতে সেবা দেওয়ার জন্য সিপিবির ১৭০০ সদস্য ও স্কাউট এর ৩৫০ জন সদস্য প্রস্তত রয়েছে।

পটুয়াখালীতে সরকারি-বেসরকারি কর্মচারীর ছুটি বাতিল  

পটুয়াখালী জেলা প্রশাসকের দরবার হলে বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরি সভা হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মো. শরিফুল ইসলাম জানান, মানুষের জানমাল রক্ষার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৭০৩টি আশ্রয় কেন্দ্র এবং ২৩টি মুজিব কেল্লা। মজুদ রাখা হয়েছে নগদ অর্থ ৮ লাখ ২২ হাজার ৫০০ টাকা, ৪০০ মেট্রিক টন চাল, ১৪৬ বান্ডিল ঢেউটিন এবং গৃহ মঞ্জুরি বাবদ অর্থ ৪ লাখ ৩৮ হাজার টাকা। এছাড়াও ওষুধ, খাবার স্যালাইন, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেটও মজুদ রাখা হয়েছে। দুর্যোগকালীন ও দুর্যোগউত্তর পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৮ হাজার ৭০০ স্বেচ্ছাসেবক।

“জেলা সদরে এবং সকল উপজেলায় কন্টোল রুম চালু করা হয় এবং সরকারি-বেসরকারি সকল কর্মকর্তা-কর্মচারিদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে।”

এদিকে মোখার প্রভাবে পটুয়াখালীর উপকূলজুড়ে কিছুটা গুমোট আবহাওয়া বিরাজ করছে। কোথায়ও ঝড় কিংবা বৃষ্টি নেই, বরং তীব্র তাপদাহে হাঁসফাঁস করছে উপকূলবাসী।

সরকারি কর্মচারীদের ছুটি বাতিল ঝালকাঠিতে

ঘুর্ণিঝড় মোকাবেলায় ঝালকাঠিতে নিয়ন্ত্রণকক্ষ খোলার পাশাপশি প্রাথমিকভাবে ৬২টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত করেছে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসন।  বৃহস্পতিবার বিকালে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির এক সভায় এ তথ্য জানানো হয়।

সভায় জেলা প্রশাসক ফারাহ গুল নিঝুম জানান, জেলা প্রশাসন সব ধরনের নিয়েছে। সবকটি উপজেলায় কন্ট্রোল রুম খোলা হয়েছে। জেলার উপকূলীয় এলাকার সকল সাইক্লোন শেল্টার ও বিদ্যালয়গুলো প্রস্তুত রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে গঠন করা হয়েছে ৩৮টি মেডিকেল টিম। প্রাথমিকভাবে ১৬০ জন স্বেচ্ছাসেবককে প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

“সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরে কর্মস্থলে থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। এছাড়া প্রয়োজনীয় নগদ অর্থ, চাল, শুকনো খাবার ও টেউটিন মজুদ রাখা হয়েছে।”