শনি ও রোববার শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার মরিয়মনগর সাধু জর্জের ধর্মপল্লীতে ‘ওয়ানগালা’ উৎসব উদযাপিত হয়।
Published : 25 Nov 2024, 12:49 AM
নিজেদের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও পরম্পরাকে তুলে ধরে শেরপুরে নৃ-গোষ্ঠী গারো সম্প্রদায়ের মানুষজন তাদের ‘ওয়ানগালা’ উৎসব মেতে ওঠে। দুই দিনব্যাপী এ উৎসবে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে গারো সম্প্রদায়ের লোকজন অংশ নেন।
শনি ও রোববার ঝিনাইগাতী উপজেলার মরিয়মনগর সাধু জর্জের ধর্মপল্লীতে ‘ওয়ানগালা’ উৎসব উদযাপিত হয়। গারাগানজিং, কতুচ, রুগা, মমিন, বাবিল, দোয়াল, মাতচি, মিগাম, চিবক, আচদক ও আরেং- এই ১২টি গোত্রের গারো সম্প্রদায়ের বিপুল সংখ্যক মানুষ উৎসবে অংশ নেন।
তারা দেশ ও জাতির মঙ্গল কামনা করে বিশেষ প্রার্থনায় অংশ নেন।
মরিয়মনগর সাধু জর্জের ধর্মপল্লীর আওতায় শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী ও নালিতবাড়ী উপজেলা এবং পাশের জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার গারো সমাজের ৪৭টি গ্রাম রয়েছে। ওইসব গ্রামের প্রায় ২২ হাজার খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী গারো সম্প্রদায়ের লোকজনের বসবাস।
রোববার মরিয়মনগর সাধু জর্জের ধর্মপল্লীতে ‘ওয়ানগালা’ উৎসবের ধর্মীয় ও সামাজিক আনুষ্ঠানিকতা হয়েছে। আগের দিন শনিবার ময়িমনগর ধর্মপল্লী উচ্চ বিদ্যালয় চত্বরে দিনব্যাপী উৎসব ঘিরে গারোদের ঐতিহ্যবাহী পোশাক ও শিশুদের নানা রকমের খেলনা নিয়ে এক জমজমাট মেলা বসে।
মেলায় গারোদের ঐতিহ্যবাহী খাবারের রান্নার প্রতিযোগিতা ও প্রদর্শনী হয়। পরে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে নিজস্ব ভাষায় গান ও নৃত্য পরিবেশন করেন গারো শিল্পীরা। দিনব্যাপী অনুষ্ঠান শেষে র্যাফেল ড্র ও বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়।
ঝিনাইগাতী ট্রাইবাল ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের (টিডব্লিওএ) সাধারণ সম্পাদক অসীম ম্রং বলেন, “গারো জনগোষ্ঠীর আধ্যাত্মিক মূল্যবোধকে সমৃদ্ধ এবং ঐতিহ্যবাহী গারো সংস্কৃতি চর্চায় নতুন প্রজন্মকে উৎসাহিত করা হয় এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে। এখান থেকে বর্তমান প্রজন্ম অনেক কিছু বুঝতে ও শিখতে পারে। ওয়ানগালা উৎসব গারো সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসবও বটে।”
মরিয়মনগর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক অঞ্জন আরেং বলেন, “ওয়ানগালা উৎসব আয়োজনের মূল লক্ষ্য হল লুপ্তপ্রায় গারো জনগোষ্ঠীর ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির চর্চায় উৎসাহিত করা এবং ঐতিহ্যবাহী এই সংস্কৃতিকে নতুন প্রজন্ম ও বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর কাছে তুলে ধরা। যাতে আমাদের নতুন প্রজন্ম এই সংস্কৃতি চর্চা ও সংরক্ষণ করতে পারে।”