২০১১ সালের ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় নুরুল হককে হত্যা করা হয়।
Published : 26 Jun 2024, 03:34 PM
কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় স্থানীয় মাতবর নুরুল হক হত্যা মামলায় ১৩ বছর পর ছয়জনের প্রাণদণ্ড দিয়েছে আদালত। একইসঙ্গে এই মামলায় আরও ১০ জনকে যাবজ্জীবন দেওয়া হয়েছে।
কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ চতুর্থ আদালতের বিচারক জাহঙ্গীর আলম বুধবার দুপুরে ১২ আসামির উপস্থিতিতে রায় ঘোষণা করেন বলে জানান আদালতের এপিপি মোহাম্মদ জাকির হোসেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার ছোট ধুশিয়া গ্রামের মৃত আবদুল আজিজের ছেলে মো. মাছুম, মৃত আব্দুল লতিফের ছেলে তাজুল ইসলাম, আবদুল কাশেমের ছেলে মো. মোস্তফা, মনু মিয়ার ছেলে মো. কাইয়ুম, আবদুল ছাত্তারের ছেলে মো. কাইয়ুম এবং মৃত আব্দুল মালেকের ছেলে মো. তবদুল হোসেন।
এদের মধ্যে কাইয়ুম ও তবদুল পলাতক আছেন।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- ছোট ধুশিয়া গ্রামের মৃত ওয়াব আলীর ছেলে মো. নান্নু মিয়া, মৃত আলী মিয়ার ছেলে আবদুল মতিন মিয়া, মৃত আবদুল খালেকের ছেলে সাইদুল ইসলাম, সিদ্দিকুর রহমানের ছেলে বাবুল মিয়া, মৃত আবদুল লতিফের ছেলে সফিকুল ইসলাম, মৃত নায়েব আলীর ছেলে মো. মোসলেম মিয়া, নান্নু মিয়ার ছেলে মো. সফিকুল ইসলাম, মৃত আবদুল বাতেনের ছেলে মো. হেলাল মিয়া, সরু মিয়ার ছেলে মো. আউয়াল মিয়া এবং মৃত আবদুল মতিন মিয়ার ছেলে বিল্লাল হোসেন।
রায় ঘোষণার সময় বিল্লাল ও সাইদুল পলাতক ছিলেন।
মামলার বরাতে আইনজীবী বলেন, ছোট ধুশিয়া গ্রামের বাসিন্দা নুরুল হক বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকতেন এবং বিচার-সালিশ করতেন। স্থানীয় ফরিদ মিয়ার সঙ্গে আসামি মাছুম মিয়ার বসতবাড়ির জায়গা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে সালিশ বৈঠক হলে আসামি মো. মাছুম মিয়ার বিরুদ্ধে রায় দেন নুরুল হক।
এতে আসামিরা ক্ষিপ্ত হয়। ২০১১ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি নুরুল হক কুমিল্লা থেকে বাড়িতে যাচ্ছিলেন। পথে ছোট ধুশিয়া তবদুল মিয়ার বসতঘরের দক্ষিণ পাশে রাস্তার উপর আসামিরা তাকে কুপিয়ে হত্যা করে।
পরদিন নিহতের ছেলে মো. শরীফুল ইসলাম বাদী হয়ে ব্রাহ্মণপাড়া থানায় ২২ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাত আরও ১০ থেকে ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
আইনজীবী বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা ২০ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন। রায়ে বিচারক ছয়জনকে মৃত্যুদণ্ড ও ১০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেক আসামিকে ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন।
মামলা চলাকালে আসামি মো. ফুল মিয়া ও মো. সেলিম মারা যাওয়ায় তাদেরকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মো. মনিরুল ইসলাম ও হিরণ মিয়াকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে জাকির হোসেন বলেন, “আশা করছি, উচ্চ আদালত এই রায় বহাল রেখে দ্রুত কার্যকর করবেন।”
মামলার বাদী নুরুল হকের ছেলে শরিফুল ইসলাম বলেন, “দীর্ঘ ১৩ বছর পর এই রায়ে আমি সন্তুষ্ট। দ্রুত আসামিদের ফাঁসি কার্যকরের দাবি জানাচ্ছি।”