একই সঙ্গে বিচারক ২৭ এপ্রিল মামলার পরর্বতী শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
Published : 23 Apr 2025, 02:42 PM
মাগুরার আলোচিত আট বছরের শিশু ধর্ষণ ও হত্যা মামলায় চার আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছে আদালত।
বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মাগুরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বিচারক এম জাহিদ হাসান চার আসামির উপস্থিতিতে এ মামলার অভিযোগ গঠনের শুনানি শুরু করেন।
একই সঙ্গে বিচারক ২৭ এপ্রিল মামলার পরর্বতী শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
এ সময় আদালতে উপস্থিত ছিলেন মাগুরা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) মনিরুল ইসলাম মুকুলসহ অন্যান্য আইনজীবীরা।
আর আগে সকাল ১০টার দিকে এ মামলার চার আসামি শিশুটির বোনের স্বামী সজিব শেখ, শ্বশুর হিটু শেখ, শাশুড়ি রোকেয়া বেগম এবং দেবর রাতুল শেখকে আদালতে আনা হয়।
মামলাটিকে জনগুরুত্বপূর্ণ বিবেচনা করে রাষ্ট্রপক্ষকে আইনি সহায়তা দেওয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কৌঁসুলি দলের বিশেষ উপদেষ্টা (স্পেশাল প্রসিকিউটোরিয়াল অ্যাডভাইজার) আইনজীবী এহসানুল হক সমাজীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ গঠন শুনাতিতে তিনিও অংশ নেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, মামলায় শিশুটির বোনরে শ্বশুর হিটু শেখকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯/২ ধারায় (ধর্ষণের ফলে মৃত্যুর অপরাধ), বোনের স্বামী ও দেবরকে দণ্ডবিধির ৫০৬ ধারায় (ভয়ভীতি প্রদর্শন) এবং বোনের শাশুড়ির বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ২০১ ধারায় (অপরাধের আলামত নষ্ট) অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।
শুনানি শেষে এহসানুল হক সমাজী সাংবাদিকদের বলেন, মামলার অভিযোগপত্র, মূল আসামির জবানবন্দিসহ অন্যান্য নথির উপর ভিত্তি করে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আবেদন করলে আদালত তা মঞ্জুর করে।
তিনি বলেন, এই মামলায় ন্যায়বিচার নিশ্চিতের স্বার্থে বিচারক আসামিদের অবহিত করেন, তারা চাইলে নিজেদের পক্ষে আইনজীবী নিয়োগ করতে পারবেন। আইনজীবী নিয়োগ করতে হলে কারাবিধি অনুযায়ী আবেদন করতে হবে।
সমাজী সাংবাদিকদের বলেন, এ ছাড়া আসামিরা ওই ঘটনার দায় স্বীকার করছেন কিনা বিচারক জানতে চাইলে তারা অপরাধে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করেন।
শ্রীপুর উপজেলার আট বছরের শিশুটি ১ মার্চ মাগুরা শহরতলীর নিজনান্দুয়ালী গ্রামে বড় বোনের বাড়ি বেড়াতে আসে। সেখানে গত ৬ মার্চ সে ধর্ষণের শিকার হয়। প্রথমে তাকে মাগুরা ২৫০ শয্যার হাসপাতাল, পরে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল হয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা পাঠানো হয়।
সবশেষ চিকিৎসারত অবস্থায় ১৩ মার্চ ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) শিশুটি মারা যায়।
এ ঘটনায় শিশুটির মা মাগুরা সদর থানায় মেয়ের শ্বশুর হিটু শেখ, জামাই সজীব শেখ, তার ভাই রাতুল শেখ ও তাদের মা রোকেয়া বেগমের নামে মামলা করেন। পুলিশ চার আসামিকে গ্রেপ্তার করে।
১৩ এপ্রিল আলোচিত এই মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন। আসামি রোকেয়া বেগমকে তথ্য গোপন, সজিব শেখ ও তার ভাই রাতুল শেখের বিরুদ্ধে ভয়ভীতি প্রদর্শন অভিযোগ আনা হয়েছে।
আরও পড়ুন...
মাগুরার শিশু ধর্ষণ-হত্যা: ২৩ এপ্রিল অভিযোগ গঠনের শুনানি
মাগুরার সেই শিশু ধর্ষণ: হিটু শেখের ডিএনএ প্রতিবেদন, 'সব পজিটিভ'
মাগুরার সেই শিশুটির পরিবারে নেই ঈদের আনন্দ
মাগুরার সেই শিশুটির বোনকে আর শ্বশুরবাড়ি পাঠাবে না পরিবার
মাগুরায় শিশুটির বাড়িতে জামায়াতের আমির, পাকা বাড়ি করে দেওয়ার
মাগুরায় শিশুটির বাড়িতে বিএনপি নেতারা, দিলেন সহযোগিতার আশ্বাস