বান্দরবানের লামায় চুরির অপবাদে এক শিশু ও তার বাবা-মাকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে এক ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার তারা বান্দরবান সদর হাসপাতালে ভর্তি হলে খবরটি ছড়িয়ে পড়ে।
‘নির্যাতনের শিকার’ লামা উপজেলার আজিজনগর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আশরাফ পাড়ার এ তিন বাসিন্দা হলেন ৩০ বছর বয়সী এক নারী, তার স্বামী এবং তাদের ৯ বছর বয়সী ছেলে।
আজিজনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন কোম্পানীর বিরুদ্ধে এ অভিযোগ করেন ওই নারীর স্বামী।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, শিশুটিকে বাসায় কাজ করার পাশাপাশি স্কুলে পড়ালেখা করানোর কথা বলে নিয়ে যান চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন কোম্পানী। ২৫ মার্চ চেয়ারম্যানের বাসায় স্বর্ণ চুরির অভিযোগে ছেলেটিকে আটকে রেখে তার পরিবারকে খবর দেওয়া হয়। তার মা ও বাবা ছেলেকে নিতে চেয়ারম্যানের বাসায় গেলে চেয়ারম্যান শিশুটিকে আটকে রাখেন।
পরে ৯৯৯ এ ফোন দিলে পুলিশ শিশুটিকে চেয়ারম্যানের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে।
এ নিয়ে সোমবার রাতে স্থানীয়রা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ মিছিলও করে।
শিশুটির বাবা বান্দরবান সদর হাসপাতালে সাংবাদিকদের বলেন, স্কুলে পড়ানোর কথা বলে ছেলেকে চেয়ারম্যানের বাসায় কাজ করার জন্য নিয়ে যান। কিন্তু তাকে কখনোই স্কুলে যেতে দেননি।
“২৫ মার্চ চেয়ারম্যানের স্ত্রী ফোন দিয়ে বলে ছেলে স্বর্ণ চুরি করেছে; তাই তাকে আটকে রাখা হয়েছে এবং ৩ লাখ টাকা দিয়ে ছেলেকে নিয়ে যেতে বলে। ছেলেকে নিতে তাদের বাড়িতে গেলে চেয়ারম্যান ও তার ছেলে আমাকে, আমার স্ত্রী এবং ছেলেকে মারধর করে।
“এক পর্যায়ে ছেলেকে আটককে রেখে তিন লাখ টাকা বা জায়গার কাগজ দিয়ে ছেলেকে নিয়ে যেতে বলেন। পরে উপায় না দেখে ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিলে পুলিশ চেয়ারম্যানের বাড়ি থেকে ছেলেকে উদ্ধার করে।”
বাসায় আসার পরে ছেলে ও তার মার নাক ও মুখ দিয়ে রক্ত ঝরতে থাকলে তাদের মঙ্গলবার সকালে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
এ বিষয়ে আজিজনগর ইউপি চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন কোম্পানী ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, উদ্দেশ্যমূলকভাবে একটি কুচক্রী মহল তার বিরুদ্ধে এ ঘটনা ঘটিয়েছে।
লামা থানার ওসি শহীদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, ৯৯৯ এ অভিযোগের ভিত্তিতে আজিজনগর চেয়ারম্যানের বাড়ি থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করে চেয়ারম্যানসহ চারজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।