জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যায়ে মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়ন ও গাছপালা কেটে অপরিকল্পিত উন্নয়ন বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ব্যানারে আয়োজিত মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মুরাদ চত্বর থেকে শুরু হয়ে সমাজবিজ্ঞান অনুষদ, জুবায়ের স্মরণী, বঙ্গবন্ধু হল ও বটতলা ঘুরে এসে নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়।
পরে সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।
সমাবেশে আইন ও বিচার বিভাগের শিক্ষার্থী অনন্যা ফারিয়া বলেন, “এই ক্যাম্পাসের মূল পরিচয় বনভূমি ও জীববৈচিত্র। মাস্টারপ্ল্যান ছাড়া একের পর এক ভবন নির্মাণ করে ক্যাম্পাসের বনভূমি ও জীববৈচিত্র সংকুচিত করা হচ্ছে। সবশেষ সুন্দরবন নামে পরিচিত স্থানটিতে হাত দেওয়া হয়েছে। এভাবে চলতে থাকলে ক্যাম্পাসের জীববৈচিত্র ধ্বংস হয়ে যাবে। উন্নয়ন করতে চাইলে তা যেন পরিকল্পিত হয়।”
বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থী ও চলচ্চিত্র আন্দোলনের সহসাধারণ সম্পাদক সুদীপ্ত দে বলেন, “নতুন প্রশাসনিক ভবনটিও মাস্টারপ্ল্যান ছাড়াই করা হয়েছে। যার ফলে এখন বর্তমান প্রশাসন বলছে, এই ভবনটি তাদের জন্য পর্যাপ্ত নয়। এর সম্প্রসারণের জন্য নতুন ভবন প্রয়োজন। এভাবে ক্যাম্পাসকে মরুকরণের চেষ্টা করা হচ্ছে।”
এ সময় ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের সাংস্কৃতিক সম্পাদক আশফার রহমান নবীন বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো সঠিক মাস্টারপ্ল্যান না থাকার কারণে আজ নতুন কলা ভবনের সামনের রাস্তা বন্ধ। সেখানে গাড়ি চললে শিক্ষার্থীরা ক্লাস করতে পারে না। আর রাস্তা বন্ধ থাকলে অনেক দূর ঘুরে যেতে হয়। দ্বিতীয় প্রশাসনিক ভবনের নকশা গোপন করে নতুন প্রশাসনিক ভবনের জন্য বরাদ্দ এনেছে। এর কারণ বর্তমান ভবন পূর্ণাঙ্গ করতে লাগবে মাত্র ৪০ কোটি টাকা। আর নতুন ভবনের জন্য ১৩৭ কোটি বরাদ্দ যা খরচ করতে পারলে তাদের পকেট ভরবে।“
“আইবিএ-জেইউ ভবনের জন্য আগেও গাছ কাটা হয়েছে। এখন আবার আরেকটি জায়গা বেছে নিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনে যখন যে এসেছে সেই পরিকল্পিত উন্নয়নের নামে কথার ও শব্দের ফাঁকি দিয়ে বারবার আমাদের ধোঁকা দিয়েছে।"
বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নূরে তামিমের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী তাপসী দে প্রাপ্তী।
সম্প্রতি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের 'সুন্দরবন' নামে পরিচিত এলাকায় নতুন করে ইন্সটিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ভবন করার উদ্যোগ নেয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ভবন নির্মাণ করতে পাঁচ শতাধিক গাছ কাটতে হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। এসব গাছ না কেটে বিকল্প স্থানে ভবন নির্মাণের দাবি তুলছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।