Published : 27 Oct 2024, 09:35 PM
কালীপূজা উপলক্ষে মাদারীপুরের কালকিনিতে ২২০ বছরের পুরনো কুণ্ডুবাড়ি মেলার আয়োজন নিয়ে আপাতত অনিশ্চয়তা কেটেছে; মন্দির কর্তৃপক্ষকে তিন দিন মেলা করার অনুমতি দিয়েছে জেলা প্রশাসন।
রোববার বিকালে এ অনুমতি দেওয়ার কথা জানিয়ে জেলার ডিসি ইয়াসমিন আক্তার বলেন, কালকিনি উপজেলার ভুরঘাটা এলাকার কুণ্ডুবাড়িতে কালীপূজা উপলক্ষে এ মেলার আয়োজন হয়। আগে কালকিনি পৌরসভা থেকে ইজারার মাধ্যমে মেলার আয়োজন হত। এবার ইজারা প্রথা বাতিল করা হয়েছে।
এবার মেলার আয়োজন করবে মন্দির কর্তৃপক্ষ।৩১ অক্টোবর থেকে ৩ দিন মেলা করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে।
মেলায় যেন আইনশৃঙ্খলার অবনতি না ঘটে, তা বিবেচনা করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ‘পর্যাপ্ত সংখ্যক সদস্য’ মোতায়েন করার কথা বলেছেন জেলা প্রশাসক।
তিনি বলেন, “দর্শনার্থী ও ক্রেতাদের যাতে কোনো ধরনের অসুবিধা না হয়। এমনকি যারা এখানে দোকানি থাকবেন, তারাও যাতে কোনো ধরনের হয়রানির শিকার না হন, সব দিকে আমরা নজর রাখব।”
কালীপূজাকে কেন্দ্র করে কুণ্ডুবাড়ির এই ঐতিহ্যবাহী মেলা আগে হত সাত দিন ধরে।
গত ১৬ অক্টোবর কালকিনির ‘স্থানীয় আলেম সমাজের’ লিখিত আপত্তির মুখে মেলা বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয় উপজেলা প্রশাসন।
এবার মেলা অনুষ্ঠানের জন্য কালকিনি পৌরসভা থেকে আকবর হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে ইজারাও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় ২১ জন আলেম ও ছাত্র প্রতিনিধি মেলা ঘিরে ‘আইনশঙ্খলার অবনতিসহ বিভিন্ন সমস্যা কথা তুলে গত ১৬ অক্টোবর মেলা বন্ধ করার আবেদন করে।
তাদের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে কালকিনি পৌরসভা ও উপজেলা প্রশাসন এবার মেলা আয়োজন বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু পরে মেলাটি যেহেতু শত বছরের ঐতিহ্যবাহী হিসেবে এই এলাকার মানুষের কাছে প্রতিষ্ঠিত, তাই মন্দির কর্তৃপক্ষ ও আলেম সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনা হয়। তাতে ডিসির নির্দেশে ৩ দিনের জন্য মন্দির কমিটির কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে মেলা আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়।
কুণ্ডুবাড়ি কালীমন্দির ব্যবস্থাপনা কমিটির অন্যতম সদস্য কালীপদ কুণ্ডুর ছেলে স্বপন কুণ্ডু বলেন, প্রতি বছর কালীপূজার সময় সাত দিনব্যাপী এই মেলা হয়। ক্রেতাদের ভিড়ে কোনো কোনো বছর তা ১৫ দিন পর্যন্ত চলে। ১৮০৫ সালে শ্রী শ্রী কালী মায়ের মন্দির প্রতিষ্ঠা করা হয়।
“মন্দির প্রতিষ্ঠার সময় থেকে দীপাবলী ও কালিপূজা উপলক্ষে দীননাথ কুণ্ডু ও মহেশ কুণ্ডু এই মন্দিরকে ঘিরে এ মেলার শুরু করেন। এরই ধারাবাহিকতায় আমাদের কুণ্ডুদের বংশীয় নামানুসারে কুণ্ডুবাড়ির মেলা নামকরণ হয়।”
স্বপন কুণ্ডু বলেন, “জেলা প্রশাসক সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে তিনদিনের জন্য মেলা আয়োজনে আমাদের অনুমতি দিয়েছেন। আমরা এখন কালীপূজার পাশাপাশি মেলা আয়োজনের প্রস্তুতি নেব।”
কুণ্ডুবাড়ির কালিপূজা ও মেলায় যেন পর্যাপ্ত আইনশঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়, সেদিকে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন মাদারীপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি প্রাণতোষ মণ্ডল।
আরও পড়ুন: