ফেনীতে বিএনপির জনসভার আগে নেতাকর্মী ও বাড়িঘরে হামলা

আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হামলার এই অভিযোগ করা হলেও দলটির পক্ষ থেকে তা অস্বীকার করা হয়েছে।

নাজমুল হক শামীম, ফেনী প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 18 May 2023, 07:37 PM
Updated : 18 May 2023, 07:37 PM

ফেনীতে বিএনপির জনসভাকে কেন্দ্র করে জেলার বিভিন্ন স্থানে দলটির অন্তত ৩০ নেতাকর্মীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করার অভিযোগ উঠেছে। বাড়িঘরে হামলারও অভিযোগ করছেন দলের নেতারা।  

বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন ইউনিয়ন ও পৌরসভায় এসব হামলার ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করেন জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল।

আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে হামলার এই অভিযোগ করা হলেও দলটির পক্ষ থেকে তা অস্বীকার করা হয়েছে।

শুক্রবার শহরের ইসলামপুর রোডে দলীয় কার্যালয়ের সামনে জনসভা আহ্বান করেছে দলটি।  

হামলায় পরশুরাম উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক শাকিল, সদর উপজেলা যুবদলের যুগ্ন আহবায়ক ইয়াছির আরাফাত, মোটবি ইউনিয়ন শ্রমিক দলের সভাপতি বাদল, যুবদল নেতা ইয়াসিন, মাসুম, ছনুয়া ইউনিয়ন ছাত্রদল নেতা রিদয় ও ওমর, ফেনী শহরের নাজির রোড়ের মো. রহিম (৩৪), বারাহীপুরের আবুল হোসেন (৩২), বারাহীপুরের ইয়াছিন আরাফাত (২৮), সদর উপজেলার লক্ষ্মীয়ারার আমিনুল হক আরিফ (২৫), পাঁচগাছিয়ার জাফর উল্লাহ বাদল (৪০) আহত হন বলে আলাল জানান।

ফেনী পৌর বিএনপির সদস্য সচিব মেজবাহ উদ্দিন ভুইয়া বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে শুক্রবার [১৯ মে] বিকালে বিএনপির জনসভার আয়োজন করা হয়েছে। সেই জনসভাকে কেন্দ্র করে বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের উপর হামলা এবং তাদের বাড়ি-ঘরে ভাংচুর করা হচ্ছে।

জেলা বিএনপির আহবায়ক শেখ ফরিদ বাহার বলেন, “পুরো জেলাব্যাপী ছাত্রলীগ ও যুবলীগ আমাদের দলীয় নেতাকর্মীদের উপর হামলা চালাচ্ছে। বিভিন্ন ইউনিয়নে দুই শতাধিক বাড়ি-ঘরে হামলা ও লুটপাট হয়েছে। দলের অন্তত ৩০ নেতাকর্মীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করা হয়েছে।”

সব প্রতিকূলতার মধ্যেও শুক্রবার বিএনপির জনসমাবেশ করা হবে বলে জানান তিনি।

ফেনী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক (ইএমও) এএসএম সোহরাব আল হাসাইন তানভির জানান, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত  ৮ জন আহত রোগী হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছে। গুরুতর আহত একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। 

ফেনী জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক শহিদুল্লাহ খন্দকার বলেন, “বিএনপি তাদের জনসভা করবে এতে আওয়ামী লীগ কোনো হস্তক্ষেপ করবে না। যদি কোনো হামলার ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে সেটি তাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল। বিএনপিকে বাধা দেওয়ার মতো আমাদের দলীয় কোনো সিদ্ধান্ত নেই।”

ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার দীন মোহাম্মদ জানান, “পুলিশ বিএনপি'র জনসভার বিষয়ে অবগত আছে। তবে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো হামলা বা আহতের অভিযোগ পাইনি।”

জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল বলেন, ১০ দফা দাবিতে কেন্দ্রীয় বিএনপির কর্মসূচি হিসেবে শুক্রবারের জনসভায় তারা ৫০ হাজার নেতা-কর্মীর সমাগম করার প্রস্তুতি ছিল। ফেনীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে জনসভা করতে চাইলেও প্রশাসনের অনুমতি মেলেনি। বাধ্য হয়ে ইসলামপুর রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ের সামনে জনসভা করবে।

জনসভায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান প্রধান অতিথি হিসেব উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন, “হামলা-মামলা দিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের দমিয়ে রাখা যাবে না। যেকোনো মূল্যে শুক্রবার জনসভা করবে।”