Published : 31 Mar 2025, 01:55 PM
দেশের বৃহত্তম ঈদগাহ কিশোরগঞ্জের শোলাকিয়া ময়দানে ঈদের জামাতে কয়েক লাখ মানুষ নামাজ আদায় করেছেন।
সোমবার সকাল ১০টায় এ ময়দানে ১৯৮তম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়। এবার ঈদ জামাত পরিচালনা করেন স্থানীয় বড় বাজার মসজিদের খতিব মাওলানা আবুল খায়ের মো. সাইফুল্লাহ।
শোলাকিয়ার রেওয়াজ অনুযায়ী জামাত শুরুর আগে তিনবার বন্দুকের গুলি ফুটিয়ে নামাজের প্রস্তুতি নিতে সংকেত দেওয়া হয়। পরে নামাজ ও খুতবা শেষে বাংলাদেশসহ মুসলিম উম্মাহর কল্যাণ কামনা করে মোনাজাত করা হয়।
নামাজ শেষে শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এরশাদ মিয়া বলেন, “স্মরণকালের বৃহত্তম এবারের ঈদ জামাতে আনুমানিক ৬ লাখ মানুষ নামাজ আদায় করেছেন।”
ঈদ জামাতে অংশ নিতে দূর-দূরান্ত থেকে আসা মানুষের জন্য ‘শোলাকিয়া স্পেশাল’ নামে দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। যার একটি ঈদের দিন সকাল পৌনে ৬টায় ময়মনসিংহ থেকে এবং আরেকটি ট্রেন সকাল ৬টায় ভৈরব থেকে ছেড়ে আসে। ঈদ জামাতে অংশ নিতে আসা লোকজনকে দুপুর ১২টায় পুনরায় নিয়ে ফিরে যায় ট্রেন দুটি।
কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থার অংশ হিসেবে টুপি, মাস্ক ও জায়নামাজ ছাড়া সবকিছু বহন নিষিদ্ধ ও শহরে যান চলাচল বন্ধ রাখা হয়। আগতদের জন্য মাঠে বিপুল স্বেচ্ছাসেবক এবং কয়েকটি চিকিৎসক দল দায়িত্ব পালন করে।
২০১৬ সালে শোলাকিয়ায় জঙ্গি হামলার কথা মাথায় রেখে এবার চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। নামাজের সময় পাঁচ প্লাটুন বিজিবি, বিপুলসংখ্যক পুলিশ, র্যাব ও আনসার সদস্যের সমন্বয়ে নিরাপত্তা বলয়ের পাশাপাশি মাঠে সাদা পোশাকে নজরদারি করেছে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন।
এছাড়া ময়দানে প্রবেশপথগুলোতে ছিল সিসি ক্যামেরা ও ছয়টি ওয়াচ টাওয়ার। এছাড়া আকাশে উড়েছে পুলিশের চারটি ড্রোন ক্যামেরা। ছয়টি ভিডিও ক্যামেরা দিয়ে মাঠ পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে।
মসনদ-ই-আলা ঈশা খাঁর ষষ্ঠ বংশধর দেওয়ান হয়বত খান বাহাদুর কিশোরগঞ্জের জমিদারি প্রতিষ্ঠার পর ইংরেজি ১৮২৮ সনে কিশোরগঞ্জ জেলা শহরের পূর্ব প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে প্রায় সাত একর জমির ওপর এ ঈদগাহ প্রতিষ্ঠা করেন। ওই বছর শোলাকিয়ায় অনুষ্ঠিত প্রথম জামাতে সোয়া লাখ মানুষ অংশগ্রহণ করেন বলে মাঠের নাম হয় ‘সোয়া লাখি মাঠ’। সেখান থেকে উচ্চারণের বিবর্তনে নাম ‘শোলাকিয়া মাঠে’ পরিণত হয়েছে। প্রায় সাত একর আয়তনের মাঠটিতে ২৬৫টি কাতার রয়েছে।