নিহত আবুল হাসান রতন তাড়াইল উপজেলার রাউতি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ছিলেন।
Published : 12 Jan 2025, 06:34 PM
কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলা সম্মেলনকে ঘিরে বিএনপির দু্পক্ষের সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় এক নেতা নিহত হয়েছেন। এ সময় আহত হয়েছেন আরও পাঁচজন।
রোববার সকাল ১১টার দিকে উপজেলার রাউতি ইউনিয়নের বানাইল বাজারে এ ঘটনা ঘটে বলে তাড়াইল থানার ওসি সাব্বির রহমান জানান।
নিহত আবুল হাসান রতন (৬৫) রাউতি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ছিলেন।
এ ঘটনার পর পরিস্থিতি বিবেচনায় উপজেলা কমিটির সম্মেলন স্থগিত করেছে জেলা বিএনপি।
বিএনপির স্থানীয় কয়েকজন নেতাকর্মী জানান, ১৫ জানুয়ারি তাড়াইল উপজেলা বিএনপির সম্মেলন হওয়ার কথা। সম্মেলনে সভাপতি পদে প্রার্থী হয়েছেন বর্তমান কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার হোসেন লিটন এবং সাইদুজ্জামান মোস্তফা।
এর মধ্যে আবুল হাসান রতন ছিলেন সাইদুজ্জামান মোস্তফার অনুসারী। অপরদিকে রতনের ভাতিজা গিয়াস উদ্দিন আবার সারোয়ার হোসেন লিটনের অনুসারী।
শনিবার রাতে বানাইল বাজারে সারোয়ার হোসেন লিটন একটি সভা করেন। এতে সভাপতিত্ব করেন তার অনুসারী গিয়াস উদ্দিন।
চাচা-ভাতিজার মধ্যে আগে থেকেই দলীয় বিরোধ ছিল। শনিবার রাতের সভাকে কেন্দ্র করে সেটি আবার সামনে আসে। রাতে চাচা-ভাতিজার মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে এতে দু্পক্ষের সমর্থকরা জড়াতে এক ধরনের উত্তেজনার সৃষ্টি হয়।
সকালে উভয় পক্ষের কর্মী-সমর্থকরা বানাইল বাজারে প্রথমে কথা কাটাকাটি এবং পরে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এ সময় প্রতিপক্ষের অস্ত্রের আঘাতে আবুল হাসান রতন গুরুতর আহত হন। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
তাড়াইল থানার ওসি সাব্বির রহমান বলেন, “আমি এখন ঘটনাস্থলে আছি। সংঘর্ষের খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্তিপূর্ণ আছে।
“একটি দেশীয় অস্ত্র (স্থানীয়ভাবে যাকে ফলা বা কাছড়া বলে। বাঁশের এক মাথায় লোহার ধারালো অস্ত্র থাকে।) দিয়ে আবুল হাসান রতনকে আঘাত করা হয়েছে। এখনো মামলা হয়নি; কেউ আটকও হয়নি।”
তাড়াইল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) শ্যামল মিয়া বলেন, “বাঁশ দিয়ে বানানো অস্ত্রটি দিয়ে আবুল হাসান রতনের ডান বুকে আঘাত করা হয়েছে। একটি আঘাতই করা হয়েছে। এতে তিনি মারা গেছেন। মরদেহের ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ জেলা সদর হসপাতালে পাঠানো হবে।”
এ ঘটনায় আহত অন্যদেরকে ময়মনসিংহ ও কিশোরগঞ্জ জেলা সদরের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানায় পুলিশ।
এদিকে এ ঘটনার পর জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক মীর কামরুল হাসান শামু স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ১৫ জানুয়ারির উপজেলা সম্মেলন স্থগিত রাখার সিদ্ধান্তের কথা জানান হয়েছে।
মীর কামরুল হাসান শামু সাংবাদিকদের বলেন, “সভাপতির নির্দেশে অনিবার্য কারণ দেখিয়ে সম্মেলন স্থগিত করা হয়েছে।”