এক্সপোর্ট ভিলেইজ লিমিটেড ও ব্রাভো অ্যাপারেলসের অন্তত তিন হাজার শ্রমিককে বিক্ষোভে অংশ নিতে দেখা গেছে।
Published : 10 Sep 2024, 04:40 PM
গাজীপুরে টঙ্গী ও পূবাইল থানায় তিনটি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা ১৩ দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন।
গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক সাইফুল ইসলাম জানান, অগাস্টের বকেয়া বেতন পরিশোধসহ বিভিন্ন দাবিতে মঙ্গলবার সকাল থেকে বিক্ষোভ-মিছিল করছেন শ্রমিকরা।
এর মধ্যে টঙ্গীর ‘গার্মেন্টস এক্সপোর্ট ভিলেইজ লিমিটেড’, ‘ব্রাভো অ্যাপারেলসের’ ও ‘প্রিন্স জ্যাকার্ড’ সোয়েটার লিমিটেড কারখানার শ্রমিকরা রয়েছেন।
সরেজমিনে ‘এক্সপোর্ট ভিলেইজ লিমিটেড’ ও ‘ব্রাভো অ্যাপারেলসের’ অন্তত তিন হাজার শ্রমিককে বিক্ষোভে অংশ নিতে দেখা গেছে। সকাল ৯টা থেকে টঙ্গী পূর্ব থানা বিসিক শিল্প এলাকায় আন্দোলন শুরু করেন তারা।
এছাড়া নির্ধারিত সময়ে বেতন পরিশোধসহ বিভিন্ন দাবিতে পূবাইল এলাকার ‘এপিএস গার্মেন্টসের’ শ্রমিকরা রোববার বিক্ষোভ করেন। সমস্যার সমাধান না হওয়ায় সোমবারও ওই কারখানা বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ।
আন্দোলনকারী শ্রমিকদের দাবি, প্রতি মাসের ৩ তারিখ পে স্লিপ ও ৭ তারিখের মধ্যে বেতন দিয়ে দিতে হবে। হাজিরা বোনাস এক হাজার টাকা করতে হবে। বেতন বাড়াতে হবে ১৫ শতাংশ। বছরে ১৮ দিনের ছুটির টাকা একসঙ্গে এবং সার্ভিস বিল দিতে হবে।
এছাড়া সন্ধ্যা ৭টার পর থাকলে টিফিন বিল ৫০ টাকা ও নাইট বিল ২০০ টাকা দিতে হবে। অন্তঃসত্ত্বা নারী শ্রমিকদের চার মাসের ছুটি ও ছুটির টাকা আগে পরিশোধের দাবিও করেছেন শ্রমিকরা।
এছাড়া ছুটি শেষে আবার কাজে ফিরতে দিতে হবে। আন্দোলনকারী কাউকে চাকরিচ্যুত করা যাবে না এবং কোনো শ্রমিকের সঙ্গে খারাপ আচরণ করা যাবে না বলেও দাবির মধ্যে রয়েছে।
উৎসব ছুটি ১২ দিন করার দাবি জানিয়ে শ্রমিকরা বলছেন, কোনো কর্মীকে চাকরিচ্যুত করা হলে তাকে ৩ মাস ১৩ দিনের বেতন দিতে হবে। সার্ভিস বিল দিতে হবে। বকেয়া ও ছুটির টাকা ও দুই ঈদে বোনাস দিতে হবে। এছাড়া শুক্রবার বা কোন ছুটির দিন কাজ করলে তাকে দিতে হবে ৫০০ টাকা।
এক্সপোর্ট ভিলেইজ লিমিটেড ও ব্রাভো অ্যাপারেলস কারখানার আন্দোলনরত কয়েকজন শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাদের প্রতিনিধিদের ন্যায্য দাবি গুরুত্বের সঙ্গে মেনে নিতে হবে। দাবি মেনে নিয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিতে হবে।
দাবিগুলো না মানা পর্যন্ত তারা কাজে ফিরবেন না বলেও জানিয়েছেন।
পূবাইল থানার এসআই নাসির মিয়া বলেন, “এপিএস গার্মেন্টসের শ্রমিকরা রোববার বিকালে নির্ধারিত সময়ে বেতন পরিশোধসহ অন্যান্য দাবিতে রাস্তা অবরোধ করেছিলেন। সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হলেও সমাধান হয়নি।
“এ পরিস্থিতিতে কারখানা ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। সোমবারও শ্রমিকরা কাজে আসেননি।”
এপিএস পোশাক কারখানার এক শ্রমিক বলেন, তাদের প্রতিষ্ঠানে প্রায় দুই হাজার শ্রমিক কাজ করে। তাদের দাবি, মাসের ৭ তারিখের মধ্যে বেতন দিতে হবে এবং হাজিরা-বোনাস এক হাজার টাকা করতে হবে। বেতন ১৫ শতাংশ বাড়াতে হবে। ১৮ দিনের ছুটির টাকা এক সঙ্গে দিতে হবে। চাকরি ছাড়ার ১৫ দিনের মধ্যে সার্ভিস বিল দিতে হবে। ছয় মাস চাকরি মেয়াদ হলেও ঈদ বোনাস দিতে হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এপিএস গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শামীম রেজা বলেন, “রোববার শ্রমিকরা আন্দোলন করেছেন। আজ থেকে কারখানা বন্ধ। আমাদের অবস্থা খুব খারাপ। অর্থনৈতিক সংকট চরমে।”
শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, “ঘোষণা অনুযায়ী ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়ার কথা। যদি আজ টাকা আসে তাহলে মঙ্গলবার কারখানা খোলা যাবে। তারপর বাকি সিন্ধান্ত জানানো হবে।”