গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার হাতিয়াড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি সেপ্টেম্বরে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
Published : 25 Nov 2024, 12:40 PM
স্কুল ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা করায় গাছতলায় ক্লাস করছে গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার হাতিয়াড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
স্কুল কর্তপক্ষ বলছে, ভবন রেখে গত সেপ্টেম্বর থেকে গাছতলায় ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। রোদ, বৃষ্টিতে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা প্রচণ্ড দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এতে স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। ক্লাসের উপযুক্ত পরিবেশ না থাকায় দিন দিন বিদ্যালয় থেকে শিক্ষার্থী ‘কমে’ যাচ্ছে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পল্লী বিশ্বাস বলেন, “ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। নতুন ভবন নির্মাণের টেন্ডার হলেও এখনও কাজ শুরু করেননি ঠিকাদার। এতে আমাদের শিক্ষার্থীদের নিয়ে বেশ সমস্যা পোহাতে হচ্ছে।”
কাশিয়ানী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) বিশ্বজিৎ সাহা জানান, ১৯৯৭ সালে চার কক্ষের স্কুল ভবনটি নির্মাণ করা হয়। এরপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ভবনের ছাদসহ দেয়ালের পলেস্তরা খসে পড়তে থাকে; বিমের রড বেড়িয়ে যায়। এই অবস্থায় শিক্ষার্থীদের ক্লাস চলত। চলতি বছর ভবনটি পুরোপুরি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়লে পরিত্যক্ত ঘোষণা করে কর্তৃপক্ষ। এরপর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তারাও ভবনটি ছেড়ে দিতে বলেন।
হাতিয়াড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘুরে দেখা গেছে, বর্তমানে স্কুলে শিশু থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ৯১ শিক্ষার্থী রয়েছে। চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের গাছতলায় পাঠদান চলছে। আর অন্য শ্রেণির ক্লাস চলছে পাশের একটি ছোট্ট টিনের ঘরে।
প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ বলেন, “ভবনটি পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। নতুন ভবন নির্মাণের জন্য সেপ্টেম্বর মাসে টেন্ডার সম্পন্ন হয়েছে। শিগগিরই নতুন ভবন নির্মাণ কাজ শুরু করবেন ঠিকাদার।
“শিক্ষার্থীদের কথা বিবেচনা করে এ ব্যাপারে আমরা ঠিকাদারকে বিশেষ অনুরোধ করেছি। তারা আমাদের অনুরোধে সাড়া দিয়েছেন।”
চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী লাকি সরকার বলেন, “রোদ-বৃষ্টিতে আমরা গাছতলায় ক্লাস করছি। আমাদের অনেক কষ্ট হয়। বৃষ্টি হলে অন্য কোথাও আশ্রয় নিতে হয়। দ্রুত আমাদের স্কুল ভবনটি নির্মাণ করে দিয়ে এ অবস্থা থেকে বাঁচাতে হবে।”
জীবন মৌলিক নামের এক অভিভাবক বলেন, “আমাদের ছেলে-মেয়েরা রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে গাছতলায় অনেক কষ্টে ক্লাস করে। বৃষ্টি হলে স্কুলে পাঠাই না। কখনো কখনো বৃষ্টিতে ব্যাগ, বই ভিজে যায়। দ্রুত ভবনটি নির্মাণ করা হলে তাদের দুর্ভোগ লাঘব হত।”
এ অবস্থায় হাতিয়াড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দিন দিন শিক্ষার্থী সংখ্যা কমছে জানিয়ে প্রধান শিক্ষক পল্লী বিশ্বাস বলেন, গত বছর তার বিদ্যালয়ে ১০৬ জন শিক্ষার্থী ছিল। এ বছর ১৫ জন কমেছে।