যুক্তরাষ্ট্রে বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে স্পিকার শিরীন শারমিন

বঙ্গমাতাকে ‘বিরল ব্যক্তিত্ব’ ও ‘সাধারণের মাঝেও অসাধারণ’ অভিহিত করে তাকে নারীর ক্ষমতায়নের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করেন স্পিকার শিরীন শারমিন।

নিউ ইয়র্ক প্রতিনিধি
Published : 10 August 2022, 12:21 PM
Updated : 10 August 2022, 12:21 PM

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটনে বাংলাদেশ দূতাবাস এবং নিউ ইয়র্ক কন্সুলেটে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জন্মবার্ষিকী পালন করা হয়েছে। এর মধ্যে নিউ ইয়র্ক কনসুলেটের আলোচনা অনুষ্ঠানে ছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী।

স্থানীয় সময় সোমবার সন্ধ্যায় নিউ ইয়র্কে বাংলাদেশ কনস্যুলেট ভবনে 'মহীয়সী বঙ্গমাতার চেতনা; অদম্য বাংলাদেশের প্রেরণা' শীর্ষক ওই আলোচনার প্রধান অতিথি ছিলেন শিরীন শারমিন চৌধুরী।

‘বঙ্গমাতার জন্ম না হলে হয়ত স্বাধীনতার ইতিহাস ভিন্ন হতে পারতো’ মন্তব্য করে তার রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, বিচক্ষণতা ও দূরদৃষ্টিসহ বহুমাত্রিক গুণাবলীর বিষয়ে আলোকপাত করেন স্পিকার।

শিরীন শারমিন বলেন, “দৃঢ়চেতা ও বলিষ্ঠ চরিত্রের অধিকারী বঙ্গমাতা বাঙালির সুদীর্ঘ স্বাধীনতা আন্দোলনের নেপথ্যে থেকে বঙ্গবন্ধুকে প্রতিটি পদক্ষেপে শক্তি, সাহস ও প্রেরণা জুগিয়েছেন।“

তিনি বঙ্গমাতাকে ‘বিরল ব্যক্তিত্ব’ ও ‘সাধারণের মাঝেও অসাধারণ’ অভিহিত করে তাকে নারীর ক্ষমতায়নের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হিসেবে উল্লেখ করেন।

কনসাল জেনারেল ড. মনিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে আরও ছিলেন এবং বক্তব্য দেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান মেহের আফরোজ চুমকি, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য কাজী নাবিল আহমেদ, জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবদুল মুহিত, বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম মোস্তফা খান মিরাজ, কণ্ঠযোদ্ধা রথীন্দ্রনাথ রায় এবং শহীদ হাসান, শহীদ সন্তান ফাহিম রেজা নূর, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সামসুদ্দিন আজাদ, ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি আইরিন পারভিন, যুক্তরাষ্ট্র সেক্টর কমান্ডারস ফোরামের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা লাবলু আনসার, আমেরিকা-বাংলাদেশ প্রেসক্লাবের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা রাশেদ আহমেদ, আইটি বিশেষজ্ঞ আজিজ আহমেদ, যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোর্শেদা জামান, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের কৃষিবিষয়ক সম্পাদক আশরাফুজ্জামান, প্রদীপ কর, রাজনৈতিক-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা, গণমাধ্যম ও বাংলাদেশ কমিউনিটির বিশিষ্ট ব্যক্তিরা।

অনুষ্ঠানের শুরুতে প্রধান অতিথি স্পিকারের নেতৃত্বে বঙ্গমাতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। এরপর ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট এবং ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে সকল শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে একমিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন যথাক্রমে ডেপুটি কনসাল জেনারেল এস এম নাজমুল হাসান এবং কাউন্সেলর আয়েশা হক।

অনুষ্ঠানে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের উপর নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়।

বঙ্গমাতা ও জাতিরপিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট এবং ১৯৭১- এর সকল শহীদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে এবং দেশের অব্যাহত সমৃদ্ধি ও শান্তির জন্য বিশেষ দোয়া ও মোনাজাতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।

ওয়াশিংটন ডিসিতে বঙ্গমাতার জন্মবার্ষিকী পালিত

বঙ্গমাতার জন্মদিন উপলক্ষে ওয়াশিংটন ডিসির বাংলাদেশ দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

দিনটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করেন প্রতিরক্ষা অ্যাটাচে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. সাহেদুল ইসলাম ও মিনিস্টার (পলিটিক্যাল) মো. দেওয়ান আলী আশরাফ।

পরে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. সহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

এতে সম্মানিত অতিথি হিসেবে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব গোলাম মো. হাসিবুল আলম অংশ নেন।

প্রতিরক্ষা সচিব হাসিবুল আলম তার বক্তব্যে বঙ্গমাতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং জাতির পিতার জীবনসঙ্গী হিসেবে বঙ্গমাতার ভূমিকার পাশাপাশি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে তার অবদানের কথা শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।

রাষ্ট্রদূত ইসলাম তার বক্তৃতায় পরিবার, সমাজ ও জাতির প্রতি বঙ্গমাতার অসামান্য আত্মত্যাগের পাশাপাশি বঙ্গবন্ধুর জীবনে তার প্রভাব এবং বাংলাদেশের ইতিহাসের গতিপথ নির্ধারণে তার নেপথ্যের ভূমিকার কথা তুলে ধরেন।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন ডেপুটি চিফ অব মিশন ফেরদৌসি শাহরিয়ার, সাংবাদিক রোকেয়া হায়দার ও কাউন্সেলর আরিফা রহমান রুমা।

আলোচনা শেষে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিবের জীবন ও কর্মের ওপর একটি প্রামাণ্যচিত্র দেখানো হয়।

১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্টের কালো রাতে নিহত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিব, তাদের পরিবারের সদস্য এবং অন্যদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।

এর আগে প্রতিরক্ষা সচিব ও রাষ্ট্রদূত বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা মুজিবের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এসময় দূতাবাসের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।