আরব আমিরাত থেকে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছাড়া স্বাভাবিক ও অন্যান্য দুর্ঘটনায় মৃত্যুর শিকার দু:স্থ প্রবাসীদের লাশ বিনা খরচে দেশে আনা বন্ধ করে দিয়েছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। আর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন আমিরাত প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
Published : 15 Sep 2020, 03:38 AM
তারা বলছেন, যেখানে সরকার অন্যান্য খাতে প্রণোদনা দিচ্ছে সেখানে রেমিটেন্সযোদ্ধাদের পুরনো সুযোগটুকু বন্ধ করে দেওয়া ‘খুবই হতাশাজনক’।
করোনাভাইরাস সংকট শুরুর আগে মৃত ব্যক্তির লাশ আমিরাত থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বিনা খরচে বহন করতো।
আমিরাতে বাংলাদেশ দূতাবাস জানায়, প্রতিবছর আমিরাত থেকে আনুমানিক পাঁচশ প্রবাসীর মরদেহ দেশে যায়। প্রতিটি মরদেহ পরিবহনে দুই লাখ টাকার কম-বেশি খরচ হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মৃতের স্থানীয় স্পন্সর এ খরচ বহন করে। অনেক সময় স্পন্সর পাওয়া না গেলে বিত্তবান প্রবাসীদের আর্থিক সহায়তায় কিংবা দূতাবাসের সুপারিশে বিমান তা নিখরচায় পরিবহন করে আসছিল।
এ ব্যাপারে আল আইন প্রবাসী সংগঠক শেখ ফরিদ আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “সরকার গার্মেন্টস, ব্যাংকিং, কৃষি, স্বাস্থ্যসহ নানাখাতে করোনাকালীন প্রণোদনা দিচ্ছে। করোনাভাইরাস সংকটের এ সময়ে প্রবাসীদের যখন কাজ নেই ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দা অবস্থা চলছে তখন অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত প্রবাসীদের লাশ বিমান বিনা খরচে দেশে পাঠানোর সুযোগটুকু বন্ধ করে দিয়েছে। যা খুবই হতাশাজনক।”
তিনি বলেন, “প্রবাসীরা ব্যক্তিগত অনুদানে কিছু লাশ দেশে পাঠালেও ভিনদেশের মর্গে অনেক লাশ পড়ে আছে। আমরা এ ব্যাপারে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করি।”
আমিরাতে টাঙ্গাইল সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ জুবায়ের সিদ্দিকী রনি বলেন, “এমনিতেই করোনার কারণে আমিরাত প্রবাসে জব মার্কেট খুবই অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এমন অবস্থায় বিশেষ করে দরিদ্র প্রান্তিক প্রবাসীদের পাশে যেখানে সরকারের আরও বেশি দাঁড়ানো প্রয়োজন, সেখানে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স তাদের লাশ বিনামূল্যে পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে। আমরা চাই এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা হোক।”
আবুধাবি প্রবাসী ব্যবসায়ী শাহাদাত হোসেন বলেন, “বাংলাদেশ বিমান হঠাৎ করে গরীব দু:খী, স্পন্সরবিহীন, অসহায় প্রবাসীদের লাশ বিনামূল্যে পরিবহন করা বন্ধ করে দেওয়ায় নিরাশ হয়েছি আমরা। আমরা চাই এ সিদ্ধান্ত বাতিল করা হোক।”
এ বিষয়ে রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আবু জাফর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাংলাদেশ বিমান থেকে বলা হয়েছে এখন থেকে যেকোনও বাংলাদেশি তা তিনি ইনভেস্টরই হন, এমপ্লয়মেন্ট ভিসাধারী কিংবা এমনকি নির্মাণ শ্রমিক ক্যাটাগরির হন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স বিনা খরচে তাদের লাশ আর পরিবহন করবে না।”
“বিমানের এই সিদ্ধান্তের বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। আমরা এটার উপর কাজ করছি। যথাযথভাবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে আমরা বিষয়টি অবহিত করব এবং পূর্বে যে ব্যবস্থাটি ছিল যে প্রবাসী বাংলাদেশি যারা বৈধভাবে এদেশে বিভিন্ন কর্মসংস্থানে আছেন তাদের এখানে দেহাবসান ঘটলে যদি কারো সক্ষমতার অভাব থাকে, পরিবার পরিজনের সংগতি না থাকে তাহলে তাদের দেহাবশেষ বিমান আগে যেমন বিনামূল্যে বহন করত তা যেন অব্যাহত।"
প্রবাস পাতায় আপনিও লিখতে পারেন। প্রবাস জীবনে আপনার ভ্রমণ,আড্ডা,আনন্দ বেদনার গল্প,ছোট ছোট অনুভূতি,দেশের স্মৃতিচারণ,রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক খবর আমাদের দিতে পারেন। লেখা পাঠানোর ঠিকানা [email protected]। সাথে ছবি দিতে ভুলবেন না যেন! |