তিন বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের কানেটিকাটে ছুরিকাঘাতে বাংলাদেশি ট্যাক্সিচালক মোহাম্মদ কামালকে হত্যার দায়ে এক ব্যক্তিকে ৬০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির একটি আদালত।
Published : 26 Jul 2017, 06:12 PM
দণ্ডিত শোটা মেকোসভেলি (৩২) যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। জর্জিয়া থেকে অভিবাসী হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন তিনি।
কানেটিকাট অঙ্গরাজ্যের স্ট্যামফোর্ড সুপিরিয়র কোর্টের বিচারক জন ব্লাউয়ি স্থানীয় সময় মঙ্গলবার এ রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার আগে ঘাতকের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে আদালতের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন স্থানীয় প্রবাসী বাংলাদেশিরা।
২০১৪ সালের ২৭ অগাস্ট ভোররাত সাড়ে ৩টার দিকে ট্যাক্সিচালক কামালকে (৪৭) হত্যার পর রাস্তার পাশে লাশ ফেলে পালিয়ে যায় ঘাতক। ডোলিট রোডের পাশে কর্মরত শ্রমিকরা লাশ দেখে পুলিশে খবর দেয়।
আগের রাতে স্বামী ঘরে না ফেরায় সকালে বিষয়টি স্ট্যামফোর্ড পুলিশের নজরে আনে কামালের স্ত্রী রাজিয়া শালিয়া। পরে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর কামালের মৃতদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।
ঘটনার ১৩ ঘণ্টা পর মেকোসভেলিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ওইদিন তার বাড়িতে তল্লাশি চালিয়ে খুনের সঙ্গে জড়িত থাকার কিছু আলামতও উদ্ধার করা হয়। তার কাছ থেকে রক্তমাখা ডলার উদ্ধারের পর কামাল হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার বিষয়ে নিশ্চিত হয় পুলিশ। পরদিন তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
মেকোসভেলি আদালতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন। স্ট্যামফোর্ড সুপিরিয়র কোর্টের বিচারক তার বিরুদ্ধে এক মিলিয়ন ডলারের জামিননামা ধার্য করে কারাগারে পাঠান।
কামালের খুনির সাজা হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় তার স্ত্রী রাজিয়া শালিয়া বলেন, খুনির সর্বোচ্চ শাস্তি ৬০ বছর কারাদণ্ড হওয়ায় তিনি খুশি হয়েছেন। এর ফলে কামালের ‘আত্মা শান্তি পাবে’ বলে মনে করেন তিনি।
রায় ঘোষণার সময় কামাল-রাজিয়া দম্পতির সাত বছর বয়সী একমাত্র ছেলেও উপস্থিত ছিল।
রায় ঘোষণার সময় বিচারক জন ব্লাউয়ি বলেন, “খুনি শোটা মেকোসভেলির সর্বোচ্চ শাস্তি প্রদানই নিহত কামালের পরিবারের জন্য যথেষ্ট নয়। যে একজন নিরীহ মানুষকে ১২৭ বার ছুরিকাঘাতে খুন করতে পারেন তার জন্য এ শাস্তি একেবারেই নগণ্য।”
১৯৯২ সালে ডিভি লটারি পেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে গিয়েছিলেন কামাল।দীর্ঘ ১৬ বছর ধরে কানেটিকাটের স্ট্যামফোর্ড শহরে বসবাস করছিলেন। বাংলাদেশের চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার চিপাতলী বখতিয়ারপাড়ায় তার বাড়ি।