ছয় বছর বয়সে মা-বাবার সাথে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ায় এসে লেখাপড়া শুরুর সময়েই ফাহমিদার স্বপ্ন ছিল খ্যাতনামা একজন চিত্রশিল্পী হওয়ার। সেভাবেই বেড়ে উঠেছেন উচ্চতর ডিগ্রি গ্রহণের মধ্য দিয়ে।
Published : 21 Aug 2022, 11:57 PM
সাংবাদিকতা ও প্রকাশনার বিভিন্ন ক্ষেত্রে সবচেয়ে সম্মানজনক সম্মাননা হিসেবে বিবেচিত পুলিৎজার পুরস্কার পেয়েছেন চিত্রশিল্পী এবং অলঙ্করণ শিল্পী বাংলাদেশি-আমেরিকান ফাহমিদা আজিম।
ইনসাইডার ওয়েবসাইট প্রকাশিত ‘হাউ আই এসকেপড আ চায়নিজ ইন্টারমেন্ট ক্যাম্প’ (যেভাবে একটি চীনা বন্দিশিবির থেকে পালিয়ে এসেছি) শিরোনামের ইলাস্ট্রেটেড রিপোর্ট- এ অলঙ্করণের জন্য তিনি এ পুরস্কার জিতে নেন।
ছয় বছর বয়সে মা-বাবার সাথে যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ায় এসে লেখাপড়া শুরুর সময়েই ফাহমিদার স্বপ্ন ছিল খ্যাতনামা একজন চিত্রশিল্পী হওয়ার। সেভাবেই বেড়ে উঠেছেন উচ্চতর ডিগ্রি গ্রহণের মধ্যদিয়ে।
ফাহমিদা লেখাপড়া করেছেন কম্যুনিকেশন্স আর্টে এবং বর্তমানে তিনি ওয়াশিংটন স্টেটের সিয়াটলে একটি কোম্পানিতে গ্রাফিক ডিজাইনার হিসেবে চাকরি করছেন।
তার আগ্রহ হচ্ছে বাস্তব জীবনে মানুষের বিশেষ বৈচিত্র্যময় জীবন-যাপনের ওপর। সেই প্রতিপাদ্যকে কাজে লাগিয়েই ফাহমিদা আঁকেন এবং লিখেন। এমনকি সে সব বিশেষ বৈশিষ্ট্যের মানুষদের খাদ্যাভাসকেও তিনি তার কাজে তুলে ধরেন।
এর আগে বাংলাদেশি আলোকচিত্রী পনির হোসেন ২০১৮ সালে রয়টার্সের পাঁচ ফটো-সাংবাদিকদের সঙ্গে পুলিৎজার জিতেন।
তবে ফাহমিদা হচ্ছেন প্রথম কোনও বাংলাদেশি-আমেরিকান যিনি পুলিৎজার পুরস্কার পেলেন। ফাহমিদা আজিম এর আগে ‘সামিরা সার্ফ’ বইটিতে অলঙ্করণের জন্যে এ বছরই ‘গোল্ডেন কাইট’ পুরস্কার পান।
২০২০ সালে ‘মুসলিম উইমেন আর এভরিথিংস’, ২০২১ সালে ‘আমিরার পিকশ্চার ডে’ গ্রন্থের প্রচ্ছদ করার জন্যও তিনি পুরস্কার পেয়েছিলেন।
তার চেতনায় সব সময় উজ্জীবিত থাকে মুসলিম নারীদের অধিকার ও মর্যাদা। ইতিপূর্বে তার ইলাস্ট্রেশন ছাপা হয় নিউ ইয়র্ক টাইমস, দ্য নিউ ইয়র্কার, সায়েন্টিফিক আমেরিকান, দ্য ইন্টারসেপ্ট, এন্টারটেইনমেন্ট উইকলিতে।
ফাহমিদা ‘মেগা মেঘা’ নামক একটি উপন্যাস লিখছেন, যার অলঙ্করণ নিজেই করবেন। ফাহমিদা কাজের মূল চেতনা- বহুজাতিক সমাজে মুসলিম নারীদের সংস্কৃতি, ব্যক্তি স্বতন্ত্রতা এবং তাদের মধ্যে পারষ্পারিক যোগাযোগ নিয়ে।
১৯১৭ সাল থেকে পুলিৎজার পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে। ১৯১১ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদপত্র প্রকাশক জোসেফ পুলিৎজারের মৃত্যুর পর তার উইল অনুসারে এবং দান করা সম্পদ দিয়ে কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটিতে সাংবাদিকতার স্কুল চালু করা হয় এবং এই পুরস্কার প্রবর্তন করা হয়।
শুরুতে সাংবাদিকতায় চার বিভাগে, চিঠিপত্র ও নাটকের জন্য চার বিভাগে, শিক্ষায় একটি পুরস্কার এবং পাঁচটি ভ্রমণ বৃত্তি দেওয়া হত।
বর্তমানে সংবাদমাধ্যমে সাংবাদিকতা, লেখালেখি ও আলোকচিত্রের জন্য ১৫টি বিভাগে এবং বই, নাটক ও সংগীতের জন্য সাতটি বিভাগে পুরস্কার দেওয়া হচ্ছে।