মিলান ও তোরিনসহ ছয়টি ক্যাম্প থেকে তাদের আটক করা হয়।
Published : 12 Apr 2025, 12:39 PM
ইতালিতে অবৈধভাবে প্রবেশ করা অভিবাসীদের মধ্যে বাংলাদেশিসহ ৪০ জনকে আলবেনিয়ায় ফেরত পাঠিয়েছে ইতালি সরকার।
শুক্রবার সকালে দেশটির ব্রিন্দাসি বন্দর থেকে ‘লিব্রা’ নামের একটি জাহাজে করে, হাতে হাতকড়া পরিয়ে তাদের পাঠানো হয়।
এ নিয়ে চতুর্থবারের মতো আলবেনিয়ায় অভিবাসী পাঠানো হলো। এর আগে রোমের আদালতের নির্দেশে তিন দফায় অভিবাসীদের ফেরত আনতে বাধ্য হয়েছিল ইতালি সরকার।
স্থানীয় প্রশাসনের বরাতে জানা গেছে, অভিবাসীদের মধ্যে বাংলাদেশ, পাকিস্তান, জর্জিয়া, আলজেরিয়া, নাইজেরিয়া, মলদোভা, তিউনিসিয়া ও মিশরের নাগরিক রয়েছেন। তবে কতজন বাংলাদেশি রয়েছেন, সে বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
রোমে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রথম সচিব সাইফুল ইসলাম বলেন, “আজ যাদের পাঠানো হয়েছে, তাদের মধ্যে কয়েকজনকে স্থানীয় প্রশাসন ‘সম্ভাব্য বাংলাদেশি’ হিসেবে শনাক্ত করেছে। নিশ্চিত হওয়ার পর দূতাবাসকে অফিসিয়ালি জানানো হবে এবং ইতালির নিয়ম অনুযায়ী পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
গত ২৮ মার্চ অভিবাসীদের আলবেনিয়ায় পাঠানোর নতুন নির্দেশনা জারির পর মিলানসহ বিভিন্ন শরণার্থী ক্যাম্পে অভিযান চালায় ইতালির প্রশাসন। এরপর মিলান ও তোরিনসহ ছয়টি ক্যাম্প থেকে ৪০ জনকে আটক করা হয়।
ইউরোপীয় পার্লামেন্ট সদস্য এবং মধ্য-বামপন্থি দল ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা চেচিলিয়া মারিয়া স্ত্রাদা বলেন, “এই ৪০ অভিবাসীর অনেকেই ইতালিতে রাজনৈতিক আশ্রয়ের আবেদন করেছিলেন এবং তাদের প্রক্রিয়া চলমান ছিল। আশ্রয় প্রক্রিয়া চলাকালে তাদের আলবেনিয়ায় পাঠানো এবং হাতকড়া পরানো মানবাধিকারের প্রশ্ন তোলে।”
এ বিষয়ে ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আন্তোনিও তায়ানি বলেন, “শুধু সমুদ্রপথ নয়, যেকোনো উপায়ে অবৈধভাবে ইতালিতে প্রবেশ করলেই আলবেনিয়ায় পাঠানো যাবে— এমন রায় দিয়েছে আদালত। তবে অভিবাসীরা আলবেনিয়া থেকেই ইতালিতে আশ্রয়ের আবেদন করতে পারবেন।”
অভিবাসন বিশেষজ্ঞ ও রোমপ্রবাসী এম কে রহমান লিটন বলেন, “ইতালি সরকার বৈধভাবে আসার জন্য সুযোগ দিচ্ছে। আমাদের উচিত যথাযথ প্রশিক্ষণ ও প্রস্তুতি নিয়ে বৈধ পথে ইতালিতে প্রবেশের চেষ্টা করা।”
ইতালিতে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই প্রধানমন্ত্রী জর্জা মেলোনির নেতৃত্বাধীন সরকার অবৈধ অভিবাসনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে থেকে আগত অবৈধ অভিবাসীদের আলবেনিয়ায় স্থানান্তরের এই উদ্যোগ সরকারের কড়াকড়ি নীতির অংশ।
অভিবাসন প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও মানবিক বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনার সৃষ্টি হয়েছে।