নুরের সমর্থকরা কার্যালয়ে ঢুকতে গেলে বাধা দেয় বাড়িওয়ালা; উত্তেজনা থামাতে যায় পুলিশ।
Published : 20 Jul 2023, 09:28 PM
গণঅধিকার পরিষদে কোন্দলের মধ্যে ঢাকার পুরানা পল্টনে প্রীতম-জামান টাওয়ারের ছয়তলায় দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয় তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে মালিকপক্ষ।
বৃহস্পতিবার নুররা তালা ভেঙে সেখানে ঢুকতে চাইলে মালিক পক্ষ বাধা দেয়। তখন পরিস্থিতি সামাল দিতে সেখানে যায় পুলিশ।
দু্ই পক্ষকে সরিয়ে দিয়ে এখন সেখানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে পল্টন মডেল থানার ওসি মো. সালাউদ্দিন জানিয়েছেন।
চাকরিতে কোটা বাদ দেওয়ার দাবিতে আন্দোলনকারীদের উদ্যোগে দুই বছর আগে গঠিত গণঅধিকার পরিষদ এখন দুই ভাগে বিভক্ত। একভাগের নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রতিষ্ঠাতা আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া; আরেক অংশের নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠাতা সদস্য সচিব ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর।
কোন্দল চলার মধ্যে কেন্দ্রীয় কার্যালয় নুরদের নিয়ন্ত্রণেই ছিল। সেখানে গত ১০ জুলাই সম্মেলন করে নুর দলের সভাপতি হন, সাধারণ সম্পাদক হন রাশেদ খাঁন।
তারপর থেকে দলের কার্যালয়ে নুরের অনুসারীরাই ছিলেন। তবে বৃহস্পতিবার সেখানে ঢুকতে গিয়ে তারা দেখেন, মালিক পক্ষ তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে।
গণঅধিকার পরিষদের পল্টনের অফিস ছাড়তে বাড়িওয়ালার নোটিস
গণঅধিকার পরিষদে আমিই আহ্বায়ক, নিবন্ধন আমার নামেই হবে: রেজা কিবরিয়া
নূর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “প্রিতম-জামান টাওয়ারের মালিক আমাদের অফিসে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে। এ ব্যাপারে আমি থানায় জিডি করেছি।”
ভাড়া বকেয়া থাকা, নিরাপত্তা সংক্রান্ত নানা কারণ দেখিয়ে গত ৭ জুলাই দুই দিনের মধ্যে গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কার্যালয় ছাড়তে নোটিস দিয়েছিলেন ভবনের মালিক মিয়া মশিউজ্জামান।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, তালা ঝোলানোর পর নূরের লোকজন এসে সেখানে অবস্থান নেয়। তারা দুপুরে জোর করে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু না পেরে অবস্থান নেয়।
এরপর ভবন মালিকের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ যায় জানিয়ে পল্টন থানার ওসি সালাউদ্দিন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “বাড়িওয়ালা আমাদের জানায় যে তালা ভেঙে নূরের লোকজন ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করছে, অন্য দিকে নূরের পক্ষ থেকে জানায় যে তাদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না।
“পুলিশ দুই পক্ষের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করে। এরই এক পর্যায়ে সন্ধ্যা ৬টার দিকে গণঅধিকার পরিষদের লোকজন তালা ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়লে পুলিশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে তাদের বের দিয়েছে।”
অবসরপ্রাপ্ত কর্নেল মশিউজ্জামান নিজেও গণঅধিকার পরিষদে যুক্ত ছিলেন। তখনই তিনি এই ভবন দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয় হিসেবে ব্যবহারের সুযোগ দেন বলে নুর জানান।
তিনি বলেন, “তিনি (মসিউজ্জামান) আমাদের দলে থাকার সময়ে এই কার্যালয়টি অনুদান হিসেবে দিয়েছিলেন। এখন তিনি দল করবেন না। চুক্তি অনুযায়ী মাসিক ভাড়া নেবেন।
“আজকে দুটি কলাপসিবল গেইটে মালিকপক্ষ দুজন পাহারাদার বসিয়েছে। তাদের হাতে অস্ত্র আছে। এই অবস্থায় নিরাপত্তাহীনতার কারণে আমরা কার্যালয়ে যাইনি। দুই-একজন যারা গেছে তাদেরকে ঢুকতে দেয়নি, মারধরও করেছে।”
নুর জিডির কথা বললেও পল্টন থানার ওসি সালাউদ্দিন বলেন, এই ঘটনা নিয়ে থানায় কেউ লিখিত কোনো অভিযোগ করেনি।
ওই কার্যালয়ে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
মশিউজ্জামান সাংবাদিকদের বলেন, ওই ভবনের ষষ্ঠ তলায় যে ফ্ল্যাটে গণঅধিকার পরিষদের কার্যালয়, সেখানে দরজার সামনে নতুন আরেকটি কলাপসিবল গেইট বসিয়েছেন তিনি।