“একজনের নাগরিকত্ব নেই, প্রশ্ন উঠছিল। সেখানে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আসতে সময় লেগেছে। নির্বাচনের চার দিন পরে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, তথ্য উপাত্ত সংঘটিত হয়”, বলেন তিনি।
Published : 15 Feb 2024, 02:51 PM
দ্বৈত নাগরিকত্বের কারণে প্রার্থিতা বাতিল হওয়া আওয়ামী লীগের আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদকে সংরক্ষিত নারী আসনে মনোনয়ন দেওয়ার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছেন সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
দলের মনোনয়ন বোর্ড যাচাই-বাছাই করেই শাম্মীর প্রার্থিতা চূড়ান্ত করেছে জানিয়ে তিনি বলেছেন, “একজনের নাগরিকত্ব নেই, প্রশ্ন উঠছিল। সেখানে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র আসতে সময় লেগেছে।
“নির্বাচনের চার দিন পরে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র, তথ্য উপাত্ত সংঘটিত হয়। তখন তাকে নমিনেশন দিলেও বাস্তবে প্রতীক দেওয়া থেকে বিরত ছিল। কারণ এটা নিয়ে প্রশ্নের অবকাশ ছিল।”
বৃহস্পতিবার দুপুরে ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছিলেন ওবায়দুল কাদের। সেখানেই শাম্মী আক্তারের মনোনয়ন নিয়ে প্রশ্নের জবাব দেন তিনি।
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বরিশাল-৪ আসনে শাম্মী আহমেদকে এবার মনোনয়ন দিয়েছিল আওয়ামী লীগ। কিন্তু দ্বৈত নাগরিকত্বের অভিযোগে তার প্রার্থিতা বাতিল করা হয়। হাই কোর্ট ও আপিল বিভাগে গিয়েও তিনি প্রার্থিতা ফিরে পাননি। তবে তাকে সংরক্ষিত নারী আসনের এমপি করে সংসদে নিচ্ছে আওয়ামী লীগ।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদে সংরক্ষিত নারী আসনে ৪৮ জন প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে আওয়ামী লীগ। এই ৪৮ জনের মধ্যে অর্ধেকের বেশি নতুন মুখ। ১৪ দলীয় দলের শরিকদের মধ্যে গণতন্ত্রী পার্টির কানন আরা বেগমকে আওয়ামী লীগ সংরক্ষিত আসনে এমপি করে নিচ্ছে।
গত ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরে গেছেন এবং মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছে– এরকম অন্তত তিনজন সংরক্ষিত আসনে এমপি হওয়ার টিকেট পেয়েছেন।
সেই প্রসঙ্গ ধরে একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করেন- জনগণের ভোটে যারা নির্বাচিত হতে পারেননি, তাদেরই সংরক্ষিত আসনে মনোনয়ন দেওয়ায় জনগণের রায় উপেক্ষিত হল কিনা।
জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, “এটা আমাদের দলের ব্যাপার, এটা আমাদের বোর্ডের সিদ্ধান্তের ব্যাপার। কোনটা সঠিক হবে, কোনটা বেঠিক হবে, এটা যাছাই-বাছাই করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
“পুরুষের ব্যাপারে কোনো স্কোপ থাকে না। মহিলাদের ব্যাপারে সংরক্ষিত আসনে একটা সুযোগ আছে। এখানে জনগণের প্রত্যাখ্যানের সাথে কোনো সম্পর্ক নেই।”
‘ফখরুলের জামিন আদালতের সিদ্ধান্ত’
আদালত স্বাধীনভাবে কাজ করছে বলেই বিএনপির মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীর জামিন পেয়েছেন বলে মন্তব্য করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের।
সংবাদ সম্মেলনে বিষয়টি নিয়ে তিনি বলেন, “বিএনপি মহাসচিবের জামিন বা বিচারের সব সিদ্ধান্ত আদালতের বিষয়, তা সরকারের না।
“আদালত স্বাধীনভাবে কাজ করছে। আদালত জামিন দিয়েছে। কাউকে জামিন দেওয়ার অর্থ এই নয়, তিনি অপরাধ থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত। মামলা তো আছে, মামলা চলবে।"
বিএনপিকে ‘সন্ত্রাসী দল’ অ্যাখ্যা দিয়ে আওয়ামী সাধারণ সম্পাদক বলেন, “তবে তাদের নিষিদ্ধ করার চিন্তা এখনো দলগতভাবে আওয়ামী লীগ করেনি। এখানে আদালতের বিষয় আছে। আইন আদালত তো মানতে হবে।
“বিএনপি সন্ত্রাসী দল- এটা কানাডার ফেডারেল আদালত এরাই দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রে তারেক জিয়ার প্রবেশ নিষিদ্ধ। আমেরিকার হোমল্যান্ড সিকিউরিটি এটা দিয়েছে।”
বিএনপি মহাসচিব মুক্ত হওয়ার পর দলটির আন্দোলন বেগবান হবে কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, “বিএনপির আন্দোলন বেগবান হতে হতে পতন হয়ে যাবে। এখন পতনের গভীর খাদ থেকে কে উদ্ধার করবে? আমরা তো প্রস্তুত, রাস্তায় সদা জাগ্রত প্রহরী শেখ হাসিনার জন্য।”
নির্বাচনকে ‘ডামি’ বর্ণনা করে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের বিষয়ে তিনি বলেন, “যারা ডামি নির্বাচন বলছে, প্রমাণ হয়ে গেছে তারাই ডামি বিরোধীদল। তারা নিজেরাই ডামি। নির্বাচনে অংশগ্রহণই করেনি।”
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন, শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক শামসুন্নাহার চাঁপা, উপ দপ্তর সায়েম খান, কার্যনির্বাহী সদস্য সাহাবুদ্দিন ফরাজী, আনোয়ার হোসেন সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।”