সরকার সহযোগিতা ও নিরাপত্তা বিধান করছে বিধায় বিএনপির সমাবেশে পটকাও ফোটে নাই, বলেন তিনি।
Published : 19 Nov 2022, 07:03 PM
বিএনপির ‘জ্বালাও-পোড়াওয়ের ইতিহাস’ থাকায় তাদের কর্মসূচি ঘিরে পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা ধর্মঘট ডাকেন বলে মন্তব্য করেছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেছেন, “বিএনপি যখন সমাবেশ ডাকে, তখন পরিবহন মালিক এবং শ্রমিকরা সবাই আতঙ্কে থাকেন। কারণ অতীতে ২০১৩-১৪ ও ’১৫ সালে বাস-ট্রাক পুড়িয়েছিল বিএনপি। বাস-ট্রাক ও জনগণের সম্পত্তির ওপর হামলা করেছিল তারা। সেজন্য মালিক-শ্রমিকরা ধর্মঘট ডাকেন। সুতরাং এটার সাথে সরকারের কোনো সম্পর্ক নেই।
শনিবার দুপুরে চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ড মাঠ পরিদর্শনে গিয়ে তিনি এ মন্তব্য করেন। আগামী ৪ ডিসেম্বর এ মাঠে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভাষণ দেওয়ার কথা।
হাছান মাহমুদ বলেন, “পরিবহন ধর্মঘট, সেটা তো প্রাইভেট অর্গানাইজেশন। সেখানে বিএনপি, জাতীয় পার্টি, জাসদ, বাসদ, আওয়ামী লীগ- সব দলের নেতা আছেন। সবাই মিলে পরিবহন মালিক এবং শ্রমিক সমিতি। তারা সিদ্ধান্ত নেন তাদের নিজস্ব নানাবিধ কারণে।”
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান বলেন, “চট্টগ্রামের জনসভায় ইনশাআল্লাহ লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাবেশ হবে। আপনারা জানেন, কিছুদিন আগে এখানে বিএনপি একটি সমাবেশ করেছিল। মাঠের তিনভাগের এক ভাগ বাদ দিয়ে একটি মঞ্চ করেছিল। বাকি দুইভাগের মধ্যেও অর্ধেক খালি ছিল।
“তারা যেভাবে বলেছিল, আসলে সেই রকম মানুষ হয় নাই। পলোগ্রাউন্ডের কোণায় যে একটা কমিউনিটি হল আছে, ওখানে আগে ভ্যারাইটি শো হতো। সেই ভ্যারাইটি শোতে যে পরিমাণ মানুষ হতো, তার চেয়ে একটু বেশি মানুষ হয়েছে বিএনপির সমাবেশে।”
বিএনপি সমাবেশ ডাকলে পরিবহন ধর্মঘটসহ সরকার বিভিন্নভাবে বাধা দিচ্ছে- মির্জা ফখরুলের এমন অভিযোগের বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তথ্যমন্ত্রী বলেন, “গণমাধ্যমের মাধ্যমে মির্জা ফখরুলের কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই, বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন আমাদের সমাবেশে ২১শে অগাস্ট গ্রেনেড হামলা করেছিল তারা; আমাদের বিভিন্ন সভা-সমাবেশে হামলা হয়েছিল, বোমা-গ্রেনেড হামলা হয়েছিল।
“বিএনপির সমাবেশে আজকে পর্যন্ত কি একটি পটকাও ফুটেছে? সরকার সহযোগিতা ও নিরাপত্তা বিধান করছে বিধায় পটকাও ফোটে নাই।”
এ সময় চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোসলেম উদ্দিন আহমেদ, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ টি এম পেয়ারুল ইসলাম, নগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন, উত্তর জেলা সভাপতি এম এ সালাম ও সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান উপস্থিত ছিলেন।
‘বড় চোর ও সন্ত্রাসীর হাতে দেশ তুলে দেওয়া যাবে না’
হাছান মাহমুদ বলেন, “তারেক রহমান মানে হচ্ছে- দুর্নীতিতে পরপর পাঁচবার চ্যাম্পিয়ন, দুর্নীতির বরপুত্র। আলী বাবা চল্লিশ চোরের বড় চোরের নাম আমি জানি না, কিন্তু কাউকে যদি জিজ্ঞেস করা হয় হাওয়া ভবনের সবচে বড় চোর কে? বলবে, তারেক জিয়া। হাওয়া ভবনের সবচে বড় চোর ও সন্ত্রাসীদের হাতে দেশ তুলে দেওয়া যাবে না।
“বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল সাহেব বলেছেন- উনারা যদি আওয়ামী লীগকে বিদায় দিতে পারেন, তাহলে তারেক রহমানের নেতৃত্বে সরকার গঠন করবেন।”
শনিবার দুপুরে চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা কৃষক লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক হাছান বলেন, “আর বিএনপি নেতা আসাদুল হক দুলু নাকি বলেছেন, যদি তারা ক্ষমতায় যায়, পিঠের চামড়া তুলে ফেলবে। ওরা যদি আবার ক্ষমতায় যেতে পারে, তাহলে সব মানুষের পিঠের চামড়া তুলে ফেলবে। যারা মানুষের পিঠের চামড়া তুলে ফেলতে চায়, তাদের হাতে দেশ তুলে দিতে পারি না; তাই সবাই ঐক্যবদ্ধ হন।”
বিএনপিকে ‘শীতের পাখি’ আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, “শীতকালে যেমন সাইবেরিয়া থেকে শীতের পাখিরা এসে আমাদের এখান থেকে ধান খেয়ে মোটাতাজা হয়ে আবার চলে যায়, বিএনপিও হচ্ছে শীতের পাখির মতো।
“পাঁচ বছর খবর নেই, নির্বাচন যখন আসে তখন শীতের পাখির মতো আসবে। এই শীতের পাখিদের আর সুযোগ দেওয়া যাবে না। বিএনপি আবার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করেছে, এরা জনগণের শত্রু, এরা দেশের শত্রু, এদেরকে সর্বপর্যায়ে প্রতিহত করতে হবে।”
উত্তর জেলা কৃষক লীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর সভাপতিত্বে সম্মেলন উদ্বোধন করেন কৃষক লীগের সভাপতি কৃষিবিদ সমীর চন্দ।
সাংগঠনিক প্রতিবেদন পেশ করেন উত্তর জেলা সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম এ সালাম, সাধারণ সম্পাদক শেখ আতাউর রহমান, কেন্দ্রীয় কৃষক লীগ নেতা আকবর আলী চৌধুরী, রেজাউল করিম রেজা।