বিএনপির গণমিছিলের কর্মসূচির দিন পরিবর্তন হচ্ছে বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন মাহমুদুর রহমান মান্না।
Published : 17 Dec 2022, 11:33 AM
আওয়ামী লীগকে ক্ষমতা থেকে হটাতে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে নামা গণতন্ত্র মঞ্চ আগামী ৩০ ডিসেম্বর গণমিছিলের কর্মসূচি দিয়েছে।
শনিবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এই জোটের নেতা ও নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না এই কর্মসূচি ঘোষণা করেন। সেই সঙ্গে ইঙ্গিত দেন যে বিএনপির গণমিছিলের কর্মসূচির দিনও বদলাচ্ছে।
তিনি জানান, ঢাকায় মহানগরীতে ৩০ ডিসেম্বর বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমাবেশের পর মিছিল শুরু হবে।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর যে নির্বাচনে জিতে আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতাসীন, সে নির্বাচনে ভোট কারচুপির অভিযোগ তুলে গণমিছিলের জন্য এই দিনটি বেছে নেওয়ার কথা জানিয়েছেন মঞ্চের নেতারা।
মান্না বলেন, “আগামী ৩০ ডিসেম্বর ওই কালো দিনের প্রতি ঘৃণা নিক্ষেপ করে দেশব্যাপী যে নির্যাতন ও ধরপাকড় … আমরা বেগম জিয়ার মুক্তির কথা বলছি, সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপির যে দুই জন নেতা মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ আমাদের গণতন্ত্রের অনেক নেতা কর্মীর মুক্তি দাবি ও সরকারের অত্যাচার নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলাv দা্বিতে সেদিন গণমিছিল ও সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করছি।”
সরকারে পতন ঘটিয়ে নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে বিএনপি ১০ দফা ঘোষণার পর ইতোমধ্যে ২৪ নভেম্বর গণমিছিলের কর্মসূচি দিয়েছে। ওই দিন ঢাকায় আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলন হবে। তাই ক্ষমতাসীন দলটির নেতারা সেদিন কর্মসূচি না রাখতে বিএনপির প্রতি আহ্বান রেখেছে।
মান্না বলেন, “রাজপথের প্রধান বিরোধী দল বিএনপির পক্ষে থেকে একটা কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিলো ১০ তারিখের গণসমাবেশ থেকে। যে কোনোভাবেই হোক না কেন, এটার সঙ্গে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সম্মেলনের একটা তারিখের সংঘাত হয়েছে।
“উনারা (বিএনপি) আমাদের কাছে জিজ্ঞাসা করেছিলেন। যেহেতু আন্দোলন গড়ে তুলবার ব্যাপারে আমরা গণতন্ত্র মঞ্চ বিএনপির সাথে মতবিনময় আদান-প্রদান করছি, আলোচনা করছি। উনারা আমাদের জানিয়েছিলেন এই পরিস্থিতিতে কী করা যেতে পারে? আমরা সবাই এব্যাপারে একমত হয়েছিলাম- তুমি অধম তাই বলে আমি উত্তম হব না এমন তো কথা নেই। অতএব আমরা তাই পেছাব এবং সেই অনুযায়ী আমরা প্রস্তাব করেছিলাম ৩০ ডিসেম্বর আরেকটা কালো দিন, দিন-রাত মিলে দিনটি গণতন্ত্রের জন্য একটা কলঙ্ক। এই দিন আমরা পালন করি এবং তার সঙ্গে যে চলমান দাবি-দাওয়া সেগুলো যুক্ত করি। এ ব্যাপারে বিএনপির সঙ্গে আমাদের ঐকমত্য হয়েছে এবং আমরা এটা ঘোষণা করতে এই সংবাদ সম্মেলন করছি।”
গত ১২ ডিসেম্বর গণতন্ত্র মঞ্চ সরকার পতনে ১৪ দফা দাবি উপস্থাপন করে বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে মাঠে থাকার ঘোষণা দেয়।
গণতন্ত্র মঞ্চের উদ্দেশ্য ব্যাখ্যা করে মান্না বলেন, “আমরা গণতন্ত্র মঞ্চ কেবল এক দফার আন্দোলন করছি না। আমাদের আন্দোলনের শীর্ষ বিন্দু হচ্ছে এই সরকারের পদত্যাগের দাবি সেইখানে একটা অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিষ্ঠা করা, দেশের নির্বাচনের উপযুক্ত মাঠ তৈরি করা। একই সঙ্গে একই গুরুত্বের সঙ্গে আমরা বলছি যে, সামগ্রিক এই শাসন ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা পরিবর্তনও আমরা চাই। আমাদের ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের বা যুগপৎ আন্দোলনের ভিত্তি তাই।”
সংবাদ সম্মেলনে মঞ্চের নেতাদের মধ্যে ছিলেন বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, আকবর খান গণসংহতি আন্দোলনের জোনায়েদ সাকি, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, হাবিবুর রহমান রিজু, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, ইমরান ইমন, জেএসডির শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, কামাল উদ্দিন পাটোয়ারি, গণঅধিকার পরিষদের রাশেদ খান, নাগরিক ঐক্যের শহীদুল্লাহ কায়সার।