“রাত ৩টায় ফোন করে তাকে পাওয়া যায়। এমন প্রধানমন্ত্রী পাবেন আর কোথাও? কোনো দেশে আছে? দুপুরের খাবার রাতে খান, কোনো কোনো দিন খানও না।”
Published : 27 Jan 2024, 07:13 PM
দ্রব্যমূল্যের লাগাম টেনে ধরতে সরকার মাঠে নেমেছে জানিয়ে জনগণকে ‘আস্থা’ রাখার অনুরোধ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের সংকট লাঘব করতে ‘পুরো টিম নিয়ে’ নেমে গেছেন জানিয়ে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী বলেন, “ইনশাআল্লাহ দ্রব্যমূল্য অচিরেই নিয়ন্ত্রণে আসবে।”
শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশে বক্তব্য রাখছিলেন ক্ষমতাসীন দলের নেতা।
বিএনপি-জামায়াতের ‘অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে শান্তি ও গণতন্ত্র সমাবেশ’ নামে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। একই দিন বিএনপি ঢাকায় ‘কালো পতাকা মিছিল’ করে গত ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন বাতিলসহ নানা দাবিতে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, "দেশের মানুষ শেখ হাসিনাকে ভালোবাসে। তার মতো জনবান্ধব সরকার আর আসেনি। আপনারা আস্থা হারাবেন না। আজকে বিশ্বব্যাপী অস্থিরতা, এমনকি লোহিত সাগরেও যুদ্ধ চলছে। এ যুদ্ধের প্রতিক্রিয়া বাংলাদেশে আছে।
“আমাদের বেশি টাকা দিয়ে আমদানি করতে হয়, বিক্রি করতে হয় কম দামে। ধৈর্যহারা হবেন না। শেখ হাসিনার উপর আস্থা রাখুন। দ্রব্যমূল্য কমে যাবে। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় বসে পুরো টিম নিয়ে নেমে গেছেন। জনগণের সংকট লাঘব করতে। তিনি গোটা মন্ত্রিসভাকে কর্ম পরিকল্পনা এবং বাজার নিয়ন্ত্রণে ডাক দিয়েছেন। সবাই কাজে নেমেছে। ইনশাআল্লাহ এভাবে চললে আমরা অচিরেই দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে পারব।”
জনগণের সংকট শেখ হাসিনার ‘হৃদয়ে লাগে’ জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, “রাত ৩টায় ফোন করে তাকে পাওয়া যায়। এমন প্রধানমন্ত্রী পাবেন আর কোথাও? কোনো দেশে আছে? দুপুরের খাবার রাতে খান, কোনো কোনো দিন খানও না।
“আমি এটা বাড়িয়ে বলছি না, সত্য কথা বলছি। এমন প্রধানমন্ত্রীয় পাওয়ায় বাংলাদেশের মানুষ অনেক ভাগ্যবান। আস্থা রাখুন, আস্থা হারাবেন না। বিএনপির কথায় কান দেবেন না। এরা ভুয়া, এদের সকল কথা আজকে ভুয়ায় পরিণত হয়েছে।”
বিএনপির কালো পতাকা মিছিলকে ‘শোক মিছিল’ অভিহিত করে কাদের বলেন, "এ আরেক ভুয়া, আন্দোলনের নামে ভুয়া। ৩০ তারিখে (জানুয়ারি) আবার ডাকছে। সেটাও ভুয়া। লোকজন নেই, জনগণ নেই, নেতাকর্মীরা হতাশ।
“তারেক জিয়ার প্রতি কোনো আস্থা নেই। নেতাকর্মীরা এখন আর তারেকের ফরমায়েশে কান দেয় না। বাংলাদেশের জনগণতো নয়ই।”
সমাবেশে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য আব্দুর রাজ্জাক বলেন, “বিএনপিকে আগামী পাঁচ বছর বোকার মতো ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে থাকতে হবে।"
সভাপতিমণ্ডলীর আরেক সদস্য কামরুল ইসলাম বলেন, “বিএনপি আবার সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। এর বিরুদ্ধে সবাইকে সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে।”
সমাবেশে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, বিএনপিকে জনগণ কালো পতাকা ও বিদেশিরা লাল পতাকা দেখিয়েছে।
তিনি বলেন, "বিএনপি না কি কালো পতাকা মিছিল ডেকেছে। অথচ বিএনপির নির্বাচন ভন্ডুলের চক্রান্তকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দেশের জনগণ নির্বাচনে অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পুর্ননির্বাচিত করে বিএনপিকে ইতোমধ্যেই কালো পতাকা দেখিয়ে দিয়েছে।
"নির্বাচনের আগে যে বিদেশিদের কাছে বিএনপি বারবার ধর্ণা দিয়েছিল, তারাও নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠিয়েছে, নির্বাচনের প্রশংসা করেছে, শেখ হাসিনার সরকারকে অভিনন্দন জানিয়ে একসাথে কাজের আগ্রহ ব্যক্ত করেছে অর্থাৎ বিদেশিরাও বিএনপিকে লাল পতাকা দেখিয়েছে।"
বিএনপির উদ্দেশ্য হুঁশিয়ারি দিয়ে হাছান মাহমুদ বলেন, "ইঁদুর যেমন গর্ত থেকে উঁকি দেয় তেমনি বিএনপিও এখন গর্ত থেকে উঁকি দিচ্ছে। তারা আবার দেশে অশান্তি তৈরির অপচেষ্টা চালাবে। এজন্য দলের নেতাকর্মীদের সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। মনে রাখতে হবে আওয়ামী লীগ রাজপথের দল, রাজপথে সবসময় থাকবে।"
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সভাপতি আবু আহমেদ মন্নাফীর সভাপতিত্বে সমাবেশে দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ ও মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য সানজিদা খানমও বক্তব্য রাখেন।