বাসার বাইরে হাতবোমা ছোড়ার ঘটনায় সরকারি দলের ‘হেলমেট বাহিনী’ জড়িত বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের স্ত্রী আফরোজা আব্বাস।
এছাড়া হাতবোমা নিক্ষেপকারীদের পালিয়ে যেতে পুলিশ ‘সহযোগিতা’ করেছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
ঢাকার শাহজাহানপুরে বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসের বাসার সামনে হাতবোমা ছোড়ার ঘটনা ঘটে মঙ্গলবার সকালে। মোটরসাইকেলে করে আসা দুই ব্যক্তি ককটেল ছুড়ে পালিয়ে যায় বলে বাসার নিরাপত্তাকর্মীরা জানিয়েছেন।
সকালের ঘটনার পর এই হামলার ঘটনায় সরকারি দলকে দায়ী করে দেশের মানুষের কাছে বিচার চেয়েছেন আফরোজা।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, “বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শুনলাম। আমি ঘরে ছিলাম। দারোয়ানকে ফোন করলাম। সে বলল, কালো পোশাক ও হেলমেট পরে দুজন হামলা করেছে। তারা একই মোটরসাইকেলে ছিল। বিস্ফোরণের পর সে (দারোয়ান) দেখল যে, ওরা পালিয়ে যাচ্ছে।
“ওই সময় বাসার বাইরে পুলিশের তিন থেকে চারটি মোটরসাইকেল ছিল। তাদেরকে বলল, আপনারা একটু ধরেন…ওরা পালিয়ে যাচ্ছে, একটু হেল্প করেন। পুলিশ সেটা করল না। তারা ওদেরকে পালিয়ে যেতে সহায়তা করল।”
শাহজাহানপুর থানার নাশকতা ও বিস্ফোরক আইনের এক মামলায় বিএনপি নেতা আব্বাস বর্তমানে কারাগারে আছেন। তার স্ত্রী আফরোজা আব্বাসসহ পরিবারের সদস্যরা ওই বাসাতেই থাকেন।
নিরাপত্তাহীনতায় ভোগার কথা জানিয়ে আফরোজা আব্বাস বলেন, “আমরা এখানে এরকম একটা পরিস্থিতির মধ্যে আছি। পুলিশ যখন বাসায় আসল, তাদেরকে বললাম নিরাপত্তার ব্যবস্থা করেন। বার বার এরকম অবস্থা হচ্ছে, বাসার ভেতরে বিভিন্ন সময়ে ইটপাটকেল মারছে, জোরে জোরে গেইটে ধাক্কা দিচ্ছে, আমাদের অন্য যে বাড়ি আছে সেখানে এরকম করছে… আজকে যেভাবে ওরা মারল, সেটাতে ওই সময় যদি থাকতাম অথবা আমার নাতি-নাতনি থাকত, তাদের গায়েও লাগতে পারত। আমার স্টাফরা তাদের গায়েও লাগতে পারত…যে কেউ মারা যেতে পারত।”
আগেও এ ধরনের ‘হামলার শিকার’ হয়েছেন জানিয়ে মহিলা দলের সভানেত্রী বলেন, “ওরা (পুলিশ) শুধু বলে, ছাত্রদল-যুবদল করছে… দেখেন, আব্বাস জেলে, বাসার মধ্যে আমি…বাসার মধ্যে এরকম এর আগেও করেছে ওরা, এখনো করছে…একটা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি আরকি।”
হাতবোমা ছোড়ার ঘটনাটি পুলিশের ‘প্রশ্রয়ে’ হয়েছে অভিযোগ করে মহিলা দলের এই নেত্রী বলেন, “আজকে পুলিশ যখন আসল, আমি বললাম দেখেন…আপনারা ছাড়া ওদের আছে কে? ওদের যদি সাহস থাকে মির্জা আব্বাসের বাসায় হামলা করবে, আসুক না, আমরা তো আছি। আমাদের কারো কাছে তো কোনো অস্ত্র নাই। আমরা মানসিকভাবে ওদেরকে মোকাবিলা করার জন্য প্রস্তুত।
“ওদের তো প্রশ্রয় দিচ্ছেন আপনারা (পুলিশ), আপনারা হেলপ করছেন। সামনে থাকেন আপনারা, পেছনে থাকেন আপনারা, ওরা এসে একটা অঘটন ঘটিয়ে চলে যায়। এরকম করে কত নিরহ প্রাণ চলে যাচ্ছে। অবশ্যই সরকার দলীয় সন্ত্রাসীরা করছে এবং প্রশাসনের সহায়তায়। এদের কি বিচার হবে? এদের বিচার হবে না তো।”
আফরোজা আব্বাস অভিযোগ করে বলেন, “সোমবার সারা রাত আমার বাসার আশপাশে ছাত্রলীগ-যুবলীগের লোকজন ঘোরাঘুরি করেছে। তারা সাংবাদিক পরিচয়ে ঘোরাফেরা করেছে। আমাদের বাসায় চারদিকে সিসি ক্যামেরা আছে, বাসায়ও আছে, রাস্তায়ও আছে। এটার জন্য হয়ত দেখবেন আমাদের ছেলেদের (ছাত্রদল-যুবদল) দোষারোপ করা হবে।”
তিনি বলেন, “আমি গণমাধ্যমের কাছে সহযোগিতা চাই। আমরা তথা এদেশের মানুষ যেন পরিবার নিয়ে নিরাপদে তাদের বাসা-বাড়িতে বসবাস করতে পারে।”