ইসির শুনানিতে প্রার্থিতা ফিরে পেলেন এ দুই প্রার্থী। রোববার শুনানির প্রথম দিনে শতাধিক আপিল আবেদন শুনছে নির্বাচন কমিশন।
Published : 10 Dec 2023, 05:00 PM
রিটার্নিং কর্মকর্তার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করে প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নাসিরুল ইসলাম খান এবং মুন্সিগঞ্জ-১ আসনে বিকল্প ধারা বাংলাদেশের মাহী বি চৌধুরী।
রোববার নির্বাচন ভবন অডিটরিয়ামে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে আপিল শুনানি শেষে তাদের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়।
শুনানি শেষে প্রার্থিতা ফিরে পেয়ে নাসিরুল খান সাংবাদিকদের বলেন, “চুন্নুর (জাতীয় পর্টির প্রার্থী মুজিবুল হক চুন্নু) সঙ্গে মাঠে খেলা হবে। চুন্নুর জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। ১৯৭০ সাল থেকেই কিশোরগঞ্জ-৩ আওয়ামী লীগের আসন।”
বাছাইয়ে কিশোরগঞ্জ-৩ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী নাসিরুল ইসলাম খানের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়েছিল মামলা সংক্রান্ত দলিল দিতে না পারায়।
একই আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. মুজিবুল হক চুন্নুকে আটকাতে তার বিরুদ্ধেও আপিল করেছেন নৌকার প্রার্থী নাসিরুল ইসলাম খান।
এদিকে মুন্সিগঞ্জ-১ আসনে বিকল্প ধারার প্রার্থী মাহী বি চৌধুরী প্রার্থিতা ফিরে পাওয়ার পর সাংবাদিকদের বলেন, “বিক্রমপুরের (মুন্সিগঞ্জ) মানুষ শান্তির প্রতীক কুলা মার্কায় একত্রিত হবে। আমরা বলছি রাজনৈতিক চিটা, ময়লা, ধুলা, উড়িয়ে দেবে কুলা। শান্তির রাজনীতির পক্ষে বিক্রমপুরের মানুষ আবারও বিজয় সুনিশ্চিত করবে ইনশাল্লাহ।”
জামিনদার হিসাবে ঋণ খেলাপির কারণে মুন্সীগঞ্জ-১ আসনে মাহী বি চৌধুরীর মনোনয়নপত্র বাছাইয়ে বাতিল করা হয়।
ভোটের পরিবেশ নিয়ে বিকল্পধারার প্রার্থী বলেন, “এখন পর্যন্ত পরিবেশ সুন্দর, প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। আশা করছি, নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষতার পরীক্ষায় সম্মানের সঙ্গে উত্তীর্ণ হবে।
“ইজ্জতের মালিক আল্লাহ। আমরা নির্বাচনে ছিলাম, নির্বাচন আছি। আমরা শান্তির পক্ষে বিজয় ছিনিয়ে আনব ইনশাআল্লাহ।”
নির্ধারিত সময়ের আগে শুনানি, প্রার্থীর আক্ষেপ, অভিযোগ
নির্ধারিত সময়ের আগেই নির্বাচন কমিশনে আপিল শুনানি শেষ করে ফেলার অভিযোগ করেছেন টাঙ্গাইল-৬ আসনের স্বতন্ত্র কাজী এটিএম আনিসুর রহমান বুলবুল।
তিনি বলছেন, যথাসময়ে তিনি শুনানিতে অংশ নিতে গেলে আগেই শুনানি হয়ে গেছে জানিয়ে তাকে ‘ডিসকোয়ালিফাইড’ ঘোষণা করে কমিশন। কারণ জানতে চাইলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার তাকে বলেন, ‘গেট আউট’।
আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনের অডিটরিয়ামে শুনানিতে অংশ নিতে না পেরে সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন বুলবুল। তিনি বলেন, শুনানি না নিয়ে তাকে পুলিশ দিয়ে বের করে দেওয়া হয়েছে।
বুলবুল বলেন, “আমি শুনানির আধা ঘন্টা আগে এসেছি। আমি ভেতরে যাওয়ার পর আমাকে বলা হল, আপনার হেয়ারিং হয়ে গেছে। আমার সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণ্ন করা হয়েছে। প্রথমে জেলাতে আমার সাথে প্রতারণা করা হয়েছে। এখানেও ঠিক একই অবস্থা করা হল। আমি তাকে বিনীত অনুরোধ করার পরও তারা বললো না, হবে না।”
বেলা ১২টায় এই শুনানির সময় নির্ধারিত ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, “কিন্তু প্রধান নির্বাচন কমিশনার বললেন, ‘নো, আপনি হাই কোর্টে যান’।
“আমার সময়ের আগে কেন তারা হেয়ারিং করল, প্রশ্ন করেছিলাম। সিইসি তখন বলেছেন, ‘আপনার শুনানি আগেই হয়ে গেছে। গেট আউট, আপনার আইনজীবী সময়ের জন্যও কিছু বলেননি’। এরপর পুলিশ দিয়ে আমাকে বের করে দিয়েছেন তারা। এটা ষড়যন্ত্র করে করা হয়েছে। আমি হাই কোর্টে যাব। আমি বলেছি আমার মৌলিক অধিকার ক্ষুণ্ন করা হয়েছে।”
তবে প্রার্থীকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ইসির আইন শাখার যুগ্মসচিব মাহবুবার রহমান সরকার।
তিনি বলেন, টাঙ্গাইলের ওই প্রার্থীর আইনজীবী এসেছিলেন আপিল শুনানি শেষ হওয়ার পর।
“আপিল শুনানির একটা সময় ছিল ১০টা থেকে ১২টা। এ সময়ে নির্ধারিত আপিলগুলোর শুনানি হয়। টাঙ্গাইল-৬ আসনের বিষয়ে আপিল শুনানির সিদ্ধান্তের বিষয়ে যতদূর দেখেছি, এ প্রার্থীর আইনজীবী সবচেয়ে বেশি কথা বলার সুযোগ পেয়েছেন। আইনজীবীও কিছু বলেননি তার ক্লায়েন্ট নিয়ে। এখন তো আপিলের সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী করণীয় উনারাই জানেন।”
পুরনো খবর