গত ৫ নভেম্বর লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে একটি কেন্দ্রে সিল মারার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। পরে ঘটনাটির তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়। নির্বাচন কমিশনও ফলাফলের গেজেট প্রকাশ আটকে দেয়।
Published : 12 Nov 2023, 10:49 PM
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে তিন উপ-নির্বাচনের মধ্যে পটুয়াখালী-১ আসনের ফলাফলের গেজেট প্রকাশ করা হলেও লক্ষ্মীপুর-৩ ও বাহ্মণবাড়িয়া-২ উপ-নির্বাচন নিয়ে সিদ্ধান্ত এখনও আসেনি।
গত ৫ নভেম্বর লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে একটি কেন্দ্রে সিল মারার ভিডিও প্রকাশ হলে ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত করা হয়েছে। সেই প্রতিবেদন নির্বাচন কমিশনে জমা পড়েছে। এখনও এ নিয়ে সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় গেজেট প্রকাশ হচ্ছে না।
গত বৃহস্পতিবার পটুয়াখালী-১ উপ-নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের আফজাল হোসেন।
তিন দিনের মধ্যে রোববার এই তার বিজয়ী হওয়ার কথা জানিয়ে গেজেট প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন।
অন্য দুটি আসনের বিষয়ে কী সিদ্ধান্ত- সেই প্রশ্নে কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ বলেন, “সংশ্লিষ্ট দুটি কেন্দ্রের বিষয়ে জেলা প্রশাসন, পুলিশ সুপার ও সংশ্লিষ্ট জেলা নির্বাচন অফিসারের তদন্ত প্রতিবেদন এসেছে। সোমবার কমিশন এ বিষয়ে আলোচনাও হতে পারে এবং ইসির সিদ্ধান্ত পেলে জানিয়ে দেওয়া হবে।”
যা হয়েছে লক্ষ্মীপুর-৩ আসনে
এ কে এম শাহজাহান কামালের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া আসনটিতে উপনির্বাচনে ভোট হয়।
পরদিন একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে, যেখানে একজনকে ৫৭ সেকেন্ড নৌকা মার্কায় ৪৩টি ভোট দিতে দেখা যায়।
এতে দেখা যায়, যিনি ভোট দিয়েছেন, তাকে সহযোগিতা করেছেন আরেক জন কর্মী। দুইজনের গলাতেই ছিল নৌকা প্রতীকের ব্যাজ।
যে তরুণ এই কাজ করেছেন, তার চেহারা স্পষ্ট। তাকে আজাদ হোসেন বলে শনাক্ত করেছেন স্থানীয়রা। তিনি লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ থানা ছাত্রলীগের সহসভাপতি ছিলেন। সম্প্রতি দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে তাকে বহিষ্কার করে জেলা ছাত্রলীগ। তবে তাকে সদর উপজেলা দিঘলী ইউনিয়নের দক্ষিণ খাগুড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নৌকার এজেন্ট করা হয়।
ভাইরাল হওয়া অন্য একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, বিজয়ী প্রার্থী গোলাম ফারুককে ফুল দিচ্ছেন আজাদ।
ভোট শেষে জানানো হয়, নৌকা প্রতীক নিয়ে গোলাম ফারুক পেয়েছেন ১ লাখ ২০ হাজার ৫৯৯ ভোট। নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী লাঙ্গলের রাকিব হোসেন পেয়েছেন ৩ হাজার ৮৪৬ ভোট। গোলাপ ফুল নিয়ে ভোট সামছুল করিম খোকন পেয়েছেন ২ হাজার ১২৬ ভোট।
তবে ‘জাল ভোটের ভিডিও’ ছড়িয়ে পড়ার পর রিটার্নিং কর্মকর্তার নির্দেশে এক সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। এরপর জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোহাম্মদ সফিকুর রহমানকে তদন্ত করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। তবে এতে কী বলা হয়েছে, তা প্রকাশ হয়নি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনেও একটি কেন্দ্রে অনিয়মের তথ্য প্রকাশ হয় গণমাধ্যমে।
এরপর নির্বাচন কমিশন ফলাফলের গেজেট প্রকাশ স্থগিত করে। গত মঙ্গলবার নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর জাহাংগীর আলম বলেন, “গণমাধ্যমে লক্ষ্মীপুরের একটি ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একটি কেন্দ্রে তথ্য উপাত্ত পাওয়া গেছে। সেটা ইসি বিশ্লেষণ করেছে। এটার সত্যতা যাচাইয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার ও জেলা নির্বাচন অফিসারকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে ইসি। সরেজমিন তদন্তের পর যে প্রতিবেদন দেবে, তার পরে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।”
অনিয়ম: আটকে গেল লক্ষ্মীপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া উপনির্বাচনের গেজেট
পটুয়াখালী-১ উপ-নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত আফজাল