ঢাকা দখল করলে আমরা কি বসে বসে ললিপপ খাব: কাদের

৬ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনের পর একসঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কমিটি ঘোষণা করে হবে বলে জানান তিনি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিবিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম
Published : 3 Dec 2022, 08:29 PM
Updated : 3 Dec 2022, 08:29 PM

আগামী ১০ ডিসেম্বর বিভাগীয় সমাবেশের নামে বিএনপি ঢাকা দখল করলে ক্ষমতাসীনরা বসে থাকবে না বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেছেন, “আপনারা ঢাকা দখল করবেন, আমরা কি বসে বসে ললিপপ খাব? হায়রে আল্লাহ! কত বড় সাহস।”

শনিবার বিকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের ‘বার্ষিক সম্মেলন-২০২২’ এ তিনি এসব কথা বলেন।

সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী কাদের বলেন, “জানি ১০ ডিসেম্বরের পর অবরোধ দেবেন, ধর্মঘট দেবেন। জানি আবারও আগুন সন্ত্রাস ও লাঠিখেলা করবেন। আমরা কী বসে থাকব?

“ডিসেম্বর বিজয়ের মাস। এই বিজয়ের মাসে পরাজিত শক্তির সঙ্গে বিজয়ী শক্তির খেলা হবে।”

সমাবেশকে ঘিরে বিএনপি আগেই থেকে তাঁবু গেড়ে নয়াপল্টনে অবস্থান নিচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, “আমরা তো গাড়ি-ঘোড়া বন্ধ করছি না। আমি পরিবহন নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা আমাকে আশ্বস্ত করেছেন কোনো ধর্মঘট হবে না। তাহলে ভয় কিসের?”

১০ ডিসেম্বর ঢাকার সমাবেশ থেকে সরকার পতনের ‘আসল’ কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে বলে আসছেন বিএনপি নেতারা। সমাবেশের জন্য দলটিকে ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্থান বরাদ্দ দেওয়া হলেও তারা নয়াপল্টনেই সমাবেশ করতে অনড় অবস্থানে আছেন।

সমাবেশ করতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান কেন পছন্দ নয়- বিএনপির কাছে এ প্রশ্ন রেখে কাদের বলেন, “স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে আপনাদের বিশ্বাস নেই, আপনারা আবারও প্রমাণ দিলেন। এজন্য সোহরাওয়ার্দী উদ্যান আপনাদের পছন্দ না।

“তারা বলে এখানে অঘটন ঘটবে, এটা (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) নাকি খাঁচা। অঘটন আর কেউ ঘটাবে না। আগুন নিয়ে, লাঠি নিয়ে আসবেন; সেজন্য পল্টন আপনাদের জন্য নিরাপদ।”

তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া আগামী সংসদ নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে আসছেন বিএনপি নেতারা।

তার জবাবে আওয়ামী লীগ সম্পাদক বলেন, “সংবিধান পরিবর্তন হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সংবিধানকে অনেক কচুকাটা করেছেন। আইন করে বঙ্গবন্ধু হত্যার ঘাতকদের বিচার বন্ধ করেছিলেন। সংবিধানে হাত দেওয়ার অধিকার কারও নেই। কাজেই তত্ত্বাবধায়ক নিয়ে দিবাস্বপ্ন, রঙিন খোয়াব দেখে লাভ নাই।

“যারা ভোট চুরি করে, তারা বলে জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনবে। বিএনপিকে কেউ বিশ্বাস করে? ঢাকা শহরে বড় লোকের বাসার সামনে লেখা থাকে, ‘কুকুর হতে সাবধান’। বাংলাদেশের নিরীহ মানুষ বলে, ‘বিএনপি থেকে সাবধান’।”

সংবাদমাধ্যম বিএনপির সমাবেশকে যেভাবে কাভারেজ দেয়, আওয়ামী লীগের ক্ষেত্রে সেভাবে কাভারেজ দেওয়া হয় বলেও অভিযোগ করেন ওবায়দুল কাদের।

তিনি বলেন, “আমরা এত বড় জনসভা করি, কিন্তু কিছু মিডিয়া ওভাবে নিউজ দেয় না। এখানে ফখরুল দাঁড়িয়ে বক্তব্য দিলে পুরো ছবিসহ কোনো কোনো মিডিয়ায় নিউজ যেত। যারা আমাদের পছন্দ করেন না, তাদেরকে আমি বলেছি, ‘আমরা বেশি চাই না, আমাদের ন্যায্য কাভারেজ দেন’।

“কেন এত বৈরিতা, আমি জানি না। একদিনও কারও বিরুদ্ধে কিছু বলি নাই। কারও নাম বলি নাই। আমার ক্ষতি করার জন্য আমার ভাইকে নিয়ে প্রতিদিন প্রথম পাতায় ডাবল কলামে নিউজ যেত। কী অপরাধ করেছি আমি? এখন তো কোম্পানীগঞ্জে সবাই ঐক্যবদ্ধ। এই নিউজ কিন্তু তারা দেয়নি, একটা লাইনও লেখেনি।”

আগামী ৬ ডিসেম্বর ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন নেতৃত্ব আসবে। এর আগে ২ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর উত্তর ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সমাবেশ হয়েছে।

ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সম্মেলনের পর একসঙ্গে ঢাকা মহানগর উত্তর, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কমিটি ঘোষণা করে হবে বলে জানান ওবায়দুল কাদের।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বার্ষিক সম্মেলনের মাধ্যমে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন। নতুন কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী ২৪৫ জন মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছে বলে জানান জয়।

সম্মেলনে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস বক্তব্য দেন। সঞ্চালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন।